KK

Singer KK Death: ‘হম, রহে ইয়া না রহে কাল..’

১৯৯৯ সালে মুক্তি পায় তাঁর বিখ্যাত অ্যালবাম ‘পল’। যার গান ‘হম, রহে ইয়া না রহে কাল..’ রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে । এর পর আর ফিরে তাকাননি কেকে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২২ ১১:৪৬
Share:
০১ ২৩

মঙ্গলবার সুরের জগতের নক্ষত্রপতনের সাক্ষী থাকল শহরবাসী। কলকাতার এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে প্রয়াত হলেন বলিউডের গায়ক কেকে।

০২ ২৩

মাত্র ৫৪ বছর বয়সে মৃত্যু হল এই গায়কের। চিকিৎসকদের অনুমান হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এই খ্যাতনামী গায়কের।

Advertisement
০৩ ২৩

খ্যাতির শীর্ষে তিনি চিরকালই ছিলেন। শ্রোতারা বলেন তাঁর গাওয়া গান শুনলে মনখারাপ হয়। খুব উদাস লাগে। আর সেই মনখারাপের অন্যতম কারণ তাঁর গলা। সেটাই ছিল তাঁর ইউএসপি।

০৪ ২৩

কেকে হয়ে ওঠার আগে তিনি ছিলেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। জন্ম মালয়ালি পরিবারে। তবে বেড়ে ওঠা দিল্লিতে। বাবা সি এস নায়ার এবং মা কুনাথ কনকাবলী।

০৫ ২৩

ছোট থেকেই সঙ্গীতের আবহে বড় হয়ে ওঠা কেকে-র। মা-বাবা দু’জনেই খুব ভাল গান গাইতেন। মামাবাড়ির দাদু ছিলেন সঙ্গীতের প্রশিক্ষক।

০৬ ২৩

ছোট থেকে মায়ের গান রেওয়াজ খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতেন কেকে। কখনও কখনও মায়ের গান রেকর্ড করেও রাখতেন।

০৭ ২৩

ছোট থেকে গানের গলা ভাল হলেও কেকে কখনও কোথাও গান শেখেননি। বাবা তাঁকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য পাঠালেও দু’দিনেই প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া বন্ধ করেন। বলতেন, কিশোর কুমার কখনও গান শিখে গায়ক হননি। তাই তিনিও ভাল গায়ক হলে না শিখেই হবেন।

০৮ ২৩

দিল্লির মাউন্ট সেন্ট মেরি স্কুলের গণ্ডি টপকে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিরোরি মাল কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন কেকে। স্নাতক পাশ করার পর, বিপণন সহযোগী হিসাবে প্রায় আট মাস কাজ করেছিলেন তিনি। এর পরই চাকরি ছেড়ে মুম্বইয়ে চলে যান।

০৯ ২৩

১৯৯১ সালে দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা জ্যোতিকে বিয়ে করেন। তাঁদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে। ছেলে নকুলকৃষ্ণ কুনাথ এবং মেয়ে তামারা কুনাথ।

১০ ২৩

বলিউডে পা দেওয়ার আগেই কেকে ১১টি ভাষায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিজ্ঞাপনী গান গেয়ে ফেলেছিলেন। ১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সমর্থনের জন্য তিনি ‘জোশ অব ইন্ডিয়া’ বলে একটি গানও গেয়েছিলেন। এই গানের ভিডিয়োতে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরাও ছিলেন।

১১ ২৩

কেকে-র জীবনে সিনেমায় গান গাওয়ার প্রথম সুযোগ করে দেন এ আর রহমান। ১৯৯৬ সালে তামিল ছবি ‘কদাল দেশম’-এর ‘কলেজ স্টাইল’ গানের মাধ্যমে তাঁর অভিষেক হয়।

১২ ২৩

এর পর ১৯৯৯ সালে ‘হম দিল দে চুকে সনম’ সিনেমার বিখ্যাত গান ‘তড়প তড়প কে ইস দিল সে...’ গানের মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন কেকে। শোনা যায়, কেকে তিন-চার বার এই গান গাওয়ার পর সঙ্গীত পরিচালক ইসমাইল দরবার সবুজ সঙ্কেত দিলেও মন ভরেনি কেকে-র। ইসমাইলকে তিনি জানান এই গানের জন্য যে দুঃখ-ভাবের প্রয়োজন, তা তিনি ফুটিয়ে তুলতে পারছেন না। এক দিন ভোর তিনটের সময় হঠাৎই ফোন করে জানান তিনি তৈরি। ভোর ৪টের সময় রেকর্ড হয় সেই গান। বাকিটা ইতিহাস।

