ক্যান থেকে সরাসরি পানীয় খেলে কী ক্ষতি হবে? ছবি: ফ্রিপিক।
এইচএমপিভি-র পর গিয়ান-ব্যারে সিনড্রোমের আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাংলাতেও। পুণের পর পশ্চিমবঙ্গেও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত আরও কয়েক জন। প্রাপ্তবয়স্কেরা কেবল নয়, এই রোগ হচ্ছে ছোটদেরও। গিয়ান-ব্যারে থেকে বাঁচতে বাইরের খাবার, ঠান্ডা পানীয় খেতে নিষেধই করছেন চিকিৎসকেরা। পনির, চিজ়, বাইরের খাবার, কাঁচা স্যালাড তো বটেই, এমনকি ক্যান থেকে সরাসরি ঠান্ডা পানীয় ও বিয়ার খেতেও নিষেধ করা হচ্ছে।
আমেরিকার ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ জানিয়েছে, ঠান্ডা পানীয় বা বিয়ারের ক্যান থেকে সরাসরি পানীয় খান অনেকেই। এতে নানা রকম ক্ষতি হতে পারে। অনেকেই জানেন না, এই ধরনের ক্যানের মুখে লেপ্টোস্পাইরা নামে এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়া জন্মায় যা লেপ্টোস্পাইরোসিস নামক রোগের কারণ হতে পারে। লেপ্টোস্পাইরোসিস হলে পেটের অসুখ হয়। পেটে যন্ত্রণা, মাথাব্যথা, ডায়েরিয়া, এমনকি খাদ্যনালির সংক্রমণও হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, এই ধরনের ব্যাক্টেরিয়া থেকে শ্বাসযন্ত্রের জটিল রোগ, কিডনির অসুখও হয়েছে।
গিয়ান-ব্যারের জন্য ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর ও নোরোভাইরাসের মতো জীবাণু দায়ী হলেও, আরও নানা রকম ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাস ঘটিত রোগও এর জন্য দায়ী হতে পারে। চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের কথায়, যে কোনও ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস-ঘটিত রোগের পরে গিয়ান-ব্যারের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগ অথবা অন্ত্র বা খাদ্যনালির সংক্রমণ হলে তার থেকেও গিয়ান-ব্যারের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। হাসপাতালে যে শিশু বা কিশোরেরা ভর্তি হয়েছিল, তাদের বেশির ভাগেরই শ্বাসকষ্ট, গলাব্যথা বা গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিসের উপসর্গ ছিল। তাই সাবধান থাকতেই হবে।
বিয়ার বা ঠান্ডা পানীয়ের ক্যানে বিসফেনল এ নামক রাসায়নিকও থাকে, যা শরীরে হরমোনের তারতম্য ঘটাতে পারে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ক্যান থেকে যদি পানীয় খেতেই হয়, তা হলে ক্যানের মুখ ভাল করে টিস্যু পেপারে মুছে নিয়ে স্ট্র দিয়ে খেতে হবে। সবচেয়ে ভাল হয়, ক্যানজাত পানীয় না খেলে। দীর্ঘ সময় ধরে ক্যানবন্দি পানীয়ে নানা রকম সংক্রামক ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়। তাই এই পানীয় ঘন ঘন খেতে থাকলে তার থেকে নানা রকম রোগের সূত্রপাত হতে পারে।