স্বরূপ দত্ত। ফাইল চিত্র।
কত যে স্মৃতি ভিড় করে আসছে... স্বরূপ দত্তকে আমি দীর্ঘদিন ধরে চিনি। দেবুদা বলে ডাকতাম। আমাদের চেয়ে বয়সে খানিকটা বড় ছিলেন। এতটাই হ্যান্ডসাম ছিলেন যে, আমরা সব ওঁর গুণমুগ্ধ ছিলাম। আমরা দু’জনে প্রায় একই পাড়ায় থাকতাম। আমি গড়চা, আর উনি বালিগঞ্জ প্লেস। ওঁর মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার একটা দারুণ ক্ষমতা ছিল। ‘অগ্নিবীণা’ নামে একটা ব্যায়াম সমিতি করেছিলেন। আমরা দুর্গাবাড়িতে একসঙ্গে নাটক করতাম। নাটক নিয়ে অদ্ভুত প্যাশন ছিল ওঁর মধ্যে। ওঁর দাদা নাটকের পরিচালক ছিলেন।
এলাকায় খুব জনপ্রিয় ছিলেন দেবুদা। তখন একটা পার্ক বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। আমরা দলবল মিলে গিয়ে সেটা রক্ষা করি। ওঁকে সব সময়ে হইহই করতে দেখেছি। অন্য একটা পাড়ার সঙ্গে আমাদের গন্ডগোল হয়েছিল। ওঁর নেতৃত্বে আমরা মারামারি পর্যন্ত করতে গিয়েছিলাম (হাসতে হাসতে)!
তবে একটা আফসোস রয়ে গেল, আমার কোনও ছবিতে উনি অভিনয় করেননি। ওঁর ছেলে সারণ আমার সঙ্গে কাজ করতে এসেছিল। স্বরূপ দত্তই বলেছিলেন, ‘ওকে একটু কাজ শেখাস।’ তার পরে অনেক ছবিতে আমার সঙ্গে কাজ করেছে সারণ।
আমরা যখন তখন ওঁর বাড়িতে চলে যেতাম। ভরদুপুরে বিশ্রাম নেওয়ার সময়ে ওঁকে জাগিয়ে নাটক, এটা-সেটা নিয়ে আড্ডা দিতাম। উৎপল দত্তের গ্রুপে নাটকের অভিজ্ঞতা শুনতাম। তপন সিংহের ছবি নিয়ে গল্প করতেন।
বছরখানেক আগে দেখা হয়েছিল। বলেছিলেন, ‘চলে আয় গল্প করি।’ কিন্তু আর যাওয়া হয়নি। আজ সত্যিই বড্ড আফসোস হচ্ছে। উনি হঠাৎ করেই অভিনয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। হয়তো ভেবেছিলেন, অভিনেতা হিসেবে ওঁর ওইটুকুই করার ছিল। এটা উনি অ্যাফোর্ড করতে পেরেছিলেন, যেটা অনেক অভিনেতাই পারেন না।