Devyani Chaubal

Devyani Chaubal: মারতে গিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র, রাজেশ খন্নার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন ইনি

কলমের জোরে আর নির্ভুল সংবাদ পরিবেশনে বলিউডের আতঙ্কে পরিণত হয়েছিলেন এক সময়। হয়ে উঠেছিলেন ‘বলিউডের সন্ত্রাসবাদী’!

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২১ ১০:৪৬
Share:
০১ ১৮

তাঁর কলমে নাকি ‘বিষ’ ছিল। তাঁর একটি প্রতিবেদন ঘুম উড়িয়ে দিতে পারত তাবড় তারকাদের। কলমের জোরে আর নির্ভুল সংবাদ পরিবেশনে বলিউডের আতঙ্কে পরিণত হয়েছিলেন এক সময়। হয়ে উঠেছিলেন ‘বলিউডের সন্ত্রাসবাদী’!

০২ ১৮

সেই তাঁরই আবার শেষ জীবন ছিল খুবই করুণ। পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন। মু্ম্বইয়ের আন্ধেরীর একটি ফ্ল্যাটে হুইলচেয়ারই ছিল তাঁর একমাত্র সঙ্গী। শেষ জীবনে অর্থকষ্টেও ভুগেছেন তিনি।

Advertisement
০৩ ১৮

তিনি দেবযানী চৌবল। বলিউডের প্রথম সাংবাদিক যিনি তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে শুরু করেন। তাঁর কলমেই রাজেশ খন্না হয়ে উঠেছিলেন ‘সুপারস্টার’। আবার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেফাঁস কলম ধরায় তাঁকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন ধর্মেন্দ্র।

০৪ ১৮

তা সত্ত্বেও তাঁর কলম থামেনি কখনও। এমনই ছিলেন দেবযানী। অকুতোভয় এবং স্বাধীনচেতা। দেবযানীর জন্ম ১৯৪২ সালে মুম্বইয়ে এক বিত্তশালী পরিবারে। তাঁর বাবা ছিলেন সে সময় মুম্বইয়ের নাম করা আইনজীবী।

০৫ ১৮

দেবযানী চেয়েছিলেন অভিনেত্রী হতে। কিন্তু হয়ে উঠেছিলেন বলিউড সাংবাদিক। ছয়ের দশকে মূলত কাজ শুরু করেন দেবযানী। সে সময়ের বিখ্যাত এক ম্যাগাজিনে লিখতে শুরু করেন।

০৬ ১৮

বলিউডে দেবযানীর যোগাযোগ এবং পরিচিতি ছিল গভীর। তারকাদের একেবারে হাঁড়ির খবর টেনে বার করে নিয়ে আসা ছিল তাঁর কাছে জলভাত। দেবযানীই প্রথম বলিউড সাংবাদিক যিনি তারকাদের সমালোচনা করে লিখতে শুরু করেন।

০৭ ১৮

সে কারণেই দেবযানীকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতেন তারকারা। সমালোচনা থেকে ছাড় পেতেন না দেবযানীর তারকা বন্ধুরাও।

০৮ ১৮

দেবযানী ছিলেন দিলীপ কুমারের ভক্ত। তাঁর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করার অনেক চেষ্টা করেছিলেন দেবযানী। কিন্তু নাকি দিলীপ তাঁকে পাত্তা দেননি। শোনা যায় সেই রাগে দিলীপ কুমারের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে কলম ধরেছিলেন দেবযানী। এর পরেই দিলীপ তাঁকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এমনকি ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুবান্ধবদেরও দেবযানীকে বয়কট করতে বলেছিলেন। কিন্তু সে সবে দমানো যায়নি তাঁকে।

