‘বেসিক ইনস্টিঙ্কট’-এর মতো ছবিতে কাজ করেছেন বলে তাঁকে পুরুষ সহকর্মীদের কাছ থেকে অবজ্ঞা সইতে হয়েছে বলেও জানান শ্যারন। — ফাইল চিত্র।
বলিষ্ঠ চরিত্রে অভিনয়ে সাড়া ফেলেছিলেন ঠিকই, ব্যক্তিগত জীবনে দিতে হয়েছিল তার খেসারত। দত্তক নেওয়া সন্তানকে নিজের কাছে রাখার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন হলিউড অভিনেত্রী শ্যারন স্টোন। স্বীকার করলেন তিনি, ‘বেসিক ইনস্টিঙ্কট’ ছবিতে তাঁর অভিনীত চরিত্রই এর জন্য দায়ী।
২০০০ সালে তিনি ও তাঁর প্রাক্তন স্বামী দত্তক নেন পুত্র রোয়ানকে। ২০০৪ সালে সন্তানকে কাছে রাখার অধিকার হারান অভিনেত্রী। শ্যারনের দাবি, ১৯৯২ সালে যৌনগন্ধী থ্রিলার ছবিতে কাজ করার ফল সেটি। সন্তানকে কাছে পাওয়ার অধিকার থেকে তাঁকে বঞ্চিত করার ক্ষেত্রে অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছিল অভিনয়।
সম্প্রতি এক পডকাস্টে শ্যারন বললেন, “আমি আমার সন্তানের ভরণপোষণের অধিকার হারিয়েছিলাম। বিচারক আমার সন্তানকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘তুমি কি জানো, তোমার মা সেক্সমুভিতে কাজ করে?’এমন খারাপ ভাবে বলা হয়েছিল যে, বিচারব্যবস্থার প্রতি ঘৃণা জন্মেছিল। আমি কী ধরনের অভিভাবক, তা নির্ধারণ করার চেষ্টা চলেছে সিনেমার চরিত্র দিয়ে!”
তাঁর কথায়, “এখন নিয়মিত পোশাকহীন দৃশ্যের শুটিং হয়। টেলিভিশনে এ ধরনের বড় বড় দৃশ্য থাকে। আপনারা মেরেকেটে ১৬ সেকেন্ডের জন্য আমার নগ্নতা দেখেছেন। যে কারণে আমি আমার সন্তানকে হারিয়েছি। উদ্বেগ, মানসিক যন্ত্রণা সামাল দিতে না পেরে শেষে চিকিৎসার দ্বারস্থ হয়েছি। এই আমার পরিণতি।”
শ্যারন তাঁর স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ২০০৩ সালে। তিনি চেয়েছিলেন সন্তানের পূর্ণ অধিকার। সেই অধিকার তিনি পাননি, পেয়েছিলেন শুধু সন্তানের সঙ্গে দেখা করবার অধিকার। তাঁর সন্তানের বয়স এখন ২২ বছর। অভিনেত্রীর কথায়, পরের বছর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা নিয়ে। বিচারকের কথাগুলো তাঁকে আঘাত করেছিল। অভিনেত্রীর কথায়, “আমি আদালতে মানসিক ভাবে নিগৃহীত হয়েছিলাম।”
শুধু তা-ই নয়, ‘বেসিক ইনস্টিঙ্কট’-এর মতো ছবিতে কাজ করেছেন বলে তাঁকে পুরুষ সহকর্মীদের কাছ থেকে অবজ্ঞা সইতে হয়েছে বলেও জানান। তিনি বলেন, “গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলাম ওই চরিত্রটিতে অভিনয় করে। যখন আমার নাম ডাকা হল, অনেকে হাসাহাসি করছিলেন। আমি অপমানিত হয়েছিলাম। চরিত্রটিতে অভিনয় করা কত শক্ত কাজ ছিল, সে ব্যাপারে কারও ধারণা আছে?”
১৯৯২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বেসিক ইনস্টিঙ্কট’-এ শ্যারনের অভিনয় সাড়া ফেলেছিল গোটা বিশ্বে। ছবিতে ১৬ সেকন্ডের একটি দৃশ্য ছিল। যে দৃশ্যে পায়ের ভাঁজ খুলে আবার অন্য ভাবে বসেছিলেন নায়িকা। তাতেই দেখা গিয়েছিল তাঁর নিম্নাঙ্গ। পুলিশের হেফাজতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেই কাণ্ড ঘটায় শ্যারন অভিনীত চরিত্র। চমক ভুলতে পারেনি এ কালের দর্শকও। কালজয়ী ছবিটির পরিচালনা করেছেন আমেরিকান ছবিনির্মাতা পল ভারহোভেন।