এক সুতোয় গেঁথে গেলেন বিদিশা-পল্লবী?
মডেল বিদিশা দে মজুমদারের রহস্যমৃত্যুতে তাঁর নিকটজনেদের মুখে বারবার উঠে আসছে একটাই নাম, অনুভব বেরা। মেদিনীপুরের বাসিন্দা শরীরচর্চার এই প্রশিক্ষককেই নাকি চোখে হারাতেন ওই তরুণী। তাঁর সঙ্গে থাকতে চেয়ে মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়াও করতেন। রাগের মাথায় নৈহাটির বাড়ি ছেড়েছিলেন মাঝরাতে। তখন থেকেই কলকাতার বাসিন্দা আধা মফস্সলের মেয়েটি। প্রথমে দুই বন্ধুর বাড়িতে অস্থায়ী ঠিকানা। তার পর নাগেরবাজারের রামগড় কলোনিতে ভাড়া বাড়িতে মাথা গোঁজার ঠাঁই। নাম গোপন রাখার শর্তে এ কথা আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন মৃতার ঘনিষ্ঠতম বন্ধু।
কিন্তু এত করেও নাকি কোনও দিনই প্রেমিকের মন পাননি বিদিশা। পুরোটাই ছিল তাঁর একতরফা প্রেম। এটা তাঁর বন্ধুরা বুঝতেন। বিদিশা নাকি বুঝেও বুঝতে চাইতেন না। সারা ক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকতেন, প্রেমিক তাঁকে ছেড়ে চলে যাবেন না তো! অকালপ্রয়াত মডেলের বন্ধুর দাবি, মৃত্যুর কয়েক দিন আগেও ফোনে ভেঙে পড়েছিলেন বিদিশা। হাহাকার করে বলেছিলেন, ‘‘ও শেষ পর্যন্ত আমার হবে তো? ওকে আমি আমার করে পাব তো?’’
এই ঘটনা এক দিনের নয়, শেষের দিকে প্রায়ই নাকি ফোনে বন্ধুদের কাছে কাঁদতেন। তাঁরা বোঝাতেন তাঁকে। সম্পর্ক ভেঙে বেরিয়ে আসার পরামর্শও দিতেন। কারণ, বন্ধুদের দাবি— অনুভব নাকি আরও নারীসঙ্গে লিপ্ত ছিলেন। এ কথা বিদিশাও জানতেন। তবু তিনি আকর্ষণ এড়াতে পারতেন না। বিদিশার মৃত্যুর খবরে তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘এই লোকটার জন্য বিদিশা মা-বাবাকে ভুল বুঝেছিল। অভিমান করে বলত, আমায় ও ভালবাসে না। জীবন পর্যন্ত দিয়ে দিল। এ দিকে, বিদিশার মৃত্যুর খবর পেয়ে সেই মানুষের প্রতিক্রিয়া, ঘটনাটা কি আদৌ সত্যি?’’
পল্লবী দে আর বিদিশা দে মজুমদার যেন মুদ্রার এ পিঠ-ও পিঠ। দু’জনেই প্রেমিক অন্তপ্রাণ। দু’জনেই গ্ল্যামার দুনিয়ার বাসিন্দা। দু’জনেই শহরতলির মেয়ে। পেশা এবং প্রেমের টানে ঘর ছেড়েছিলেন দু’জনেই। দুই মেয়ের পরিবার প্রেমিকের কথা জানতেন। কতটা ঘনিষ্ঠতা? টেরই নাকি পাননি! পল্লবী-বিদিশা ছিলেন একে অপরের বন্ধুও। অত্যন্ত পেশাদার। দু’জনেরই তুমুল ঝগড়া প্রেমিকের সঙ্গে। আবার সেই প্রেমিক ভালবেসে দু-চারটে ভাল কথা বললেই তাঁরা গলে জল! তার পরেও দু’জনেই শেষ পর্যন্ত কেবল ‘প্রেম পেলেন না’, এই অভিমানে কত অনায়াসে ফুরিয়ে গেলেন! নিয়তিও যেন একই সুতোয় মিলিয়ে দিয়ে গেল দুই বন্ধুকে!