করোনা ঢুকছে শ্রীময়ী, জবা ও কৃষ্ণকলির জীবনে। ছবি ফেসবুক থেকে নেওয়া।
যতই ধাপে ধাপে আনলক হোক জীবন, করোনা যে এত দ্রুত নির্মূল হচ্ছে না, তা পরিষ্কার। এরই মধ্যে সদ্য রাজ্যে ৩১ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। করোনার এই ‘থেকে যাওয়া’ কি টেলিপাড়ার চিত্রনাট্যেও প্রভাব ফেলছে?
১৫ জুন থেকে প্রচারিত হওয়া ডেলি সোপের নতুন পর্বগুলো বলছে, ‘শ্রীময়ী’, ‘কে আপন কে পর’, ‘কৃষ্ণকলি’, ‘এখানে আকাশ নীল’-সহ প্রায় সমস্ত মেগাতেই করোনা জায়গা করে নিয়েছে।
পারিবারিক দ্বন্দ্বের মধ্যেই সংকল্পের করোনা
প্রথমে ধরা যাক স্টার জলসার ‘শ্রীময়ী’র কথা। ধারাবাহিকে আভাস দেওয়া হয়েছে, অন্যতম চরিত্র সংকল্প সম্ভবত করোনায় আক্রান্ত। প্রচণ্ড জ্বর আর শ্বাসকষ্ট দেখে চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান, কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়িয়েছে সংকল্পের শরীরে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এবং তাঁর অসুস্থতা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন অরণ্য এবং ডিঙ্কা। শ্রীময়ী আর জুন আন্টির টানাপড়েনের মধ্যে এই সংক্রমণ দিব্যি নিজের জায়গা করে নিয়েছে।
মাস্ক ভুলছে না জবা
প্যান্ডেল বেঁধে নয়, বাড়িতে ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বিয়ে পায়েলের। আমন্ত্রিত হাতেগোনা আত্মীয়। যা করোনা আবহের নির্দেশিকাকেই মনে করায়। যখনই জবা, পরম বা পরিবারের অন্য কেউ বাইরে থেকে আসছেন তখনই তাঁদের মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস দেখানো হচ্ছে। বাড়িতে পা রেখেই আগে তাঁরা স্যানিটাইজড হচ্ছেন। তার পর সংলাপ বলছেন। এমনকি ভয়ডরহীন জবাও মেয়েকে উদ্ধার করতে বাইরে পা রাখার সময় মাস্ক পরতে ভুলছে না! স্টার জলসার ‘কে আপন কে পর’-এ এ ভাবেই পড়েছে করোনার ছোঁয়া।
করোনায় ব্যবসা পড়তি নিখিলের
আনলক স্তরে ঘরোয়া ভাবে নিখিল-আম্রপালির ভাত-কাপড়ের অনুষ্ঠান করাই যেতে পারে। এই আবহ দিয়ে শুরু জি বাংলার ‘কৃষ্ণকলি’। যদিও এখন হইহই চলছে আম্রপালিকে নিয়ে। পায়েসে বিষ মিশিয়ে তাকে মারতে চেষ্টা করেছে দোলা। আম্রপালির জীবন সঙ্কটে। তার আগে কিন্তু করোনার জেরে ব্যবসায় মন্দা নিয়ে দুর্ভাবনায় ভুগতে দেখা গিয়েছে নিখিলকে। চিত্রনাট্যকার লীনা গঙ্গোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন, ‘আবহে’ বর্তমান পরিস্থিতি জায়গা করে নেবে। সেই অনুযায়ী কথায়, ‘আবহ’ ধারাবাহিকে ঘুরেফিরে আসছে সংক্রমণ।
‘নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু’, ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’, ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’— এই তিন ধারাবাহিকে ঢুকতে পারেনি করোনা। ছবি ফেসবুক থেকে নেওয়া।
মাস্ক খুলছেই না উজান-ঝিনুক
একে ডাক্তার, তায় চিকিৎসার জন্য সারা ক্ষণ টিউলিপ নার্সিংহোমে। মাস্ক খোলার কোনও প্রশ্নই নেই উজান আর ঝিনুকের। স্টারের আরেক জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘এখানে আকাশ নীল’ সংলাপে করোনা শব্দ ব্যবহার না করে শুধুই দৃশ্যবন্ধের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতি। উজানের জীবন থেকে হিয়া সরে গিয়েছে নতুন পর্বের শুরুতে। উজানের সহকারি এখন ঝিনুক সেন। তারও জীবন রহস্যে মোড়া। অন্য দিকে, হিয়ার অনুপস্থিতি তিলে তিলে কষ্ট দিচ্ছে উজানকে। এমন আবেগ আর রহস্যে মাখামাখি দৃশ্যগুলিতে করোনা আবহ একেবারেই বেমানান নয়!
ব্যতিক্রম....
করোনা পরবর্তী সব ধারাবাহিকেই কোভিড-১৯ মাস্ট, সেটাও কিন্তু নয়। পিরিয়ড ড্রামা যেমন, ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’, ‘প্রথমা কাদম্বিনী’, ‘নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু’, ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’, ‘বেদের মেয়ে জোৎস্না’ গড়গড়িয়ে এগোচ্ছে করোনা ছাড়াই।