ফাঁস হল শাহরুখ-সমীরের হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাট। ছবি: সংগৃহীত।
পুত্র আরিয়ান খানের মুক্তিপ্রার্থনা করে এনসিবি-র প্রাক্তন আধিকারিককে একের পর এক মেসেজ পাঠিয়ে গিয়েছেন শাহরুখ খান। সেগুলির উত্তর আসেনি। ‘বাদশা’র কাতর অনুরোধ ও অবমাননার অধ্যায় প্রকাশ্যে এল এত দিনে।
প্রায় দু’বছর পর ফের কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে আরিয়ান খান মাদক মামলা নিয়ে। তবে এ বার যাঁকে ঘিরে যাবতীয় সওয়াল-জবাব, তিনি এনসিবি-র প্রাক্তন আধিকারিক সমীর ওয়াংখেড়ে। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করেছে সিবিআই। আরিয়ানকে জেল থেকে ছাড়তে নাকি তাঁর বাবা শাহরুখ খানের কাছ থেকে ২৫ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন সমীর, সিবিআই তদন্তে ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে এমনই তথ্য। ফলস্বরূপ চাকরি খোয়া গিয়েছে সমীরের। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন গোয়েন্দারা। সেই আবহে ফাঁস হল শাহরুখ-সমীরের পুরনো হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট।
মুম্বইয়ের এক সংবাদ সংস্থার প্রকাশ্যে এনেছে শাহরুখের পাঠানো গুচ্ছ গুচ্ছ মেসেজের স্ক্রিনশট। আরিয়ানের মুক্তি চেয়ে বার বার একই অনুরোধ করে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেগুলি স্পষ্টতই খুলে দেখা হয়নি। শাহরুখ লিখেছিলেন, “সমীর সাহেব, আপনার সঙ্গে এক মিনিট একটু কথা বলতে পারি প্লিজ়? আমি শাহরুখ খান।” আরও লেখেন, “আমি জানি এটা অফিশিয়ালি অনুচিত, হয়তো আইনসম্মতও নয়। তবু আমি তো এক জন বাবা, যদি অনুগ্রহ করে আমার সঙ্গে এক বার কথা বলেন! প্লিজ়?”
এমন মেসেজ এক বার নয়, বার বার গিয়েছে সমীরের কাছে। মাঝরাতেও তাঁকে লিখে গিয়েছেন শাহরুখ। ‘বাদশা’র অক্ষরে ঝরে পড়ছে আকুতি। শাহরুখ লিখেছেন, “এত রাতে আপনাকে মেসেজ করার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু আমার অবস্থাটা বুঝুন, আমি তো বাবা! আপনার দয়াভিক্ষা করছি শুধু।”
শাহরুখ আরও এক দিন সমীরকে মেসেজে লিখেছেন, “আমি কথা দিচ্ছি আরিয়ান জেল থেকে বেরোনোর পর অন্য মানুষ হয়ে যাবে। এটা ওর কাছেও বড় শিক্ষা। ভবিষ্যতে এমন কাজ করবে ও যার জন্য আপনি, আমি গর্বিত হব। দয়া করে নবীন প্রজন্মের পাশে থাকুন, ওকে একটা সুযোগ দিন।”
বছর দুয়েক আগে মুম্বই উপকূলে ভাসমান একটি প্রমোদতরী থেকে আরিয়ানকে গ্রেফতার করেছিলেন সমীর। ২২ দিন জেলে থাকার পর আরিয়ানকে জামিনে ছাড়া হলেও দুর্দিন ঘনিয়ে আসে খান পরিবারে। ২০২২ সালের মে মাসে সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে এনসিবি আরিয়ানের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়। তবে সিবিআইয়ের অভিযোগ, এই ঘটনায় নাকি খান পরিবারের কাছ থেকে মোটা টাকা ঘুষ দাবি করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সমীর।
সিবিআই সূত্রের খবর, সমীর ব্যক্তিগত সম্পত্তি বৃদ্ধি করতে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছিলেন। তার পরেই আনুষ্ঠানিক ভাবে মামলা দায়ের করে সিবিআই। তবে, সমীর দিল্লি হাইকোর্টের কাছে সমন না পাঠানোর অনুরোধ করেছিলেন। যার পরে হাইকোর্ট তাঁর অন্তর্বর্তিকালীন সুরক্ষা মঞ্জুর করেছিল। তিনি চাইলে মুম্বই হাইকোর্টেও যেতে পারেন বলে জানিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। সিবিআই জানিয়েছে ২২শে মে পর্যন্ত সমীরের বিরুদ্ধে কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে না, যদি সিবিআই-এর থেকে থেকে তিনি লিখিত অনুমোদন নেন।