করোনা আমায় পাগল করে দিচ্ছে, এ সব কী করছি আমি: মিমি

পুজো রিলিজের কথা ভেবেই কাজ করছেন মিমি, নুসরত, যশ। তা হলে কি পুজোয় মানুষ সিনেমা হলে গিয়েই বাংলা ছবি দেখবে?

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ১৫:৪৮
Share:

মাস্কে ঢাকা মুখ: এ ভাবেই চলছে মেকআপের কাজ।

পারফিউম লাগাতে গিয়ে শাড়িতে ডিসইনফেক্ট্যান্ট স্প্রে লাগিয়ে ফেলছেন! শুটে প্রিয় বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলতে বলতে সারাক্ষণ স্প্রে করে চলেছেন। কফি মেকার থেকে ইলেকট্রিক কেটলি— বাড়ি থেকে নিয়ে আসছেন।অংশুমান প্রত্যুষের পরিচালানায়‘এসওএস কলকাতা’-র শুটিং নিয়ে মিমি চক্রবর্তী কথা বললেন আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে।

Advertisement

ঘন কাজের ঘিয়ে রঙা শাড়ি, এক রঙা থ্রি কোয়ার্টার ব্লাউজ, খোলা চুল আর ছোট্ট টিপে মিমি শট দিচ্ছেন বন্ধু যশ দাশগুপ্তের স্ত্রী হিসেবে।করোনা কালে শুটের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে যারপরনাই উত্তেজিত মিমি। বললেন,“করোনা থাকবে। আর আমাদের কাজও করতে হবে। তবে নুসরত আর যশের চেয়ে আমি বেশি প্যানিক করছি।খাওয়া থেকে জলের বোতল, সব বাড়ি থেকে নিয়ে যাচ্ছি। আমার স্টাফদের খাবারও ভাবছি বাড়ি থেকে নিয়ে যাব।এত কিছু করছি তাই যশ বলছে,‘করোনা করোনা করে এ বার আমার মাথাতে করোনা উঠে আসবে!” হেসে বললেন মিমি।হাতে সারাক্ষণ করোনা স্প্রে। মেকআপ ভ্যানে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছেন না। তবে প্রিয় বন্ধু নুসরতের সঙ্গে অনেকদিন পরে দেখা হওয়ায় মেকআপ ভ্যানে বসেই চুটিয়ে আড্ডা দিয়েছেন দু’জনে।অংশুমান প্রত্যুষের পরিচালানায় নতুন ছবিতে নায়ক হিসেবে রয়েছেন যশ দাশগুপ্ত। আর নায়িকা মিমি ও নুসরত। অ্যান্টি টেররিজম স্কোয়াড নিয়ে ছবির গল্প। শুট শুরু হয়েছে ১০ জুলাই থেকে। মিমি বললেন, “এক ঘণ্টা অন্তর ফ্লোর স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। সবাই মাস্ক পরে। সব্বাই সতর্ক। এরপরেও কিছু হলে আমার কিছু বলার নেই!”

লকডাউনেই গল্প লিখেছেন অংশুমান। ফলে আউটডোর সে ভাবে নেই। মিমি জানালেন, গল্পের প্রয়োজনে বড়জোর ইকোপার্কে শুট করতে হতে পারে। কাজের জায়গায় প্রায় ৬ মাস বাড়িতে বসে আছেন নায়িকা। “আমার উপর অনেক দায়িত্ব। জলপাইগুড়ির পরিবারের দায়িত্ব, আমার স্টাফদের পরিবারের দেখাশোনা করা, সব তো আমার উপর।এ ভাবে কতদিন চালাতে পারব? বসে থাকলে তো কুবেরের ধনও শেষ হয়ে যায়! আমি তো কোন ছাড়!” বাস্তব ছবি সরাসরি তুলে ধরলেন মিমি।

Advertisement

'নুসরত আর যশের চেয়ে আমি বেশি প্যানিক করছি।খাওয়া থেকে জলের বোতল, সব বাড়ি থেকে নিয়ে যাচ্ছি'

পুজো রিলিজের কথা ভেবেই কাজ করছেন মিমি, নুসরত, যশ। তা হলে কি পুজোয় মানুষ সিনেমা হলে গিয়েই বাংলা ছবি দেখবে?