১৩ ২৩

ওই একই বছরে মুক্তি পায় তাঁর বিখ্যাত অ্যালবাম ‘পল’। যার গান ‘হম, রহে ইয়া না রহে কাল..’ রাতারাতি লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। এর পর আর ফিরে তাকাননি কেকে। কোঁকড়ানো চুলওয়ালা লাজুক গোছের কৃষ্ণকুমার হয়ে ওঠেন কেকে। বহুমুখী প্রতিভার জন্যও বিখ্যাত হন কেকে। তাঁর উঁচু মাত্রায় গান গাওয়ার দক্ষতা বলিউডে বৈপ্লবিক পরিবর্তনও আনে।

১৪ ২৩

হিন্দি এবং তামিল ছাড়াও তেলুগু, কন্নড়, মালয়ালম, মরাঠি, বাংলা, অহমীয়া এবং গুজরাতি ভাষাতেও গান গেয়েছেন কেকে।

১৫ ২৩

২০০৯ সালে, ‘খুদা জানে’ গানটির জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে সেরা নেপথ্যগায়কের পুরস্কার জেতেন। গানের রিয়্য়ালিটি শো ‘ফেম গুরুকুল’, তিনি জুরি সদস্য হিসেবে আমন্ত্রিত হন। এ ছাড়াও গানের বহু রিয়্য়ালিটি শোয়ে জুরি সদস্য এবং অতিথি ছিলেন তিনি।

১৬ ২৩

জীবদ্দশায় হিন্দিতে ৫০০টিরও বেশি এবং অন্যান্য ভাষায় ২০০টিরও গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কেকে।

১৭ ২৩

যাঁর নিজের এত অনুরাগী, সেই কেকে নিজে আমেরিকার গায়ক-গীতিকার বিলি জোয়েলের বিশাল বড় ভক্ত ছিলেন। ক্রিকেটপ্রেমী কেকের প্রিয় নায়ক ছিলেন ইরফান খান। এ ছাড়াও পছন্দ ছিল শাহরুখ, আমির এবং অক্ষয়।

১৮ ২৩

যে কোনও ধরনের পেস্ট্রি এবং দক্ষিণ ভারতীয় খাবার খেতে পছন্দ করতেন। পরতে ভালবাসতেন জিন্‌স এবং টি-শার্ট। মৃত্যুর আগে অনুষ্ঠান চলাকালীনও তাঁর পরনে ছিল জিন্‌স এবং গাঢ় নীল রঙের একটি টি-শার্ট।

১৯ ২৩

অল্প বয়সে এ ভাবে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়া তাঁর ভক্তকুলের মেনে নিতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। একটা যুগের ছেলে-মেয়েদের প্রেম শুরু এবং প্রেম ভাঙা এই দুই মুহূর্তেরই সাক্ষী থাকত কেকে-র গান। যাঁরা তাঁর গান শুনে কিশোর থেকে পরিণত হয়েছেন, সেই ভক্তকুলের জন্য তাঁর চলে যাওয়া আরও কষ্টের।

২০ ২৩

‘হম, রহে ইয়া না রহে কাল... কাল, ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল’, কেকে-র এই গান কখনও ভুলে যাওয়ার নয়। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছাড়ার সময় এই গান বাজানো ভারতীয়দের কাছে এক অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সহজে সেই অভ্যেস যাবে না।

২১ ২৩

এ ছাড়াও তাঁর গাওয়া, ‘খুদা জানে’, ‘অলবিদা’, ‘ও মেরি জান’, ‘কোই কহে কহতা রহে’, ‘সচ কহে রহা হ্যায় দিওয়ানা’, ‘তু হি মেরা শব হ্যায়’, ‘দিল ইবাদত’ গানগুলি দেশবাসীর মনে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। এই গানগুলি ভোলার মতো নয়।

২২ ২৩

তবে কলকাতাতে এসেই ‘আলবিদা’ জানাতে হল কেকে-কে। সুরের শহরে এসে কলকাতাবাসীকে সুরের জাদুতে ভুলিয়ে চলে গেলেন অন্য এক জগতে। রেখে গেলেন অসাধারণ সব সৃষ্টিকে।

২৩ ২৩

তাঁর ‘হম, রহে ইয়া না রহে কাল... কাল, ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পল’, গানের মতো সত্যিই প্রতিটি দেশবাসী তাঁকে মনে রাখবে। মনে রাখবে তাঁর সৃষ্টিকে। মনে রাখবে তাঁর শিল্পসত্তাকে। মনে রাখবে এক সাড়ে পাঁচ ফুট মানুষের সদা হাস্যমুখ গায়ককে। যিনি মঞ্চে গান গাইতে উঠলেই দাপিয়ে বেড়াতেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement