Kanchan Mullick Sreemoyee Chattoraj

‘আন্দোলনের নামে গুন্ডামি চলছে!’ কাঞ্চনকে ‘বোনাস বিতর্কে’ বিঁধতেই গর্জে উঠলেন শ্রীময়ী

কাঞ্চনের বন্ধুরা তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করছেন। সে তালিকায় প্রথমেই রয়েছেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী। এ বার পাল্টা জবাব দিলেন শ্রীময়ী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:০৩
Share:

ফুঁসে উঠলেন শ্রীময়ী। গ্রাফিক : সনৎ সিংহ।

এক প্রতিবাদী ধর্নামঞ্চ থেকে বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের করা মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় টলিপাড়া। অভিনেতা-বিধায়কের বন্ধুরা তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করছেন । সে তালিকায় প্রথমেই রয়েছেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী। কাঞ্চনা মৈত্র আবার নাম না করে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক, বিবাহ নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন। ঋত্বিক চক্রবর্তী কাঞ্চনের নাম না করে “ঘাঁটা মল্লিক চাটা মল্লিক” নানা ব্যঙ্গবিদ্রুপ করেছেন। এ বার স্বামীর হয়ে রুখে দাঁড়ালেন শ্রীময়ী চট্টরাজ। ‘আন্দোলনের নামে গুন্ডামি’ চলেছে, জানালেন শ্রীময়ী। পাশাপাশি, সুদীপ্তাকেও পাল্টা জবাব দিলেন তিনি।

Advertisement

অভিনেত্রী দাবি করেন, যে ঘটনাটা ঘটছে, সেটা নারকীয়। তিনি বিচার চান। পাশাপাশি, যাঁরা কাঞ্চনকে কটাক্ষ করেছেন, তাঁদের কাছে জানতে চাইলেন, “শুধু আরজি করে নয়, আমাদের ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেও অনেক আকস্মিক মৃত্যু হয়। তখন কি আন্দোলনে নামি! কাজ থেমে থাকে? শুধু সিরিয়ালের নীচে লেখা হয় অমুক চরিত্রটা বদলে গেল। সেখানে চিকিৎসকদের তো দায়িত্বটা আরও বেশি, সেটাই বলতে চেয়েছে কাঞ্চন। আমরা কিন্তু সবাই সুবিচার চাইছি। তদন্তের ভার রাজ্যের হাত থেকে কেন্দ্রে গিয়েছে। বড় বড় মানুষেরা বিচার করছেন। এখানে চিৎকার করে রক্তবন্যা বইয়ে দিচ্ছি। আন্দোলনের নামে গুন্ডামি হচ্ছে।”

নবান্ন অভিযানের দিনের অভিজ্ঞতা থেকে অভিনেত্রী জানান, শুটিংয়ের কল টাইম থাকায় বাড়ি থেকে বেরোতেই হবে। কিন্তু রাস্তায় মারধর, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, পুলিশকে ইঁট ছোড়া সবই চাক্ষুষ করেছেন সে দিন। শ্রীময়ীর কথায়, “বহু গরিব মানুষ রয়েছেন, যাঁদের বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। সেই কারণে কাঞ্চন বলেছেন যাতে চিকিৎসকেরা কাজে ফেরেন। এখন বলবেন, তৃণমূল বিধায়কের স্ত্রী এটা বলছে। আসলে যাঁরা এ সব সমাজমাধ্যমে লিখছেন, তাঁদের কাজ সমাজমাধ্যমে লেখা। নিজেদের বুদ্ধিজীবী ভাবেন। তাঁরা দেখাতে চান সব বিষয়ে তাঁদের জ্ঞান রয়েছে।”

Advertisement

ব্যক্তিগত আক্রমণের বিষয়ে শ্রীময়ী দাবি করেন, “যাঁরা আজকে সমাজমাধ্যমে কাঞ্চনের বিয়ে নিয়ে কথা বলছেন, তাঁরা নিজেদের দিকে একটু দেখুন। তাঁদেরও তো অনেক বন্ধু ছিল। আমি অনেকেই দেখেছি সরকারের সুসময়ে হেসে হেসে মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছেন। সরকার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করছেন। কিন্তু কঠিন সময়ে এলে আবার তাঁকেই বিঁধছেন।”

সুদীপ্তা, ঋত্বিকের করা পোস্ট প্রসঙ্গে শ্রীময়ী সাফ কথায়, “সুদীপ্তাদি যদি কাঞ্চনকে এত বন্ধু বলে ভাবতেন, তা হলে একটা ফোন করতে পারতেন। সেটা তো করেননি। ওঁর যা ভাল মনে হয়েছে, লিখেছেন সমাজমাধ্যমে। তবে, সুদীপ্তাদি ভালই করেছেন। এ রকম বন্ধু না থাকাই ভাল। আর যাঁরা চটি চাটা বলেছেন, কাঞ্চন বিধায়ক বলেই এ সব বলছেন। তার মানে তাঁরা বলেছেন, সরকারের লোকেরা দোষী। তাঁদের কাছে কি কোনও প্রমাণ আছে? তা হলে তাঁরাই বিচার করে নিন।” শ্রীময়ীর দাবি, এ সব না করে, সকলে মিলে সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়ে দাবি করতে পারেন, যাতে অপরাধীকে বা তদন্তভার তাঁদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বিতর্কের সূত্রপাত কাঞ্চনের বক্তব্যে। রবিবার কোন্নগরে এক প্রতিবাদ ধর্নামঞ্চ থেকে বিধায়ক বলেন, “কর্মবিরতি পালন করছেন শাসকদলের বিরুদ্ধে, ভাল। কিন্তু, তাঁরা সরকারি বেতন নিচ্ছেন তো, না কি নিচ্ছেন না? এটা আমার প্রশ্ন। বোনাস নেবেন তো? না নেবেন না?” পাশাপাশি কাঞ্চন বলেন, “আজ আন্দোলনের নামে চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। সবাই বলেন, চিকিৎসক মানে ভগবান। গ্রামের মানুষ ছুটে আসেন শহরের হাসপাতালে, চিকিৎসার জন্য। আপনারা আন্দোলন করুন। তবে রোগীরা কী অপরাধ করেছেন? এমন কোনও কাজ আপনাদের করা উচিত নয়, যাতে তাঁরা ‘চিকিৎসকেরা ভগবান’ বলতে দ্বিধা করেন।”

এর পরই অভিনেত্রী সুদীপ্তা সমাজমাধ্যমে লেখেন, “এক সময়ের বন্ধু/সহকর্মী কাঞ্চন মল্লিক, তোকে ত্যাগ দিলাম।” সেই পোস্টে মন্তব্য বিভাগে বন্ধুত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সুজন মুখোপাধ্যায়ও। টলিপাড়ার একের পর এক অভিনেতা ও পরিচালক কাঞ্চনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে চলেছেন। এ বার তাঁদের সকলকেই উত্তর দিলেন কাঞ্চনের স্ত্রী। পাশপাশি তিনি এ-ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, “লোকে ভাববে বিধায়কের স্ত্রী বলেই এ সব বলছি, তবে আমাদের বিয়ের পর থেকে শুধু সমালোচনা সহ্য করেছি। কিন্তু এ বার আমিও প্রশ্ন তুলব কী ভুল বলেছে কাঞ্চন? এমন কী বলেছে যে সবার গায়ে লাগছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement