যেন এখনও চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন বন্ধুকে।
বন্ধুর আকস্মিক মৃত্যুতে শোকাহত। কলেজ জীবনে কেকের সঙ্গে একই ব্যান্ডে কাজ করতেন তিনিও। বন্ধুকে হারিয়ে সেই গৌতম চিকারমানে লিখলেন, ‘আমি এখনও এমন এক জনকেও দেখিনি যিনি কেকের গান ভালবাসেন না। একটা সাধারণ টি-শার্ট আর জিনসে স্টেজে উঠে যেত ও। আর শীতকাল হলে একটা চামড়ার জ্যাকেট পরে নিত। প্রতিটি কনসার্টে এমন ভাবে পারফর্ম করত যেন এটিই জীবনের শেষ অনুষ্ঠান।’ কথাগুলো লিখেছেন গৌতম চিকারমানে।
কলেজ জীবনে কেকের সঙ্গে একই ব্যান্ডে কাজ করতেন তিনিও। বর্তমানে অবজার্ভার রিসার্চার ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি গৌতম। এত দিনের সহপাঠী, সঙ্গীতের সহকর্মী বন্ধু কেকের আকস্মিক প্রয়াণ তাঁর মনে কতটা দাগ কেটেছে সহজেই অনুমেয়।একটি দীর্ঘ টুইটে তিনি কেকের স্মৃতি গল্পের আকারে বলে চলেন। যেন এখনও চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন বন্ধুকে।লিখেছেন, কেকে ব্যান্ড ছাড়ার পর ৩ বার তাঁর লাইভ শো দেখেছেন গৌতম। তাড়া থাকলেও পা গেঁথে গিয়েছিল অডিটোরিয়ামে। কোনও বারই উঠে আসতে পারেননি শেষ অবধি না দেখে। কেকের কণ্ঠের আকর্ষণ এমনই। অদ্ভুত অনুভূতি, বললেন গৌতম। দর্শকদের উন্মাদনার কারণ তিনি বোঝেন।
গৌতমের কথায়, ‘কেকের গান মানুষকে একত্রিত করেছে। ওর মৃত্যুর খবরের অভিঘাতটা ব্যক্তিগত স্তরে না পৌঁছানোটাই অস্বাভাবিক। বন্ধুত্ব দিবসে ‘ইয়ারোঁ দোস্তি’ গাওয়াই হোক, বা কলেজের শেষ দিনে ‘পল’-ই হোক না কেন, আমাদের ভালবাসা, আত্মীয়তা, হৃদয়ের বেদনা এবং বন্ধুত্বের কিছু অবিচ্ছেদ্য স্মৃতি ওর সঙ্গে বাঁধা পড়ে আছে। সে সব নিয়েই ও চলে গেল।’
গৌতম জানান, দিল্লির কিরোরি মাল কলেজে পড়তেন তখন। যে ব্যান্ডে গৌতম ছিলেন সেই ব্যান্ডেরই মূল গায়ক এবং ড্রামার ছিলেন কেকে। আইআইটি কানপুর-সহ কত কলেজ ফেস্টে অনুষ্ঠান করেছেন গিয়ে গিয়ে, ডাক আসতেই থাকত।তবে গানের নেশায় চাকরির চেষ্টা আর করা হয়নি কেকের। আর্থিক টানাটানিতে কঠিন সময়ের মধ্যে গিয়েছেন তিনি। তবু গানই ছিল সবার আগে। এমনও দিন গিয়েছে, দু’মুঠো খেতে পাওয়ার জন্য প্রিয় টাইপরাইটার বিক্রি করতে হয়েছিল ‘পল’-এর গায়ককে। কিন্তু গান থেকে বেশি দিন দূরে থাকতে পারেননি। শাহরুখ খানের মতো কেকেও এক দিন মেরিন ড্রাইভে দাঁড়িয়ে ভেবেছিলেন, এই মুম্বই তাঁকে জায়গা দেবে কি না!
তার পর? শুধু জায়গাই দেয়নি। তাঁকে প্রিয়তম করে রেখেছিল মেরিন ড্রাইভ।সঙ্গীতে প্রথাগত প্রশিক্ষণ ছিল না কেকের। স্বাভাবিক ভাবেই গাইতেন তিনি। তাঁর স্কেলে বহু গায়ক সাধনা করেও গলা তুলতে পারেন না।কলকাতায় বহু বার অনুষ্ঠান করতে এসেছেন কেকে। বলতেন, কলকাতা তাঁর প্রিয় শহর। মঙ্গলবার প্রিয় শহরের বুকে নজরুল মঞ্চেই যে তাঁর শেষ অনুষ্ঠান হবে কে জানত!
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।