(বাঁ দিক থেকে) অঞ্জন দত্ত, মমতা শঙ্কর, চঞ্চল চৌধুরী। ছবি-সংগৃহীত।
প্রকাশ্যে সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত মৃণাল সেনের বায়োপিক ‘পদাতিক’-এর টিজ়ার। নন্দনে টিজার উদ্বোধনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী মমতা শঙ্কর। মৃণাল সেনের ছবি ‘মৃগয়া’র মাধ্যমেই অভিনয় জগতে পা রেখেছিলেন তিনি। প্রয়াত পরিচালককে নিয়ে প্রচুর স্মৃতি রয়েছে তাঁর কাছে।
মঙ্গলবার ছিল মৃণাল সেনের জন্মশতবার্ষিকী। পরিচালকের সঙ্গে প্রায় পারিবারিক সম্পর্ক ছিল মমতা শঙ্করের। তাই আনন্দবাজার অনলাইনকে বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বললেন, ‘‘আমি কেন মৃণালদার বাড়িতে আজ যাইনি, এটাই মনে হচ্ছে। মৃণালদা যে নেই, এটাই বিশ্বাস করতে পারি না। আমি সব সময়ে দই নিয়ে যেতাম মৃণালদার জন্মদিনে। দরজা দিয়ে ঢুকলেই গম্ভীর গলায় বলতেন, ‘দই এনেছ?’ এখনও মনে হয়, ওই গলার স্বর শুনতে পাব। অসম্ভব মজার, জ্ঞানী ও সৎ মানুষ ছিলেন তিনি।’’
মৃণাল সেনের ছবি ‘মৃগয়া’-তে প্রথম কাজ অভিনেত্রীর। তিনি বলছেন, ‘‘আমার দাদা মৃণালদার তিনটি ছবিতে সঙ্গীতায়োজন করেছিলেন। ‘কলকাতা ৭১’, ‘কোরাস’ ও ‘পদাতিক’। সেই সুবাদে তিনি আমাদের পরিবারের মানুষ হয়ে গিয়েছিলেন। আমরাও মৃণালদার পরিবারের অংশ হয়ে গিয়েছিলাম। কাজ না থাকলেও আড্ডা দিতে চলে যেতাম। লোকজনে ভরা থাকত মৃণালদার বাড়ি। বৌদি কাপের পর কাপ চা করতেন। এক দিন বৌদি ৮০ কাপ চা করেছিলেন।’’
আরও একটি স্মরণীয় ঘটনা ভাগ করে নিয়েছেন মমতা শঙ্কর। তাঁর কথায়, ‘‘মৃণালদার সঙ্গে এক বার ‘খারিজ’ ছবিটি নিয়ে টোকিয়ো চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমার মামস হয়েছিল। তখন রোজ আমার ঘরে মৃণালদা সকাল, দুপুর, রাত— তিন বেলার খাবার পৌঁছে দিতেন। ছোঁয়াচে রোগ বলে মজা করে বলতেন, ‘সীতার গণ্ডির বাইরে থেকে খাবারের প্যাকেটটা দিয়ে দিলাম।’ রোজ সকালে ফোন করে জিজ্ঞাসা করতেন, ‘তুমি বেঁচে আছ?’’’
সম্প্রতি অঞ্জন দত্তের পরিচালনায় মৃণাল সেন সম্পর্কিত ছবি ‘চালচিত্র এখন’ মুক্তি পেয়েছে। আর এ বার মুক্তি পেতে চলেছে সৃজিতের পরিচালনায় তাঁর জীবনীচিত্র ‘পদাতিক’। মৃণাল সেনের চরিত্রে অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী। একই ব্যক্তিত্বকে নিয়ে এক সময়ে একাধিক ছবি, এই প্রসঙ্গে মমতা শঙ্কর বলছেন, ‘‘আমার মনে হয়, এমন ছবি যত হয়, তত ভাল। অঞ্জনদা ও সৃজিত, দু’জনেরটাই দেখলাম। দুটোই ভীষণ ভাল। অঞ্জনদাকেও মৃণালদা মনে হচ্ছে। চঞ্চলকেও মৃণালদা মনে হচ্ছে। সেই জন্যই মনে হচ্ছে, মৃণালদা আমাদের মধ্যেই আছে। যত ভাবে মৃণালদার জীবনকে উদ্যাপন করা যায়, তত ভাল।’’