বাবা ছিলেন বিখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব। তাঁর নিজের অভিনয়ে হাতেখড়ি হয়েছিল নাটকের মঞ্চে। পরে টেলিভিশন এবং সিনেমা, দু’টি মাধ্যমেই প্রতিভার জোরে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন কৃতিকা দেশাই খান।
কৃতিকার জন্ম ১৯৬৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, মুম্বই শহরে। তাঁর বাবা গিরেশ দেশাই ছিলেন থিয়েটার শিল্পী। কৃতিকা নিজেও অভিনয় করেছেন বেশ কিছু গুজরাতি নাটকে।
ছোট পর্দায় তাঁর প্রথম কাজ ‘বুনিয়াদ’ ধারাবাহিকে। আটের দশকের আইকনিক এই ধারাবাহিকে তিনি অভিনয় করেছিলেন ‘মঙ্গলা’ চরিত্রে।
দূরদর্শনের স্বর্ণযুগে বেশ কিছু ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় এখনও দর্শকমনে স্মরণীয় হয়ে আছে। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘চন্দ্রকান্তা’, ‘এয়ার হোস্টেস’, ‘হঙ্গামা’, ‘এ মাউথফুল অব স্কাই’ এবং ‘নুরজাহান’।
‘চন্দ্রকান্তা’ ধারাবাহিকে তিনি ছিলেন ‘বিষকন্যা’র চরিত্রে। ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তার অন্যতম কারিগর ছিল তাঁর অভিনয়।
‘সুপারহিট মুকাবিলা’ এবং ‘মানসী’-র মতো জনপ্রিয় শোয়ের সঞ্চালনা করেছেন তিনি।
দূরদর্শন ছাড়া অন্যান্য বেসরকারি উপগ্রহ চ্যানেলেও বিভিন্ন ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় ছিল জনপ্রিয়তার প্রথম সারিতে।
‘দেখ ভাই দেখ’, ‘কুমকম এক প্যায়রা সা বন্ধন’, ‘তুমহারি দিশা’, ‘দো সহেলিয়াঁ’, ‘ওহ রহনে ওয়ালি মহলোঁ কি’, ‘রাম মিলাই জোড়ি’, ‘মেরে অঙ্গন মেঁ’, ‘পরমাবতার শ্রী কৃষ্ণ’, ‘শক্তি—অস্তিত্ব কে এহসাস কি’, ‘জিজি মা’ তাঁর কজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
২০১৫ সালে তিনি অভিনয় করেছিলেন ‘উত্তরণ’ ধারাবাহিকে। এই ধারাবাহিকে কাজের জন্য কৃতিকা নিজের মাথার চুল সব কাটিয়ে ফে্লেছিলেন।
ভারতীয় বিনোদন দুনিয়ায় তিনিই কার্যত প্রথম টেলি অভিনেত্রী যিনি ছোট পর্দায় অভিনয়ের জন্য সম্পূর্ণ মস্তক মুণ্ডন করেছিলেন।
ছোট পর্দার পাশাপাশি তিনি অভিনয় করেছেন সিনেমাতেও। ‘ইনসাফ’, ‘দস্তক’, ‘দত্তক দ্য অ্যাডপ্টেড’, ‘সেকশন ৩৭৫’ তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য।
অভিনেতা আমজাদ খানের ভাই অভিনেতা ইমতিয়াজ খানকে বিয়ে করেছিলেন কৃতিকা। তাঁদের মেয়ের নাম আয়েশা।
এ বছরের মার্চ মাসে প্রয়াত হয়েছেন ইমতিয়াজ। ব্যক্তিগত জীবনে একা হয়ে যাওয়ার পরে কৃতিকার সময় আবর্তিত হয় অভিনয়কে ঘিরেই।
পথশিশুদের নিয়ে ‘আকাঙ্খা’ নামে অভিনয়ের একটি ওয়ার্কশপ চালান তিনি।
অভিনয়ের পাশাপাশি কৃতিকা ভালবাসেন বেড়াতে যেতে। বলেন, তাঁর মন জিপসিদের মতোই ভবঘুরে।
এ ছাড়া তাঁর আরও একটি প্রিয় শখ হল বই পড়া।