টিম হরি ঘোষের গোয়াল। ছবি: কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়।
সাল ১৯৯৫। দুপুর সাড়ে ১২টা বাজলেই অন্দরমহলে অঘোষিত বিরতি। সৌজন্যে ডিডি বাংলার ধারাবাহিক ‘জননী’। এক বছর জনপ্রিয়তা ধরে রেখে ২৬০ পর্বে শেষ হয় সুপ্রিয়া চৌধুরী অভিনীত এই মেগা ধারাবাহিক। আর ছিল ‘বিবাহ অভিযান’, ‘চিচিং ফাঁক’, ‘রঙ্গব্যঙ্গ’, বাচ্চাদের জন্য ‘ছুটি ছুটি’র মতো ‘কমেডি’ শো। একটা সময়ের পরে সেই সোনালি দিন অতীত হয়ে যায়। টানা ২০ বছর কোনও ধারাবাহিক, কোনও বিশেষ শো দেখানো হয়নি ডিডি বাংলার পর্দায়। ২০১৭-য় প্রথম উপবাস ভাঙেন পরিচালক কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, তাঁর ‘কমেডি’ ধারাবাহিক ‘ভজহররি ধাবা’-এর হাত ধরে। করোনা অতিমারির কারণে সেটি বন্ধ হওয়ার পরে গত চার বছর ধরে ফের অচলাবস্থা। এ বারেও কাণ্ডারি কৃষ্ণেন্দু। সৌজন্যে তাঁর দ্বিতীয় নিবেদন ‘হরি ঘোষের গোয়াল’।
চলতি মাসেই মুক্তি পাচ্ছে কৃষ্ণেন্দুর বড় ছবি ‘যমালয়ে জীবন্ত ভানু।’ আনন্দবাজার অনলাইনকে পরিচালক জানিয়েছেন, উত্তর কলকাতার আড্ডা, রসিকতা, কেতাদুরস্ত জীবনযাপন ধরা থাকবে এই ধারাবাহিকে। দেখানো হবে প্রতি শনি-রবিবার। একটি মাসে আটটি পর্বে থাকবে একটি করে নতুন গল্প। অর্থাৎ, আবারও লম্বা সফর। তাঁর কথায়, “অনেকগুলো বছর পরে দূরদর্শনে সেট পড়েছে। উঠে এসেছে এক টুকরো উত্তর কলকাতা। মেস বাড়ি, কলতলা, রাস্তা, রোয়াক, বনেদি বাড়ি, ল্যাম্পপোস্ট, গলি— সব। কাজ করতে গিয়ে কত কথা মনে পড়ছে।” যদিও নাটকের আকারে তৈরি মেগার পরিচালক নন, কৃষ্ণেন্দু কাহিনিকার-নির্দেশক। পরিচালনায় দূরদর্শন বা ডিডি বাংলার পরিচালক নন্দিনী চট্টোপাধ্যায়।
ধারাবাহিকে কারা অভিনয় করছেন? জমিদারের ভূমিকায় দেখা যাবে বিশ্বনাথ বসুকে। আর থাকছেন মৌমিতা পণ্ডিত, অপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়, সাহেব মাজি, তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। অতিথি চরিত্রে দেখা যাবে তুলিকা বসু, রোহিত মুখোপাধ্যায়, দেবলীনা দত্ত, শুভ্রজিৎ দত্তকে। পরিচালক বলেছেন, “কাল্পনিক এক জমিদার হরিপ্রসন্ন ঘোষের নাম অনুযায়ী একটি পাড়া হরি ঘোষ লেন। জমিদারি পড়ন্ত কিন্তু ঠাটবাটের অভাব নেই। পাড়ার সকলের থেকে ধার করে দিন চালায় বনেদি পরিবার।” এই গলিতে টগরের চায়ের দোকান রমরমিয়ে চলে। সেই পটভূমিকায় প্রত্যেক সপ্তাহে জমিদারের একজন করে আত্মীয় আসবেন। সপ্তাহে দুটো পর্বের মেয়াদ যথাক্রমে ২২ মিনিট করে।
গত দু’বছর ধরে দূরদর্শনের সঙ্গে ধারাবাহিক নিয়ে আলোচনা করেছেন কৃষ্ণেন্দু। চলতি বছর পুজোর আগে বিষয়টি বাস্তবায়িত হয়। ইতিমধ্যেই ১০টি পর্বের শুটিং হয়ে গিয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরে ডিডি বাংলায় ফের দর্শকের ঢল, ধারাবাহিক ‘হরি ঘোষের গোয়াল’-এর টানে।