Iman Chakraborty

‘সারেগামাপা’-য় অর্কদীপকে কেন জড়িয়ে ধরলাম, সে চর্চা না করে দুঃসময়ে মানুষের পাশে থাকুন: ইমন

কয়েক দিন আগে নেটাগরিকদের একাংশ দাবি করেছিলেন, বিচারকদের ‘ঘুষ’ দিয়ে নিজের দলের প্রতিযোগী অর্কদীপ মিশ্রকে জিতিয়েছেন ইমন।  জবাব দিতে ফেসবুক লাইভে সেই বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২১ ১৭:৩৬
Share:

অর্কদীপ এবং ইমন

‘সারেগামাপা’ বিতর্কের যেন কোনও শেষ নেই। বিচারক জয় সরকারের পর নেটমাধ্যমে কটাক্ষের শিকার ইমন চক্রবর্তী। চূড়ান্ত ফলাফল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে এ বার ব্যক্তিগত আক্রমণ গায়িকাকে।

Advertisement

কয়েক দিন আগে নেটাগরিকদের একাংশ দাবি করেছিলেন, বিচারকদের ‘ঘুষ’ দিয়ে নিজের দলের প্রতিযোগী অর্কদীপ মিশ্রকে জিতিয়েছেন ইমন। জবাব দিতে ফেসবুক লাইভে সেই বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। অর্কদীপকে বিজয়ী ঘোষণা করা যে ভুল সিদ্ধান্ত নয়, নিজের অবস্থানে অনড় থেকে সে কথাই জোর গলায় বলেছিলেন গায়িকা। ইমনের প্রতিবাদে যদিও কাজ হয়নি বিশেষ। তারই নিদর্শন শুক্রবার নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে তুলে ধরলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত গায়িকা।

একটি স্ক্রিনশট ভাগ করে নিয়েছেন ইমন। গায়িকার কোনও এক পোস্টের মন্তব্য বিভাগে দুই মহিলার কথোপকথন উঠে এসেছে সেখানে। তাঁদের মধ্যে একজন ইমনের প্রাক্তন প্রেমিক শোভনের প্রসঙ্গ তুলে খোঁচা দিয়েছেন তাঁকে। অন্য জন ‘সারেগামাপা’-র মঞ্চে উঠে ইমনের নাচ করায় ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন। প্রশ্ন তুলেছেন, প্রতিযোগীদের গুরু হয়েও কেন নাচতে গেলেন গায়িকা? গান ছেড়ে নাচকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার কথাও লিখেছেন তিনি। এমনকি ইমনকে তুলনা করেছেন অনুষ্ঠানের আরেক বিচারক আকৃতি কক্করের সঙ্গে। ইমন আকৃতির মতো পরিণতমনস্কের নন বলেই তিনি এমনটা করেছেন বলে অভিমত সেই মহিলার।

Advertisement

আনন্দবাজার ডিজিটালের পক্ষ থেকে ইমনকে যোগাযোগ করা হলে গায়িকা জানান, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আক্রমণ মেনে নিতে রাজি নন তিনি। ইমনের কথায়, “দেখলাম মহিলারাই মহিলাদের কতটা নীচে নামিয়ে দিতে পারে। আমার এটা নোংরামি বলে মনে হয়েছে। তাই পোস্ট করতে বাধ্য হলাম।” প্রকৃত শিক্ষার অভাবই এ ধরনের মানসিকতার জন্ম দেয় বলে মনে করেন ইমন। “এখন শিক্ষিত-অশিক্ষিত সকলের হাতেই একটা করে স্মার্টফোন আছে। তাই যাকে যা ইচ্ছা বলে নিজেকে চালাক প্রমাণ করা খুব সহজ। আসলে অনেক সময় কাজ না থাকলেও মানুষ এগুলি করে থাকেন। একজন মহিলাকে অপমান করা হলে, গোটা সমাজকেই ছোট করা হয়। এই ব্যাপারটা সবাই ভুলে গিয়েছেন”, আক্রমণাত্মক সুর তাঁর গলায়।

শুধু লোকসঙ্গীত গেয়ে অর্কদীপের বিজয়ীর খেতাব পাওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন দর্শকদের একাংশ। সব ঘরানার গান গাইতে পারা অন্যান্য প্রতিযোগীদের থেকে তাঁকে এগিয়ে রাখায়, বিচারকদের পক্ষপাতদুষ্ট বলে দাগিয়ে দিয়েছিলেন অনেকেই। সেরা গায়কের আনন্দের আগেই চার দিক থেকে ধেয়ে আসা বক্রোক্তির তিক্ততা গ্রাস করেছে অর্কদীপকে । এই প্রসঙ্গে ইমনের বক্তব্য, “ধরে নিলাম, অর্কদীপ জেতার যোগ্য নয়। কিন্তু ও নিজে তো আর নিজেকে পুরস্কারটা দেয়নি। বিচারকরা কিছু একটা মনে করেছেন বলেই ওকে বিজয়ী করেছেন। এ ধরনের কথাবার্তা শুনে, ওর উপর দিয়ে কী যাচ্ছে কেউ ভেবে দেখছেন!”

অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্কের মাঝেই ইমন তুলে এনেছেন অতিমারির প্রসঙ্গ। নিন্দুকদের বিচারক এবং প্রতিযোগীদের নিয়ে সমালোচনা থামিয়ে এই কঠিন সময় অসহায় মানুষদের সাহায্য করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বললেন, “ইমন কেন অর্ককে জড়িয়ে ধরেছে, ইমন কেন শোভনের সঙ্গে প্রেম করেছে, ইমনের বর নীলাঞ্জন কী করেছে, এই নিয়ে এত আলোচনা কেন। মানুষ ওষুধ আর অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছে, সে দিকে কারও নজর নেই।” এই দুঃসময়ে দাঁড়িয়ে নিজে দায়িত্ব নিয়ে একটি মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন ইমন। সে কথাও জানালেন গায়িকা। বললেন, “নিজের কথা নিজে জানাতে চাইনি। তবে এ বার মানুষ জানুক, আমি টাকা খরচ করলে কোন ধরনের কাজের জন্য করি। বিচারকদের ঘুষ দেওয়ার জন্য করি না।”

ইমনের আফসোস, যাঁরা ট্রোলিং করতে সিদ্ধহস্ত তাঁরা যদি শিল্পীর সাধনা বুঝতেন, তবে ‘প্রতিযোগিতার বিচারক মঞ্চে উঠে নাচবে কেন’ জাতীয় প্রশ্নবাণ তাঁর দিকে ধেয়ে আসত না। তাঁর চোখে যে সব শিল্পীরা মঞ্চে উঠে ‘নাচগান’ করেন, তাঁরা প্রত্যেকেই এক একজন ‘দশভুজা’। পেশাগত জীবনের শুরু থেকেই ‘ট্রোল’ ইমনের নিত্যসঙ্গী। নতুন করে এ সব আর তাই ভাবায় না তাঁকে। তবে এ বার মুখ খুলে অনেকের চোখে খারাপ হয়ে উঠলেও, অর্কদীপ এবং বাকি প্রতিযোগীদের সাফল্যের মধ্যে শিল্পীসত্তারই জয় দেখছেন গায়িকা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement