আনন্দবাজারের দফতরে ভিকি
অনুরাগীদের সেলফির আবদার একপ্রস্ত মিটিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার অফিসের কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করলেন ভিকি কৌশল। সঙ্গে তাঁর নতুন ছবি ‘ভূত - পার্ট ওয়ান: দ্য হন্টেড শিপ’-এর পরিচালক ভানু প্রতাপ সিংহ। টেবিলে এলাহি লাঞ্চের আয়োজন। খাওয়ার ফাঁকে কথাবার্তা শুরু করলেন জ়েন ওয়াই হার্টথ্রব।
প্র: কলকাতায় এসেই আগে নলেন গুড়ের আইসক্রিম খেলেন?
ভিকি: নলেন গুড় ছাড়া কলকাতার কাঠি রোলও খেয়েছি। আমার খুব পছন্দের ডিজ়ার্ট নলেন গুড়। বম্বেতেও একটি বাঙালি রেস্তরাঁ থেকে প্রায়ই নলেন গুড়ের আইসক্রিম খাই। কাল রাতে আইসক্রিম খেয়ে ভাল ঘুম হয়েছে। ভাল স্বপ্ন দেখেছি (মুচকি হাসি)।
প্র: কলকাতায় কি প্রথম বার এলেন?
ভিকি: এই নিয়ে তিন বার। প্রথম বার এসেছিলাম ‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’-এর অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে। একটামাত্র শটের জন্য। সকালে এসে বিকেলেই ফিরে গিয়েছিলাম। দ্বিতীয় বার এসেছিলাম ‘মাসান’-এর প্রচারে। তখন কলকাতায় বর্ষার মরসুম। বৃষ্টিভেজা ট্রাম, বাড়ি, রাস্তাঘাট এত সুন্দর দেখতে লাগছিল, ঠিক করেছিলাম কলকাতায় একটা ছবি করবই। যদি আমাকে কেউ তেমন ছবির অফার দেন, স্ক্রিপ্ট না পড়েই ‘হ্যাঁ’ বলে দেব (হাসি)।
(কথাবার্তার মাঝেই কেক চলে এল ভিকির জন্য। পরিচালকের সঙ্গে কেক কাটলেন অভিনেতা। তবে খেলেন শুধু কেকের উপরে সাজানো একটি ফলের কুচি)।
প্র: ভূতে বিশ্বাস করেন?
ভিকি: আমার এক বন্ধু একটা গল্প শুনিয়েছিল। সেটায় কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ছিল। তা বিশ্বাস করেছিলাম। এমনিতে আমাদের এত ট্রাভেল করতে হয়... হেরিটেজ হোটেল বা হিল স্টেশন, যেখানে খুব বড় বড় জানালা, রাতে হয়তো জোরে হাওয়া দিচ্ছে... আমি তখন ঘরের লাইট জ্বালিয়ে ঘুমাই। হয়তো সেখানে কিছুই নেই। সবটা আমার কল্পনায়। কিন্তু কিছু জায়গায় গিয়ে আমার সত্যিই অস্বস্তি হয়েছে।
পরিচালকের সঙ্গে কেক কাটলেন ভিকি
ভানু: আমি নিজের ছায়া দেখেই ভয় পেয়ে যাই (জোরে হাসি)। তবে আমার দেশের বাড়িতে ঠাকুরদা-ঠাকুরমা থাকেন। তাঁদের কাছ থেকে অনেক রকমের অলৌকিক গল্প শুনেছি। বিভিন্ন ধরনের এনার্জিতে আমার বিশ্বাস রয়েছে।
প্র: ভট্ট ক্যাম্প আর রামগোপাল বর্মার ভূত নিয়ে একাধিক ছবির পরেও কর্ণ জোহরকে কী ভাবে এই ছবির জন্য রাজি করালেন?
ভিকি: ভূতের ভাইরাস ধর্মাতেও (কর্ণের প্রোডাকশন হাউস) ঢুকে পড়েছে (হাসি)।
ভানু: শশাঙ্ক খৈতানের ‘হাম্পটি শর্মা কী দুলহনিয়া’য় আমি অ্যাসিস্ট করেছিলাম। রোম্যান্টিক কমেডি দিয়ে ডেবিউ করব ভেবেছিলাম। ‘ভূত’-এর আইডিয়া প্রথমে শশাঙ্ককে বলেছিলাম। ও বলেছিল, হয় কর্ণ আমাদের তাড়িয়ে দেবে, নয় স্ক্রিপ্ট লিখতে বলবে। থ্যাঙ্ক গড! আমাদের স্ক্রিপ্ট কর্ণের পছন্দ হয়। মিটিংয়ের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ও আমাকে ‘হ্যাঁ’ বলে দেয়। হররের চেয়েও গল্প বলার ধরনটা ওর বেশি ভাল লেগেছিল। ছবির নাম কর্ণেরই দেওয়া। ভাবছিলাম, নামের স্বত্বের ব্যাপারে রামগোপাল বর্মাকে ফোন করব কি না। কিন্তু কর্ণ ওঁকে ফোন করার পরে উনি খুব ভাল ভাবে কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, ছবির নাম নিয়ে ওঁর কোনও আপত্তি নেই।
প্র: ছবিতে ভূত কি ভূমি? উনি প্রচারে নেই কেন?
ভানু: ভূমির (পেডনেকর) অন্য ছবির শুট চলছে। তবে ছবিতে ও ভূত নয়। তাই আমাকে প্রচারে রাখা হয়েছে। জানি, তাতে বেশির ভাগ লোকই খুশি হয়নি (জোরে হাসি)।
ভিকি: (ভানুর দিকে তাকিয়ে) এ-ই আমার সুন্দরী ভূমি!
প্র: ‘ভূত’-এর সঙ্গেই মুক্তি পাচ্ছে আয়ুষ্মান খুরানার ‘শুভ মঙ্গল জ়াদা সাবধান’। বাড়তি চাপ অনুভব করছেন?
ভিকি: বলিউড এত বড় ইন্ডাস্ট্রি যে, দুটো ছবি একসঙ্গে রিলিজ় করবে, সেটাই স্বাভাবিক। এর আগে ‘ভূত’ আর ‘বালা’র রিলিজ় ডেট একই ছিল। ভিএফএক্সের কাজ বাকি ছিল বলে মুক্তি পিছিয়ে যায়। তবে ইদানীং আয়ুষ্মান আর আমার ভাগ্য বোধহয় এক সুতোয় বাঁধা রয়েছে। ‘কফি উইথ কর্ণ’-এ একসঙ্গে গিয়েছিলাম। তার পরে অ্যাওয়ার্ড শো হোস্ট করেছি, দু’জনে জাতীয় পুরস্কারও পেলাম। এ বার একসঙ্গে ছবি মুক্তি পাচ্ছে। তবে এই দু’টি ছবির জঁর একেবারে আলাদা। অভিনেতা হিসেবে আয়ুষ্মানকে খুবই পছন্দ করি। অল দ্য বেস্ট টু হিম।
প্র: ক্যাটরিনা কাইফকে ডেট করছেন?
ভিকি: এই প্রশ্নটাতেই আমি সবচেয়ে বেশি ভয় পাই (হাসি)। প্রশ্নটা এমনিতে খুব সহজ। উত্তরটাও খুব সোজা। কিন্তু উত্তর দেওয়ার পরে আর কিছুই সহজ থাকবে না (হাসি)!
ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
ফুড পার্টনার: দ্য মেলবোর্ন কাফে