০৯ ১৮

তবে রাজেশ খন্নার সঙ্গে আলাদাই সমীকরণ গড়ে উঠেছিল তাঁর। রাজেশের ঘনিষ্ঠ বৃত্তেও চলে এসেছিলেন তিনি। রাজেশের সমস্ত খবর তাঁর কাছে থাকতে শুরু করে। তিনিই প্রথম রাজেশের জন্য ‘সুপারস্টার’ শব্দটি ব্যবহার করতে শুরু করেন।

১০ ১৮

ডিম্পল কপাডিয়াকে বিয়ের খবর রাজেশ প্রথম দেবযানীকেই দিয়েছিলেন। বিয়ে করতে যাওয়ার সময় রাজেশকে সাজিয়ে দিয়েছিলেন এই দেবযানীই। পরে অবশ্য দেবযানীর একটি মন্তব্য ঘিরে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছিল। রাজেশের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের কথাও অকপটে স্বীকার করেছিলেন তিনি।

১১ ১৮

বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও হেমা মালিনীর সঙ্গে ধর্মেন্দ্রর ঘনিষ্ঠতা ম্যাগাজিনের পাতায় ছেপে দিয়েছিলেন দেবযানী। এমনকি লুকিয়ে হেমা মালিনীকে ধর্মেন্দ্রর বিয়ের খবরও প্রথম তিনিই সামনে আনেন।

১২ ১৮

এই সব নিয়ে দেবযানীর প্রতি খুবই বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন ধর্মেন্দ্র। এক বার এক অনুষ্ঠানে দেবযানীকে দেখে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি ধর্মেন্দ্র। প্রকাশ্যে দেবযানীকে মারতে দৌড়ে যান। সে দিন কোনওক্রমে শৌচাগারে ঢুকে প্রাণে বাঁচেন তিনি।

১৩ ১৮

রাজ কপূরের সম্পর্কেও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছিলেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে দেবযানী জানিয়েছিলেন, এক পার্টিতে মত্ত অবস্থায় রাজ কপূর তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছিলেন। দেবযানীর দাবি, রাজ তাঁকে নাকি পোশাক খুলতে বলেছিলেন!

১৪ ১৮

১৯৮৫ সালে আচমকাই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে যান তিনি। পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। স্বাভাবিক কোনও কাজকর্মই করতে পারতেন না। প্রথমে সারা দিন হুইল চেয়ারে এবং পরবর্তীকালে পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে যান।

১৫ ১৮

তখন অনেকেই ভেবেছিলেন দেবযানীর কলম বোধ হয় এ বার থেমে যাবে। অনেকেই হয়তো খানিক স্বস্তি বোধও করেছিলেন।

১৬ ১৮

কিন্তু অত সহজে হাল ছাড়ার পাত্রী ছিলেন না দেবযানী। ওই অবস্থাতেও তাঁর কলম চলতে থাকে। তারকাদের হাঁড়ির খবর বার করে আনতে থাকেন তিনি। দেবযানী তখন লিখতে পারতেন না। তাই লেখার জন্য আলাদা করে লোক রেখেছিলেন। তিনি মুখে বলতেন আর নিযুক্ত ওই কর্মী লিখতেন।

১৭ ১৮

এই সময় খুব একা হয়ে পড়েছিলেন তিনি। অর্থাভাবেও ভুগছিলেন। তখন সুনীল দত্ত সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন। এমনকি পুরনো বিবাদ ভুলে ধর্মেন্দ্রও সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। অথচ সেই অবস্থাতেও দেবযানী এই দু’জনের সমালোচনা করতে ছাড়েননি।

১৮ ১৮

১৯৯৫ সালে মাত্র ৫৩ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে পর্যন্তও তাঁর কলম থামেনি। শেষকৃত্যে তাঁর পাশে ছিলেন ইন্ডাস্ট্রির মাত্র ১০ জন লোক। বিদ্যা বালন অভিনীত ‘ডার্টি পিকচার’-এ সাংবাদিকের ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল অঞ্জু মহেন্দ্রকে। এই চরিত্রটি দেবযানীর জীবন থেকেই অনুপ্রাণিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement