কাঞ্চনের ক্ষমায় সন্তুষ্ট নয় টলিপাড়া। ছবি: সংগৃহীত।
নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন বিধায়ক-অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক। কিন্তু সেই ক্ষমাপ্রার্থনায় সন্তুষ্ট নয় টলিপাড়া। তাঁর বন্ধুরা মেনে নিতে পারছেন না। অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত লেখেন, “ক্ষমা চাওয়ার মধ্যেও রাজনীতি! একেবারে অচেনা হয়ে গেলি।”
অন্য দিকে ঋত্বিক চক্রবর্তী লেখেন, “বাজারে চা দোকানের লোকটা সিরিয়াস গলায় বলল—‘যখন ব্যাঙ ফোঁস করে তখন দেখবি, একটু পরে নিজের থুতু নিজেই চেটে নিচ্ছে’।” নাম না করেই বিধায়ক-অভিনেতাকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন তিনি।
এই তালিকায় রয়েছেন অন্য শিল্পীরাও। মঙ্গলবারই নাট্যক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘দীনবন্ধু মিত্র পুরস্কার’ ফিরিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন প্রবীণ নাট্যকার চন্দন সেন। প্রতিবাদীদের খোঁচা দিয়ে পুরস্কার ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কাঞ্চন মল্লিক। তৃণমূলের বিধায়ক হলেও কাঞ্চন একজন নাট্যকর্মী। তার পাল্টা প্রতিবাদ জানালেন চন্দন।
গত রবিবার কোন্নগরের এক ধর্নামঞ্চ থেকে কাঞ্চনের করা মন্তব্যের জেরে তাঁকে কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়। আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন করেন, তাঁরা বেতন বা বোনাস নেন কি না!
এর পরই অভিনেতার দীর্ঘ দিনের বন্ধু সুদীপ্তা চক্রবর্তী সমাজমাধ্যমে লেখেন, “তোকে ‘ত্যাগ’ দিলাম। ” সুজন মুখোপাধ্যায় জানান, জানুয়ারি মাসে তিনি নাটকের শো বাতিল করছেন। ওই নাটকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করতেন কাঞ্চন। আর কোনও দিন নাটকটি মঞ্চস্থ করতে পারবেন না বলেও আক্ষেপ করেন সুজন।
তার পর সোমবার মধ্যরাতে একটি ভিডিয়োবার্তায় কাঞ্চন বলেন, “গতকাল একটি ধর্নামঞ্চে আমি কিছু মন্তব্য করে ফেলি। যা নিয়ে সমালোচনা হয়। আমি আমার বক্তব্যের জন্য দুঃখিত এবং লজ্জিত।” কাঞ্চন আরও জানান, তিনি কোনও সাফাই দেওয়ার জন্য এই ভিডিয়োটি করেননি। তিনি অন্তর থেকে অনুভব করতে পেরেছেন তাঁর ত্রুটি। তাঁর কথায়, “বাড়িতে আমারও স্ত্রী, অসুস্থ ব্যক্তি রয়েছেন। যাঁকে সুস্থ রাখতে চিকিৎসা পরিষেবার প্রয়োজন পড়ে। এ ছাড়া, অনেককে প্রয়োজন অনুযায়ী পরিষেবার ব্যবস্থা করে দিই।” সেখান থেকেই নাকি তাঁর এই ধৈর্যচ্যুতি। কারণ হিসেবে কাঞ্চন জানান, তাঁর এক বন্ধুর মায়ের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে শুরু করে। চিকিৎসকদের ধর্মঘট থাকায় তাঁকে বাঁচানো যায়নি। সে দিনই ভেঙে পড়েন তিনি। সেই আবেগ থেকেই তিনি এমন মন্তব্য করে বসেন। যদিও চিকিৎসকদের ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে কোনও কটু মন্তব্য করতে চাননি বলেই দাবি করেন বিধায়ক।