জ্যোতিকা
ময়মনসিংহ গৌরীপুরের মেয়ে তিনি। কলকাতায় মামার বাড়ি। টলিউডের প্রথম বাংলা ছবিতে কাজ করার সূত্রে সেই মামাবাড়িতে আসা ২৫ বছর পরে! বাংলাদেশের জ্যোতিকা জ্যোতির ডেবিউ হতে চলেছে প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের ছবি ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’ দিয়ে। প্রথম ছবিতেই বিপরীতে ঋত্বিক চক্রবর্তী, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতারা।
নার্ভাস লাগেনি? প্রশ্নটা শুনে একগাল হেসে জ্যোতিকা বললেন, ‘‘প্রথম বার ঋত্বিকদাকে দেখে আকাশ থেকে পড়েছিলাম। একজন অত বড় তারকা কী করে এতটা সিম্পল হতে পারেন! কোনও ইগো নেই।’’ ছবির কথাবার্তা শুরু হওয়ার পরে একদিন ঋত্বিকই তাঁকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলেন। প্রথমটায় বিশ্বাসই করতে পারেননি জ্যোতিকা। জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘এটা কি আপনার আসল আইডি?’ জবাব এসেছিল, ‘নকলরাও তো নিজেদের অরিজিনালই বলে!’ শুনেই বুঝেছিলেন, ইনি ঋত্বিকই!
পরিচালক প্রদীপ্তের সঙ্গে জ্যোতিকার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন পরিচালক সঞ্জয় নাগের ভাই সুজয় নাগ। এসআরএফটিআই-এ একটি শর্ট ফিল্মের কাজে এসেছিলেন জ্যোতিকা। তখনই সঞ্জয়ের ঢাকা থিমের রেস্তরাঁ আবিষ্কার করেন নায়িকা। কলকাতা বইমেলায় মিটিং করে জ্যোতিকাকে রাজলক্ষ্মীর জন্য চূড়ান্ত করে ফেলেছিলেন প্রদীপ্ত। তাঁকে বিনা মেকআপে আসতে বলেছিলেন পরিচালক। ছবিতে দেখানো হয়েছে, রাজলক্ষ্মীর ছোটবেলা কেটেছে বাংলাদেশে। জ্যোতিকাকে এই চরিত্রে পছন্দ করার অন্যতম কারণ সেটাও। রাজলক্ষ্মীর জন্য গত দেড় বছর ধরে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন জ্যোতিকা, ‘‘একটু বেশিই সিরিয়াস হয়ে এই কাজটা করেছি। প্রথমত, এ দেশে আমার প্রথম কাজ এটা। দ্বিতীয়ত, বিপরীতে ঋত্বিকদা।’’
জ্যোতিকার চোখে টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি অনেক বেশি প্রফেশনাল। জানালেন, মহিলা শিল্পী হিসেবে ঢাকার তুলনায় কলকাতায় কাজ করতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেছেন। ‘‘এখানে সকলেই পড়াশোনা জানা। টাইম ও শিডিউল মেনটেন করে চলা হয়। মহিলা শিল্পী হিসেবে সম্মানও এখানে বেশি,’’ অকপট জ্যোতিকা। ডেবিউ ছবির জন্য উচ্চারণে মনোযোগ এবং ক্লাসিক্যাল নাচের তালিমও নিয়েছেন নায়িকা। লোকজনের আচার-ব্যবহার, চলাফেরা খুঁটিয়ে লক্ষ করতেন রবীন্দ্র সরোবর লেকে হাঁটতে গিয়ে। পরিচালকের নির্দেশ মতো বাসে-ট্রামে যাতায়াত করতেন। কাজের সূত্রে কলকাতায় শিফট করার পরিকল্পনা রয়েছে? ‘‘কাজ করার জন্য শিফট করতেই হবে, এমন নয়। কলকাতায় মামাবাড়ির সাপোর্ট পাই। যেটা প্রথম দিকে বাংলাদেশে পাইনি,’’ বললেন জ্যোতিকা। বাংলাদেশে দীর্ঘ কেরিয়ারের পর এ বার টালিগঞ্জেও জায়গা করে নিতে চান। আপাতত রাজলক্ষ্মী হিসেবে তাঁকে কতটা গ্রহণ করেন দর্শক, সেই অপেক্ষায় জ্যোতিকা।