Joy Sarkar

Joy Sarkar: আমরা ভিখারি নই, বাংলা গান শুনুন বলে ভিক্ষা করার কোনও প্রয়োজন নেই: জয় সরকার

এখন কলকাতার রিয়্যালিটি শো-তে বিচারকের আসনে মুম্বইয়ের শিল্পীদের দেখা যায়। সেই আসনে বসার জন্য বাংলায় শিল্পীর অভাব আছে মনে করেন না জয় সরকার।

Advertisement

শ্যামশ্রী সাহা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২২ ১৬:১৮
Share:

জয় সরকার।

আগামী বছর সঙ্গীতজীবনের ২৫ বছর পূর্ণ করবেন জয় সরকার। হাতে একাধিক ছবির কাজ। তার মধ্যেই সুরকার মজেছেন রহস্য-রোমাঞ্চের সুর বাঁধায়।

Advertisement

প্রশ্ন: আপনি তো রহস্যময় হয়ে উঠছেন!

জয়: কেন?

Advertisement

প্রশ্ন: বেশ কয়েকটা রহস্যধর্মী ছবিতে আপনারই আবহসঙ্গীত…

জয়: হ্যাঁ, এর আগে ‘ছিন্নমস্তার অভিশাপ’–এর আবহসঙ্গীত করেছিলাম। ‘যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে’ও তৈরি হয়ে আছে। এখনও মুক্তি পায়নি। এ ছাড়া, সামনে আসছে ওয়েব সিরিজ ‘দার্জিলিং জমজমাট’।

প্রশ্ন: রহস্য-রোমাঞ্চধর্মী ছবির গানের ক্ষেত্রে সঙ্গীতায়োজন কতটা আলাদা?

জয়: এইটাই তো গান-বাজনার মজা। সঙ্গীত এমন একটা ব্যাপার, যেখানে আমরা সব আবেগকে প্রকাশ করতে পারি। এমন অনেক কথা আছে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। কিন্তু আবহ দিয়ে বোঝানো যায়। রোমাঞ্চধর্মী ছবিতে এই সুযোগ বেশি। সেখানে আবহে সুরের ব্যবহারই বলে দিতে পারে, রহস্যের সমাধান হল।

প্রশ্ন: নাটকের আবহও তো করছেন, সেখানেও আলাদা ভাবনা থাকে নিশ্চয়ই?

জয়: এক জন সঙ্গীত পরিচালক তো শুধু ছবির গানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। নাটক আমার কাছে একটা অনুশাসনের জায়গা। নাটকের মহড়া থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। সেই শেখাটা খুব উপভোগ করি।

প্রশ্ন: মুম্বইয়ের মতো কলকাতায় অরূপ-প্রণয়ের পর সে ভাবে সুরকার জুটি উঠে আসেনি। বোঝাপড়ার অভাব?

জয়: এটা ঠিক কথা। কিন্তু কেন একসঙ্গে কাজ হয় না, বলতে পারব না। আমি একা কাজ করতে ভালবাসি, তাই আর কারও সঙ্গে জুটি বাঁধার কথা মনে হয় নি। এখানে কোনও সুরকার জুটি সাফল্য পাননি, তাই হয়তো আর কেউ জুটি বাঁধার পথে এগোননি।

প্রশ্ন: ‘বাংলা গান বাঁচান, বাংলা গানের পাশে দাঁড়ান’ স্লোগান উঠছে। এটা জরুরি মনে করেন?

জয়: এই ‘বাংলা গান বাঁচান’ কথাটাতেই আমার আপত্তি। আমরা কি ভিখারি নাকি? আমাদের কাজটা ভাল করে করলেই আর এ সবের দরকার নেই। গান শোনার এখন অনেক মাধ্যম আছে, সেগুলো জানতে হবে। তা হলেই আর বাংলা গান কেউ শুনছে না, এটা বলতে হবে না। অনেকেই মনে করেন গানের ভিডিয়ো ছাড়া কেউ গান শুনবেন না। এটাও ভুল। গান শোনার জিনিস, দেখার নয়।

প্রশ্ন: মুম্বইয়ের শিল্পীরা নাকি কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে এসে যতটা প্রাধান্য পান, কলকাতার শিল্পীরা মুম্বইয়ে ততটা পান না। সহমত?

জয়: ওটা সর্বভারতীয় প্ল্যাটফর্ম। প্রতিযোগিতাও অনেক বেশি। কলকাতাতেও তো অনেক প্রতিভা। সবাই কি সমান স্বীকৃতি পান?

প্রশ্ন: কলকাতার রিয়্যালিটি শোতে বিচারকের আসনে মুম্বইয়ের শিল্পীদের দেখা যায় বেশি। বাংলায় শিল্পীর অভাব?

জয়: এই ব্যাপারটা আমারও ভাল লাগে না। অন্য আঞ্চলিক শো-তে কিন্তু বাংলার শিল্পীদের ডাকা হয় না। এখানে চ্যানেল তার টিআরপি বাড়ানোর জন্য এটা করে।

প্রশ্ন: মুম্বইয়ে কাজের সুযোগ এসেছে আপনার?

জয়: বাংলায় যা কাজ আছে, তা-ই শেষ করে উঠতে পারি না। তাই এটা নিয়ে আমার কোনও আক্ষেপ নেই। তবে মুম্বইয়ে কাজ করার স্বপ্ন সবার থাকে। সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই করব।

প্রশ্ন: কেকে-র সঙ্গে কলকাতার একটা রিয়্যালিটি শো-য়ে ছিলেন। সে দিনের কথা মনে আছে?

জয়: ওই শোয়ের গ্র্যান্ড ফিনালেতে ছিল কেকে। আমার কাছে ও ট্রেন্ডসেটার। খুব কম কথা বলত। কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখত না। এই নিয়ে শঙ্কর মহাদেবন ওকে বকছিলেন। আর ও শুধুই হাসছিল। ‘জরা সা দিলমে দে জাগা তু’ গানটা গাওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। সে দিন ওই গানটা গেয়েছিল ও।

প্রশ্ন: রূপঙ্করের মন্তব্য, কেকের মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় হয়ে গিয়েছে। আপনি চুপ ছিলেন কেন?

জয়: কেকের মতো এক জন শিল্পীকে আমরা হারালাম। আমার কথা বলার ক্ষমতা ছিল না। রূপঙ্করের মন্তব্য আমি পরে দেখেছি। তবে বাংলার এত প্রিয় শিল্পী হয়েও একটা মন্তব্যের জন্য যারা রূপঙ্করের নখের যোগ্য নয়, তারাও ওকে নিয়ে কটূক্তি করেছে। এটা আমার আরও খারাপ লেগেছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement