Dream Girl 2 Review

হাসতে হলে দেখতে হবে ‘স্বপ্নসুন্দরী’র দ্বিতীয় যাত্রা! ভুলেও খুঁজবেন না ছক ভাঙাভাঙির গল্প

‘ড্রিমগার্ল ২’কে সেই অর্থে ঠিক সিক্যুয়েল বলা যায় না। যদিও প্রথম ছবির সঙ্গে সামান্য মিল রয়েছে ছবির প্রেক্ষাপটে। কয়েক জন ছাড়া দ্বিতীয় পর্বের ছবিতেও প্রথম পর্বের অভিনেতাদেরই দেখা গিয়েছে।

Advertisement

রুদ্রদেব ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৩ ০৯:০০
Share:

‘ড্রিমগার্ল ২’ একটি নিছক হাসির ছবি। ছবি: সংগৃহীত।

দর্শকের মধ্যে সে ভাবে সাড়া ফেলতে পারেনি আয়ুষ্মান খুরানার শেষ চারটি ছবি। বলা যেতে পারে, ছবিগুলি এক প্রকার মুখ থুবড়েই পড়েছিল বক্স অফিসে। তাই সাফল্য পেতে এ বার সেই ‘স্বপ্নসুন্দরী’র উপর ভরসা করতে হল অভিনেতাকে। শুক্রবার দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে আয়ুষ্মানের ‘ড্রিমগার্ল ২’। ২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ড্রিমগার্ল’ ছবির দ্বিতীয় পর্ব। কিন্তু দর্শকদের মনে ‘স্বপ্নসুন্দরী’র মোহজাল বুনে সাফল্যের বৈতরণী কি পার করতে পারল সেই ছবি?

Advertisement

‘ড্রিমগার্ল ২’কে সেই অর্থে ঠিক সিক্যুয়েল বলা যায় না। যদিও প্রথম ছবির সঙ্গে সামান্য মিল রয়েছে ছবির প্রেক্ষাপটে। কয়েক জন ছাড়া দ্বিতীয় পর্বের ছবিতেও প্রথম পর্বের অভিনেতাদেরই দেখা গিয়েছে। ছবির প্রেক্ষাপট উত্তরপ্রদেশের মথুরার এক বেকার এবং গলা অবধি ঋণে ডুবে থাকা যুবককে নিয়ে। প্রেমিকার বাবার শর্তপূরণ করতে গিয়ে মহাফ্যাঁসাদে পড়তে হয় সেই যুবককে। টাকা রোজগারের জন্য মহিলার বেশভূষা ধারণ করতে হয় তাঁকে। বাকি গল্প সেই মহিলা চরিত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে তৈরি হওয়া একের পর এক জটিলতা আর লুকোচুরিকে কেন্দ্র করে। খুব নতুনত্ব কিছু নেই। (তবে কমল হাসনের ‘চাচী ৪২০’-এর সঙ্গে মিল খুঁজলে হবে না)।

২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ড্রিমগার্ল’ ছবির দ্বিতীয় পর্ব ‘ড্রিমগার্ল ২’। ছবি: সংগৃহীত।

‘ড্রিমগার্ল’-এর মতোই ‘ড্রিমগার্ল ২’ ছবি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন রাজ সাণ্ডিল্য। প্রথম বারের মতো না হলেও সেই ভূমিকা তিনি মোটামুটি উতরেছেন। তবে ছবির সম্পাদনা অত্যন্ত সাধারণ মানের। খুব ভাল করে দেখলে বেশ কয়েকটি ভুল চোখে পড়বে। ‘দিল কা টেলিফোন’ ছাড়া মনে রাখার মতো তেমন কোনও গানও নেই ছবিতে। গান এবং সম্পাদনার দিক থেকে ‘ড্রিমগার্ল ২’কে বলে বলে গোল দেবে ‘ড্রিমগার্ল’।

Advertisement

‘ড্রিমগার্ল ২’ ছবির দৃশ্যে আয়ুষ্মান খুরানা। ছবি: সংগৃহীত।

ছকভাঙা চরিত্রে অভিনয় করেন বলে বলিপাড়ায় সুপরিচিত আয়ুষ্মান। এই ছবিতেও সে রকম কিছু দেখবেন বলে কেউ যদি প্রেক্ষাগৃহে যান, তা হলে তাঁকে ফিরতে হবে নিরাশ হয়ে। কারণ, শাড়ি পরে নারী চরিত্রে অভিনয় করার মধ্যে কোনও ছকভাঙার গল্প নেই। আয়ুষ্মানের ‘বালা’, ‘চণ্ডীগড় করে আশিকি’, ‘বধাই হো’ বা ‘শুভ মঙ্গল জ়াদা সাবধান’-এর মতো সমাজের প্রতি বিশেষ বার্তা দেওয়ার চেষ্টাও নেই এই ছবিতে। বরং, অবসাদ (ডিপ্রেশন) এবং সমকামিতার মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে বার্তা দিতে গিয়েও চালে ভুল করেছেন নির্মাতারা। ছবির শেষ ১৫ মিনিট খুবই বিরক্তিকর।

অনন্যা পাণ্ডে এবং আয়ুষ্মান খুরানা। ছবি: সংগৃহীত।

তা হলে কী আছে এই ছবিতে? কেন দর্শক দেখতে যাবে ‘ড্রিমগার্ল ২’? আয়ুষ্মানের এই ছবির হিরো, অভিনয় এবং সংলাপ। এই দুইকে হাতিয়ার করেই বক্স অফিসের বৈতরণী পার করার চেষ্টা করেছেন ছবির নির্মাতারা। আয়ুষ্মান যে ভাল অভিনেতা তা নিয়ে সন্দেহ নেই। বিশেষ করে এই ধরনের বোকা বোকা চরিত্রে অভিনয় করার ক্ষেত্রে তিনি অনবদ্য। আয়ুষ্মানকেও ছাপিয়ে অভিনয় করেছেন অনু কপূর, পরেশ রাওয়াল, বিজয় রাজ এবং সীমা পওয়া। মনজ্যোৎ সিংহ এবং রাজপাল যাদবও ভাল অভিনয় করেছেন। দু’ঘণ্টা ধরে পর্দায় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন আয়ুষ্মান এবং তাঁর সহ-অভিনেতারা। যদিও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনয় ক্ষমতাকে আরও ব্যবহার করা যেত। উল্লেখযোগ্য যে, নিজের ক্ষমতার বাইরে গিয়ে তুলনামূলক ভাবে ভাল অভিনয় করেছেন চাঙ্কি-কন্যা অনন্যা পাণ্ডেও। গোটা ছবির মধ্যে মেরেকেটে ২০-২৫ মিনিট পর্দায় মুখ দেখানোর সুযোগ পেয়েছেন তিনি। তার মধ্যেও যতটা ভাল অভিনয় করার চেষ্টা করা যায়, ততটাই তিনি করেছেন।

‘ড্রিমগার্ল ২’ একটি নিছক হাসির ছবি। ‘ড্রিমগার্ল’-এর মতোই। যার পরতে পরতে মজা, হাস্যকর অঙ্গভঙ্গি, পেটে খিল ধরিয়ে দেওয়া সংলাপ। কোনও সমাজ সচেতনতার বার্তা, আঁতলামো, ছক ভাঙাভাঙির গল্প সেখানে পাওয়া যাবে না। হাসতে ইচ্ছা হলে ঢুকে যেতে হবে ছবি দেখতে। তবে মগজ বাইরে রেখে আসতে হবে। বেশি ভাবনাচিন্তা করতে গেলে হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement