নুসরত
প্র: বিতর্ক আর নুসরত, শব্দ দুটো সমার্থক হয়ে গিয়েছে...
উ: সকলে চিরকাল আমাকে জাজ করে এসেছে। কিন্তু প্রত্যেক বার আমি তো ট্রায়ালের মুখে দাঁড়াতে পারব না। আসামি তো নই রে বাবা!
প্র: নিখিল ও আপনার আলাদা থাকা এবং যশ দাশগুপ্তের সঙ্গে বন্ধুত্ব নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। আপনাদের ইনস্টাগ্রাম পোস্ট সেই বিতর্কে আরও ইন্ধন জোগাচ্ছে...
উ: কার সঙ্গে থাকব, কার সঙ্গে ছবি পোস্ট করব ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে, সেটা একান্তই আমার সিদ্ধান্ত। সেটা তো সকলের সামনেই রয়েছে। আর সোশ্যাল মিডিয়া তো জীবন নয়।
প্র: বছরশেষে আপনার ও যশের বেড়াতে যাওয়ার ছবি ছিল সোশ্যাল মিডিয়ার অন্যতম চর্চিত বিষয়...
উ: আমি রাজস্থানে গিয়েছিলাম। ইন্ডাস্ট্রির বেশ কয়েকজন আমার সঙ্গে অজমের গিয়েছিল। যাদের অজমের যাওয়ার ইচ্ছে থাকে, আমাকে বলে, আমি নিয়ে যাই।
প্র: সামনে নির্বাচন। এই বিতর্ক আপনার পাবলিক ইমেজের ক্ষতি করবে না?
উ: ইলেকশন হ্যাজ নাথিং টু ডু উইথ ইনস্টাগ্রাম পোস্টস। কে কার সঙ্গে থাকছে বা ছবি পোস্ট করছে— সেটা দিয়ে ভোটের স্ট্র্যাটেজি নির্ধারিত হতে পারে না। আমি যখন প্রথম বার নির্বাচনে লড়েছিলাম, তখন কিন্তু আমার বিয়ে হয়নি। তখনও কিন্তু মানুষ আমায় ভোট দিয়েছিলেন, ব্যক্তিগত জীবনে কী করছি না করছি, সেটা না দেখেই।
প্র: নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য ছবির কাজ কি আপাতত সাইডলাইনে?
উ: হ্যাঁ, সামনের ক’টা মাস শুধু নির্বাচনেই ফোকাস করতে চাই। ‘ডিকশনারি’র মুক্তির পরে ‘স্বস্তিক সংকেত’ রয়েছে, যার ডাবিং শেষ করেছি। ওটিটি-রও কিছু প্রস্তাব এসেছে, কিন্তু কোনও বড় প্ল্যাটফর্ম ছাড়া আমি করতে রাজি নই। আর ওটিটি-তে কাজ করতে গেলে অনেক ইনহিবিশন ফ্রি থাকতে হয়। আর এই মুহূর্তে আমি সে জায়গায় দাঁড়িয়ে নেই। কমফর্টেবলও নই।
প্র: আগামী ছবির মুক্তির দিন এগিয়ে আসছে। ব্রাত্য বসু পরিচালিত ‘ডিকশনারি’তে কতটা আলাদা নুসরতকে দেখতে পাবেন দর্শক?
উ: শুটিং শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ব্রাত্যদা আমাকে বলেছিলেন, ‘‘ডাবিংয়ে এসে দেখো, তুমি কী করেছ।’’ আর সত্যিই ডাবিং করতে গিয়ে আমি স্ক্রিনে যাকে দেখেছি, সে কোনও দিক থেকেই নুসরত নয়। স্মিতা সান্যালের মতো একটা চরিত্র যে আমি করতে পারি, সেটা নিজেই জানতাম না। ১২ ফেব্রুয়ারি সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে ‘ডিকশনারি’। ছবি হলে মুক্তি পেলেই ভাল লাগে। তার উপর ১০০ শতাংশ আসন যদি ভর্তি হয়ে যায়, তার চেয়ে ভাল আর কী হতে পারে!
প্র: পরিচালকের কাছ থেকে কী শিখলেন?
উ: আমি তো কোনও দিন অভিনয়ের ওয়র্কশপ করিনি, ছবি করতে করতেই যেটুকু শিখেছি। ব্রাত্যদার নাটক পরিচালনার গল্প এত দিন শুনেছিলাম। সেই মানুষটা ছবি তৈরির ব্যাপারেও যে এতটা প্যাশনেট, ভাবা যায় না। অনেক দিন পরে ফিল্মমেকিংয়ে ফিরলেন উনি। আর আমি এখন এমন ধরনের চরিত্রই বেছে নিচ্ছি, যেগুলো আগে কখনও করিনি। স্মিতার চরিত্রটা করতে গিয়ে ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলাম, ছবিটা থেকে বেরোতেও সময় লেগেছিল। স্বামী-সন্তান নিয়ে ঘর করা এক মফস্সলের মেয়ে কী করে নিজের জীবনে ‘স্বামী’ শব্দটার মানে খুঁজে পাবে, সেটা নিয়েই ছবি।
প্র: সদ্য পেরিয়ে গেল আপনার জন্মদিন। নিখিল কোনও উপহার দিয়েছেন?
উ: নিখিল উইশ করেছে। আর আমি উপহারে বিশ্বাস করি না। জন্মদিনে সকলকে এটাই বলি যে, আমার গিফট চাই না। নিজেকে যে গিফটটা দিই, সেটাই একমাত্র উপহার।
প্র: আমপান ও কোভিড পরিস্থিতিতে নিজের কেন্দ্রে গিয়ে আপনি কিছু কাজ করেছিলেন। তার জন্য সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল...
উ: নুসরত নিজের কেন্দ্রে যায় না, কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেওয়ার জন্য কাজ করে... এ সব বলার জন্য সব সময়েই এক দল লোক থাকবে। আমি সৎ ভাবে নিজের কাজটুকু করে যেতে চাই। অভিনেত্রী হিসেবে মানুষকে বিনোদন জোগানো আমার কাজ, সাংসদ হিসেবে মানুষের জন্য কাজ করাটাও আমার দায়িত্ব। এই দুটো বিষয় দিয়েই যেন আমাকে বিচার করা হয়।
প্র: নির্বাচনের আগে শাসকদল থেকে একের পর এক নেতার পদত্যাগ, কেন্দ্রের কড়া স্ট্র্যাটেজি— এ সবের মাঝে এক সাংসদকে ঘিরে বিতর্ক কি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে লড়াইয়ে?
উ: অনেক লোক রাতারাতি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। তবে বাইরে থেকে নেতা এনে, বিজনেস স্ট্র্যাটেজি সাজিয়ে, টাকা দিয়ে মানুষের আন্তরিকতা কিনতে পারবে না বিজেপি। বাংলার মানুষ বাইরের লোক চায় না। আর আমার ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে রাজনৈতিক কাজকর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। দল বিশ্বাস করে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি কতটুকু কাজ করেছি, সেটা দিয়েই বিচার করা হোক। কই, দল তো এ নিয়ে আমায় কোনও প্রশ্ন করেনি? এ রাজ্যের মানুষ একজনের মুখ দেখেই ভোট দেন। এর সঙ্গে আমি কোথায়, কার সঙ্গে বেড়াতে গেলাম— তার কোনও সম্পর্ক থাকতে পারে না।