মিস শেফালি
এক সময় তাঁকে দেখতে নাটমঞ্চে, সিনেমা হলে উপচে পড়ত ভিড়। এক সময় তাঁর অভিনীত নাটকের টিকিট ‘ব্ল্যাক’ বা কালোবাজারে বিক্রি হত। কিন্তু বৃহস্পতিবার শববাহী গাড়িতে তিনি যখন পানিহাটি শ্মশান-চত্বরে ঢুকলেন, আত্মীয়স্বজন ছাড়া সঙ্গে তখন মাত্রই কয়েক জন প্রতিবেশী।
সত্তরের দশকের নৃত্যশিল্পী-অভিনেত্রী মিস শেফালি বৃহস্পতিবার ভোরে সোদপুরের নাটাগড়ের বাড়িতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। বয়স হয়েছিল ৭৪। তাঁর প্রয়াণে টুইটে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মিস শেফালি অর্থাৎ আরতি দাস যখন সত্যজিৎ রায়ের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ ছবিতে দেহপসারিণী ও নার্সের চরিত্রে অভিনয় করছেন, যৌনতা নিয়ে তখনও টলিউডের আষ্টেপৃষ্ঠে সংস্কারের জড়তা। ‘সীমাবদ্ধ’-এ শেফালির ওই চরিত্রায়ণ যৌনতার বিস্ফোরণে সীমাবদ্ধ নয়, নর্তকীর শিল্পী-সত্তা, সর্বোপরি নারীত্বের নিঃসঙ্কোচ প্রকাশ। শুধু সত্যজিতের ছবিতে নয়, বিশ্বরূপা, সারকারিনা, রঙমহলের মঞ্চে ‘চৌরঙ্গি’, ‘আসামী হাজির’-এর মতো বিভিন্ন নাটকেও একই ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল শেফালি-সৌরভ।
নাচ ছেড়ে দিলেও শেফালি নিয়মিত সাজগোজ করতে পছন্দ করতেন বলে জানালেন ভাইঝি অ্যালভিনা। ‘‘মৃত্যুর পরেও তাই ওঁকে লিপস্টিক, কাজল দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছি। কোনও রিয়্যালিটি শো-এ বিচারক হিসেবে ডাক পাওয়ার খুব আশা ছিল ওঁর,’’ বললেন অ্যালভিনা। পানিহাটি শ্মশানে পুরসভার তরফে মিস শেফালিকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন স্থানীয় প্রাক্তন কাউন্সিলর সুদীপ রায়।