বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চন্স’ শেয়ার করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, তখন তাঁকে তো সবাই সমর্থন করেছিলেন! দাবি সুদীপ্তের। ছবি: পিটিআই।
সিনেমার সঙ্গে শুরু থেকেই রাজনীতিকে জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। কলকাতায় এসে এমন দাবিই করলেন ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র পরিচালক সুদীপ্ত সেন। শুক্রবার শহরে আসার কথা ছিল ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র পরিচালক-কুশীলবের। ভোরের উড়ানে মুম্বই থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছেওছিলেন পরিচালক। এসে জানতে পারলেন, বাংলার কোনও প্রেক্ষাগৃহেই চলছে না তাঁর সিনেমা। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, বাংলায় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ প্রদর্শনে আপাতত কোনও বাধা নেই। এর পরেও বাংলায় তাঁর সিনেমা দেখানো হচ্ছে না কেন, সমস্যা ঠিক কোথায়, তিনি কিছুই বুঝতে পারছেন না বলেই দাবি করেছেন সুদীপ্ত।
শুক্রবার শহরে একটি সাংবাদিক বৈঠকও করেন ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র পরিচালক। সেখানে তিনি বললেন, “২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গার পটভূমিতে বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চন্স’ শেয়ার করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তখন তাঁকে তো সবাই সমর্থন করেছিলেন! বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তো পাশে ছিলেন।” এর পরেই পরিচালকের প্রশ্ন, “আমি আর বিপুল (প্রযোজক) কী দোষ করলাম?’’ শুধু তা-ই নয়, দেশ জুড়ে বিতর্ক হলেও ‘পদ্মাবত’-এর মতো ছবির পাশেও যে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা, সে কথাও মনে করিয়ে সুদীপ্তের দাবি, ‘‘এর আগে কোনও বিতর্কিত ছবি নিয়েও তো বাংলায় এত সমস্যা হয়নি, যা হচ্ছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে!’’
রাজ্য সরকারের পক্ষে গত ৮ মে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিষিদ্ধ করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুক্তি ছিল, রাজ্যের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাঁর সরকার। কলকাতায় এসে শুক্রবার সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই সরব হলেন সুদীপ্ত। শহরবাসীর উদ্দেশে বললেন, “দেশের প্রায় ১২-১৪ হাজার হলে সিনেমাটা চলছে। কোনও হলের বাইরে ঝামেলা হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ কি দেশের বাইরে? তা হলে এখানে সমস্যাটা কী? আপনারা সরব হন!”
সুদীপ্তের দাবি, তিনি খুব আশা নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন। প্রেক্ষাগৃহ ঘুরে ঘুরে দেখবেন আর বাঙালিদের সঙ্গে আনন্দ করবেন বলেও ভেবেছিলেন । কিন্তু কোথাও তাঁর ছবি না দেখানোয় কী করবেন, বুঝতে পারছেন না তিনি। তাঁর কথায়, “আমি এবং অদা রাজনীতিবিদ নই। আমরা অন্য কিছু জানি না। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরেও কোনও হলে দেখানো হচ্ছে না ছবিটি। এটা দেখে হতাশ হলাম।”
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ শুরু হওয়ার আগে বিবৃতিতে ঘোষণা করতে হবে যে, ‘এই ছবির সমস্ত ঘটনা কাল্পনিক’। তবেই রাজ্যের সব প্রেক্ষাগৃহে এটি দেখানো যাবে। সুদীপ্ত কি বদল আনবেন সম্পাদনায়? তা নিয়ে বলতে গিয়েও সরব এই বাঙালি পরিচালক। তাঁর দাবি, “কাল্পনিক বললেই হল! এই ছবি যে সত্যি ঘটনা অবলম্বনেই তৈরি! আদালত যেমনই নির্দেশ দিক, আমি সত্যিটা জানি।”