জ্য়াকি চ্য়ান
শূন্যে ডিগবাজি খেয়ে শত্রুকে দু'ঘা কষিয়ে দেওয়া, কিংবা হাওয়ার সঙ্গে যুদ্ধ তাঁর কাছে জলভাত। কেবল পর্দায় নয়, বাস্তবেও মার্শাল আর্টের 'ভগবান' চ্যান কোং স্যাং। চেনা গেল না তো? কিন্তু জ্যাকি চ্যান বললেই এক ডাকে তাঁকে চিনবে গোটা বিশ্ব। নব্বইয়ের দশকের 'রাশ আওয়ার', 'ক্যারাটে কিড' খ্যাত সেই চিনে অভিনেতার জন্মদিন শুক্রবার। ৬৮ বছরে পা দিলেন স্টান্ট কিং।
এক ডজনেরও বেশি মার্শাল আর্ট-নির্ভর ছবিতে কাজ করেছেন জ্যাকি। 'হু অ্যাম আই' থেকে 'র্যাম্বো ইন দ্য ব্রঙ্কস', 'দ্য রাশ আওয়ার', অ্যানিমেশন ফিল্ম 'কুং ফু পণ্ডা'-সহ বহু হিট ছবি তাঁকে সাফল্য ও খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছে দেয়। অভিনেতার ৬৮ তম জন্মদিনে ফিরে দেখা যাক তাঁর দুর্ধর্ষ স্টান্টগুলি। যেগুলির জন্য প্রায় মরতে বসেছিলেন দুঁদে ক্যারাটে চ্যাম্পিয়ন।
পাঁচ দশক ধরে যত ঝুঁকির খেলা দেখিয়ে চলেছেন জ্যাকি, তার মধ্যে সব ক'টিই বিপজ্জনক। কিন্তু তাঁর যেন পাঁজরে হাওয়া ভরা, বিড়ালের মতো! ঠিক কোনও না কোনও ভাবে প্রাণে বেঁচে যান। মনে পড়তে পারে ১৯৮৬ সালে 'আর্মর অফ গড' ছবির সিকোয়েন্স। তার পরেও যে জ্যাকি কী ভাবে বেঁচে ফিরেছিলেন তা রীতিমত বিস্ময়। নিজেও সে কথা বলতে বলতে হাসছিলেন সম্প্রতি।
জ্যাকির মাথার খুলি ফেটে গিয়েছিল সে বার। একটা হাড় ভেঙে খুলির মধ্যে ঢুকে গিয়েছিল!
একটি সাক্ষাৎকারে সেই ঘটনার বিশদ বর্ণনা দিতে দিতে স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েছিলেন অভিনেতা। বললেন, একটি দৃশ্যের শ্যুটিংয়ে বিয়ারের ক্যান খুলে তা থেকে বেরিয়ে আসা অনর্গল ঝর্ণা নিজের মুখে ধরেছিলেন জ্যাকি। আকন্ঠ পান করেছিলেন। তার পরই তাঁকে একটি গাছ দিয়ে লাফ দিতে হয়েছিল। সেই টেক উতরেও যায়। কিন্তু অভিনেতা নিজে সন্তুষ্ট হননি। তাঁর মনে হয় প্রতিক্রিয়াগুলো বেশিই শ্লথ হয়ে গেছে। তাই তাঁর কথা মতো আবার শ্যুট হয় গোটা দৃশ্য।
এর জন্য আবার তাঁকে মদ্যপান করতে হয়, তার পর আবার গাছ থেকে লাফ। কিন্তু বিপত্তি সে বারই। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাছ থেকে ঝাঁপ দিতে যাওয়ার সময়ে মড়মড় করে ডাল ভেঙে মাটিতে। মুখ থুবড়ে পড়লেন স্টান্ট কিং। তার পর প্রায় বেহুঁশ!
তড়িঘড়ি জ্যাকিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে শল্যচিকিৎসকরা দেখতে পান অভিনেতার মাথার খুলিতে চিড় ধরে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, খুলির মধ্যে একটি হাড় কী ভাবে যেন ঢুকে গেছে! তার পর অসাধ্য সাধন করেছিলেন চিকিৎসকরাই।
সৌভাগ্যক্রমে, জ্যাকি আবার সুস্থ হয়ে ওঠেন। সেই আঘাত থেকে কোনও গুরুতর ক্ষতিও হয়নি।
বিনোদনে জগতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে জ্যাকি চ্যানকে ৬২ বছর বয়সে সম্মানসূচক অস্কার দেওয়া হয়।