তথাগতকে নিয়ে লিখলেন দেবলীনা। ছবি: সংগৃহীত।
সম্প্রতি আমার আর তথাগতের একসঙ্গে শিলিগুড়ি যাওয়াকে কেন্দ্র করে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। আমাদের সম্পর্ক জোড়া লেগেছে কি না, আমরা একসঙ্গে কেন? ইত্যাদি ইত্যাদি। বিষয়টি ঘিরে যাতে নতুন করে অন্য কথার সূত্রপাত না হয় তাই লিখে জানানোর সিদ্ধান্ত নিলাম।
আমার আর তথাগতের কী হল, কেন একসঙ্গে? এই নিয়ে সকলের আলোচনা। কিন্তু আমরা কেন শিলিগুড়ি গিয়েছিলাম সেটা কেউ জানতে চায়নি। শিলিগুড়ির একজন সাদামাঠা গৃহবধূ কাকলি পাল। নয় বছরের মেয়েকে নিয়ে একা পরিবারের সঙ্গে লড়েছেন। শিলিগুড়িতে একা হতে কী চমৎকার ফ্যাশন শোয়ের অনুষ্ঠান করছেন। তাঁর পাশে দাঁড়াতে আমি গত বছরেও শিলিগুড়ি গিয়েছিলাম। এ বছর একজন পেশাদার অভিনেতা হিসেবে তথাগতকেও কাকলি ডেকেছিলেন। আর কিছু কিছু বিষয়ে আমি আর তথাগত সমমনস্ক। ঠিক যে রকম পশু উদ্ধারে আমরা একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ি অথবা সিনেমার ক্ষেত্রেও তাই।র
শিলিগুড়ির অনুষ্ঠানে মঞ্চে একসঙ্গে তথাগত-দেবলীনা। ছবি: সংগৃহীত।
কাকলি যখন তথাগতকে পুরো বিষয়টি জানান, তথাগত পাশে দাঁড়ানোর মানসিকতা থেকেই তো এই সিদ্ধান্ত নেয়। স্বামী ও সংসার থেকে কোনও রকম সহযোগিতা পান না কাকলি। মেয়েই তাঁর একমাত্র অনুপ্রেরণা। হ্যাঁ, একসঙ্গে গিয়েছি আমরা। কাজ নিয়ে তো কখনও বলিনি যে, আমরা একসঙ্গে কাজ করব না! কোন উদ্দেশ্য নিয়ে আমি আর তথাগত শিলিগুড়ি গেলাম সে দিকে কেউ নজর দিল না। পেশাগত কারণেই আমাদের যাওয়া। পারিশ্রমিকের বিনিময়ে গিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু কাকলির পাশে দাঁড়ানোর ভাবনা থেকেই আমাদের এই পদক্ষেপ।
স্থানীয় বাচ্চারা যারা মডেলিং ও অভিনয় শিখতে চায় তাদের প্রশিক্ষণ দেন কাকলি। গত বছর সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপট ছিল শ্যামা। প্রত্যেকেই শ্যামার সাজে এসেছিল। এই ভাবনাটাই তো আলাদা। বাচ্চাদের মায়েদেরও র্যাম্প ওয়াকের অনুপ্রেরণা দিয়েছেন তিনি।
ভোর সাড়ে ৬টা নাগাদ তথাগতকে আর আমাকে হোটেল থেকে নিতে এসেছিলেন তিনি। তার আগের দিন ভোর চারটে পর্যন্ত জেগেছিলেন। মেয়েক নিয়েই হোটেলে এসেছিলেন কারণ মেয়েকে দেখার কেউ নেই। দেখলাম গাড়িতে এলিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে মেয়ে। কাউকে না পাঠিয়ে নিজে এসেছিলেন। আমাকে আর তথাগতকে হোটেল থেকে তুলে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন তিনি।
তবে একটা কথা পাঠকদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই, শিলিগুড়ির সফরে আমার চেনা তথাগতকেই দেখলাম। তথাগত যখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলল, “কাকলি পালের মতো মহিলারা অন্যান্য গৃহবধূদের উদ্বুদ্ধ করছেন। যাতে তাঁরা নিজেদের পরিচিতি তৈরি করতে পারেন।” আমি ভাবলাম এই তথাগতকেই তো আমি বহু বছর চিনি। আমরা যখন গাড়িতে একসঙ্গে বিমানবন্দরে যাচ্ছিলাম তথাগত কাকলিকে নানা কার্যকরী পরামর্শ দিচ্ছিল। ভবিষ্যতে কী ভাবে কাজ করলে সুবিধা হবে ইত্যাদি। আজীবন এই তথাগতকেই দেখে এসেছি আমি।