সুশান্ত সিংহ রাজপুত।
সুশান্তের মৃত্যুর পর তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার অভিযোগ জানিয়েছিলেন অভিনেতার বাবা কেকে সিংহ। আর্থিক তছরূপের দিকটি খতিয়ে দেখতে গিয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) তদন্তে প্রয়াত অভিনেতার সঙ্গে এক প্রযোজকের আর্থিক লেনদেনের দিকটি উঠে আসে। জানা যায়, প্রায় ১৭ কোটি টাকা একজন প্রযোজক সুশান্তকে তাঁর অতীতের একটি ছবির পারিশ্রমিক হিসাবে দিয়েছিলেন যা অভিনেতার অ্যাকাউন্টে পাওয়া যাচ্ছে না।
তদন্ত থেকে উঠে আসছে, ২০১৭ সালে ‘রাবতা’ ছবির জন্য পারিশ্রমিক হিসাবে এই অর্থ পেয়েছিলেন সুশান্ত। সেই ছবির প্রযোজক দীনেশ বিজনকে ইতিমধ্যেই ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সুশান্তের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের নথিও পেশ করতে বলা হয় তাঁকে। যদিও ইডির সামনে তিনি কয়েকটি নথি পেশ করলেও হাঙ্গেরিতে ছবির শ্যুটের জন্য যে বাজেট তৈরি করে অর্থব্যয় করা হয়, সেই সম্পর্কিত কোনও নথি প্রমাণ পেশ করতে পারেননি তিনি।
কোনও নথি প্রমাণ পেশ না করতে পারায় গত ১৪ অক্টোবর দীনেশ বিজনের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। সেখান থেকেই বুদাপেস্তের হাঙ্গেরিতে শ্যুটিং-এর বাজেট এবং খরচ সম্পর্কিত নথি উদ্ধার করে তারা। সেই নথি থেকে জানা যায়, ছবির জন্য মোট বাজেট ছিল ৫০ কোটি টাকা। সেই টাকা থেকে ১৭ কোটি টাকা সুশান্তকে পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়ার কথাও উল্লেখ করা ছিল সেখানে।
আরও খবর: উন্মুক্ত অনুষ্ঠানের লাইভ স্ট্রিমিংয়েই ঘুড়ে দাঁড়ানো সম্ভব, বলছেন কৌশিকী
বর্তমানে দীনেশ দুবাইতে রয়েছেন। ইডি ফের তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠালে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণ দেখিয়ে ভারতে আসেননি তিনি। এ ছাড়াও সুশান্তের বিজনেস ম্যানেজার শ্রুতি মোদী এবং উদয় সিংহ গৌরীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। তাঁরা 'কর্ণার স্টোন এলএলপি' নামক এক ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা চালান।
আরও পড়ুন: ‘কহো না..’-এ হৃতিকের সঙ্গে কাজ শুরু করলেও অভিষেকের বিপরীতে ডেবিউ করেন করিনা, কেন জানেন
সুশান্তের বাবা অভিযোগ করেছিলেন অভিনেতার প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী তাঁর ১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সালে ‘রাবতা’ ছবিতে কাজ করেন। সেই সময় রিয়ার সঙ্গে অভিনেতার পরিচয় ছিল না। তাঁদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ২০১৮ সালে। অন্যদিকে একাধিক বার জিজ্ঞাসাবাদের পরেও কী ভাবে টাকা দেওয়া হয়েছিল, এতগুলো টাকা দেওয়া হলেও সেগুলি কোথায় গেল ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর দীনেশ দিতে না পারায় রহস্য আরও গভীর হচ্ছে।
রাবতা ছবির প্রযোজনা সংস্থা থেকে জানানো হয়েছে, হাঙ্গেরিতে সুশান্তের সঙ্গে তাঁদের কোনও আর্থিক লেনদেন হয়নি। অভিনেতাকে ভারতেই তাঁর পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। তারা জানান, সুশান্তকে পারিশ্রমিক মিটিয়ে দেওয়ার যাবতীয় নথিও তারা পেশ করেছেন। হাঙ্গেরিতে শ্যুটিং-এর সমস্ত খরচা এবং আর্থিক লেনদেন অন্য একটি সংস্থা সামলেছে।
তারা আরও জানান, “ভারতে আসার সময় করোনাবিধি মেনে কোভিড পরীক্ষা করানোর সময় দীনেশ বিজনের করোনা ধরা পড়ে। যার ফলে তিনি আসতে পারেননি। বর্তমানে তিনি সুস্থ হচ্ছেন। সেরে উঠলেই তিনি ভারতে আসবেন এবং তদন্তে পূর্ণ সহায়তা করবেন।’’