“আমার ‘ড্রাকুলা স্যার’ তৈরি হয়ে আছে। এই ছবিও রেডি হয়ে যাবে। তবে রিলিজগুলো ওটিটি না সিনেমা হলে হবে সেটা বলা যাচ্ছে না” সাফ কথা মিমির।‘এসওএস কলকাতা’ ছবিতে এই তিনজন অভিনেতা ছাড়াও রয়েছেন শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় ও এনা সাহা।এই ছবি দিয়েই প্রযোজনার কাজ শুরু করলেন এনা। ত্রিকোণ প্রেমের গল্প নাকি থ্রিলার, ছবির গল্প কোন দিকে এগোবে তা নিয়ে মুখ না খুললেও কমার্শিয়াল ছবিতে অভিনেতারা যে সামজিক দূরত্ব মেনে অভিনয় করতে পারেন না, তা মেনে নিলেন মিমি। সামাজিক দূরত্ব প্রসঙ্গে মিমি বললেন, “আমরা অভিনেতারা একে অন্যের উপর নির্ভরশীল। আমি জানি যশ বাড়িতেই ছিল। নুসরত বাড়িতেই ছিল। আমরা তিনজনেই প্রধান চরিত্র। আমরা নিজেদের উপর ভরসা রেখেই কাজ করছি। তবে বাইরে থেকে দু’দিনের জন্য কেউ এলে সামাজিক দূরত্বের প্রসঙ্গ তো থাকবেই।”কথা বলতে বলতে, শুট করতে করতে তিনি সারাক্ষণ স্প্রে করে চলেছেন। “করোনা আমায় সেই লন্ডনের শুট থেকে তাড়া করেছে। আমি প্যারানয়েড হয়ে গিয়েছি। সারাক্ষণ টেনশন করছি। আমার মতো পাগলামি কেউ করছে না”, হেসে বললেন মিমি। ‘ক্রিসক্রস’-এর পরে আবার মিমি-নুসরত একসঙ্গে।

কিন্তু এই সংক্রমণ কি সত্যি ছড়াচ্ছে বহুতল আর সেলিব্রিটিদের মধ্যে?

প্রশ্নটা শুনেই দ্রুত উত্তর দিলেন মিমি, “এই রোগ যদি অমিতাভ বচ্চনের হতে পারে, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির সিইও-র হতে পারে,তা হলে আমার বাড়িতে যে কোনও সময় হতে পারে। করোনার সঙ্গে লড়ার জন্য সব রকম প্রস্তুতি নিচ্ছি আমি।আমার বাড়ি, লিফ্ট রোজ স্যানিটাইজড হয়। টেম্পারেচার মাপা হয়। আমার বাড়ির বাইরে পুলিশকর্মীরা থাকেন। তাঁদের আমি থানায় যেতে দিই না। তাঁরা বাড়ি থেকে আমার বাড়িতে সোজা রিপোর্ট করেন। এখন বলছে, ফ্রিজ থেকে হচ্ছে। তা হলে খাব না? ঘুম চোখে খেতে গেলে মাস্ক পড়তে হবে? সবাই যে যার মতো করে কেয়ার নিচ্ছেন।”

কথা বলতে বলতে, শুট করতে করতে তিনি সারা ক্ষণ স্প্রে করে চলেছেন মিমি

কথায় কথায় উঠে এল আর এক ঘটনা। মিমি যা বললেন তাতে বিষয়টা এরকম—

আম খেতে ইচ্ছে হয়েছিল মিমির। অনলাইনে আম এল। আম আসার পর তা সোজাসুজি মিমির বাড়িতে পৌঁছতে পারল না... আম বাড়ির নীচেই স্যানিটাইজড করা হল...স্যানিটাইজড করার পর আম অভিনেত্রীর বাড়িতে প্রবেশ করলে তাকে ভিনিগার আর নুন জলে চুবিয়ে রাখা হল...এরপর আবার স্যানিটাইজেশনের পালা!

আমের আর কিছু রইল কি? জানেন না মিমি। তাঁর অস্ফুট উক্তি, “আমি ভুলেই গেলাম যে সাধ করে আমি আম খেতে চেয়েছিলাম। করোনা আমায় পাগল করে দিচ্ছে!”

গায়ে করোনা প্রতিরোধী স্প্রে ঘষতে ঘষতে শট দিতে গেলেন নায়িকা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement