‘টুম্পা অটোওয়ালি’র সেটেই অনিরুদ্ধর মতো বন্ধু খুঁজে পেয়েছেন সায়ন। — নিজস্ব চিত্র।
তাঁর অভিনয়ের যাত্রাটাও অনেকটা ক্যামেরার সামনের গল্পের মতো। প্রায় সাত বছর মুম্বইয়ে আদ্যোপান্ত কর্পোরেট দুনিয়ায় বিচরণ করে আচমকাই শখ হল অভিনয়ের। অন্য দিকে, আর এক জন ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে স্নাতক করার পর অভিনয়ের পোকা মাথা থেকে বার করতে পারলেন না। এক জন ‘টুম্পা অটোওয়ালি’ সিরিয়ালের নায়ক আবির ওরফে সায়ন বসু আর অন্য জন তাঁর পর্দার দাদা অর্ক ওরফে অনিরুদ্ধ ঘোষ। ক্যামেরার সামনে আবির আর অর্কের গল্প যত দূর গড়াক না কেন, পর্দার পিছনে সায়ন আর অনিরুদ্ধের গল্প গড়িয়েছে আরও বহু দূর।
‘টুম্পা অটোওয়ালি’ শুটিংয়ের ফাঁকে টুম্পা। — নিজস্ব চিত্র।
‘টুম্পা অটোওয়ালি’র ফ্লোরে সেই বন্ধুত্বেরই খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন। শটের ফাঁকে তখন তাঁরা ব্যস্ত জীবনবোধ নিয়ে কথা বলতে, তাঁর ফাঁকেই আড্ডা জমল। নতুন প্রজন্মের অভিনেতা তাঁরা, কিন্তু ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ারের হিসাব নাকি মোটে তাঁদের মাথায় ঢোকে না। অথচ বর্তমানে এই ইন্ডাস্ট্রিই চলছে এই সমীকরণের উপর নির্ভর করে। সায়নের কথায়, “আমার তো সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও অ্যাকাউন্টই ছিল না। এই জগতে আসার পর এখানে সবাই বলাতে তার পর এখন ইনস্টাগ্রামে প্রোফাইল আছে।” অন্য দিকে, সায়নের মতো অনিরুদ্ধরও একই অবস্থা। সায়নের এটাই প্রথম কাজ। তবে অনিরুদ্ধ আগে বেশ কিছু কাজ করেছেন। সিরিজ়ে অভিনয় করেছেন। তবে তাঁর কথায়, “আসলে সিরিয়াল করলে পকেটের জোর বাড়ে। সিরিজ়, সিনেমাতে সবাই অভিনয় করতে চায়। কিন্তু রোজগারও তো দরকার।”
এক মেকআপ ঘর ভাগ করতে করতে নিজেদের মধ্যে নানা রকমের মিল খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। পর্দায় সায়নের দাদার চরিত্রে অভিনয় করছেন অনিরুদ্ধ। পরিবারের টাকা চুরি করে তিনি অনেক দিন হল কোথাও চলে গিয়েছিলেন, আবার ফিরে এসেছেন এখন। গল্প গড়িয়েছে এই খাতে। সায়নের কথায়, “এই সিরিয়ালটা হয়তো এক দিন শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু অনিরুদ্ধর মতো বন্ধুকে ভুলব না। আমরা একসঙ্গে যেমন তাত্ত্বিক কথা আলোচনা করি, তেমনই আবার নিজেদের মধ্যে পরনিন্দা- পরচর্চাও করি।” গল্প করতে করতেই শট দেওয়ার ডাক পড়ল পর্দার অর্কের। সায়ন নিজের কথা বলে চললেন।
ভবানীপুরের যৌথ পরিবারের ছেলে সায়ন। মা-বাবা, ঠাকুমা, কাকা-কাকিমা—সবাইকে নিয়ে তাঁর পরিবার। মুম্বইয়ের ভাল চাকরি ছেড়ে কলকাতায় অভিনয় করার ইচ্ছা অবশ্য প্রথমে মা-কেই জানিয়েছিলেন তিনি। ‘টুম্পা অটোওয়ালি’র সেটে যে এতগুলো নতুন সম্পর্ক তৈরি হয়ে যাবে তা সায়ন নিজেই বুঝতে পারেননি। তবে টুম্পার সঙ্গে রোম্যান্স করার প্রশিক্ষণ কিন্তু তিনি পেয়েছেন তাঁর প্রেমিকার থেকে। হাসতে হাসতে সায়ন বললেন, “আমার বান্ধবী আমেরিকায় থাকে। আমিও তো বিদেশেই থাকব ভেবেছিলাম। কিন্তু হয়ে গেলাম অভিনেতা। ও আমেরিকা থেকে আমায় বিভিন্ন ভিডিয়ো পাঠায়। শেখায় কেমন ভাবে নায়িকার সঙ্গে রোম্যান্স করব। আর হয়তো এই পেশাকে আমি ছাড়তে পারব না। কিছু পরিকল্পনা নেই। কিন্তু আমি অভিনয়ই করব পাক্কা।”