Verdict

Humayun Azad: ১৮ বছর পরে বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

ব‌ইমেলা থেকে ফেরার পথে হামলা। ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত হন বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক। ১২ আগস্ট প্রয়াত হন হুমায়ুন আজাদ। সেই ঘটনার ১৮ বছর পর সম্পন্ন হল বিচার প্রক্রিয়া। বুধবার, ১৩ এপ্রিল ২০২২ ঘোষিত হল চার অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২২ ১৭:১০
Share:

ঘোষিত হল হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় রায়।

২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। ব‌ইমেলা থেকে ফেরার পথে হামলা। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তিনি রক্তাক্ত, ভূপতিত। তার পর বাংলাদেশে, ব্যাংককে, জার্মানিতে দীর্ঘ চিকিৎসা। সব বিফল হয়। ১২ আগস্ট তিনি মারা যান। সেই ঘটনার ১৮ বছর পর সম্পন্ন হল বিচার প্রক্রিয়া। বুধবার, ১৩ এপ্রিল ২০২২ ঘোষিত হল চার অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড।

তিনি বাংলাদেশের প্রখ্যাত কবি, সাহিত্যিক, ভাষাবিজ্ঞানী, প্রথাবিরোধী চিন্তক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ূন আজাদ। 'বাংলা ভাষা' কবিতায় তাঁর অসাধারণ উচ্চারণ বাঙালি কোন‌ও দিন ভুলতে পারবে না---
"তোমার দীর্ঘশ্বাসের নাম চণ্ডীদাস
শতাব্দী কাঁপানো উল্লাসের নাম মধুসূদন
তোমার থরোথরো প্রেমের নাম রবীন্দ্রনাথ
বিজন অশ্রুবিন্দুর নাম জীবনানন্দ
তোমার বিদ্রোহের নাম নজরুল ইসলাম…"

Advertisement

ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন তিনি। যুক্তি ও বিজ্ঞানের আলোয় মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে চেয়েছেন। বাংলাদেশে তাঁর ব‌ই বিতর্কিত হয়েছে। নিষিদ্ধ হয়েছে। তাঁর নারীবাদী গ্রন্থ 'নারী' বাংলাদেশে বিতর্কিত এবং জনপ্রিয়। কিন্তু তাঁকে উগ্রপন্থীদের হিংসার মুখে পড়তে হয় 'পাক সার জমিন সাদ বাদ' উপন্যাসের জন্য। তাঁকে 'ধর্মত্যাগী' ঘোষণা করে একটি উগ্র সংগঠন। তার পরেই ঘটে সেই নির্মম হামলা।

পরদিন হুমায়ূন আজাদের ছোট ভাই মঞ্জুর কবির হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। কয়েক মাস পরে গুরুতর আহত সাহিত্যিক মারা গেলে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। এ ছাড়া একই ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনেও আর একটি মামলা হয়। ২০০৯ সালের ৬ অক্টোবর এই মামলার বাদী মঞ্জুর কবির মামলাটির বৃহত্তর তদন্তের আবেদন করেন। ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল ওই মামলার তদন্ত শেষে সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১০ সেপ্টেম্বর ওই পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ গঠন করে আদালত। মামলার বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে আদালত ৪১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে এ বছর ২৭ মার্চ আদালত রায়ের জন্য দিন ধার্য করে ১৩ এপ্রিল।

অবশেষে ঘোষিত হয়েছে চার অপরাধীর মৃত্যুদণ্ডের রায়। যদিও হুমায়ূন আজাদের ছোট ভাই ও মামলার বাদী মঞ্জুর কবির মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, “রায় নিয়ে আমার কোনও আগ্রহ নেই। ১৮ বছর পর রায়ের দরকার কী? যিনি নিহত হয়েছেন, তিনি হামলায় আহত হওয়ার পরে যাকে দায়ী করেছিলেন, তাকেই যখন বাদ দেওয়া হল, তার পর তো আর কিছু থাকে না।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement