ফাইল চিত্র।
তিনি গেরুয়াতেই আছেন। অনুব্রত মণ্ডলের পরে কি তাঁর নিশানায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
ভুলেও কিন্তু নাম উচ্চারণ করেননি বিরোধী শিবিরের রুদ্রনীল ঘোষ। বদলে একই সুরে, একই ছন্দে ফের কবিতা বেঁধেছেন। যার ছত্রে ছত্রে ‘তিনি’ ব্যক্তিত্বের প্রতি ব্যাজস্তুতি হয়ে প্রশংসার ছলে নিন্দা ঝরেছে! সোমবার বিশ্ববাংলা সম্মেলনে যা যা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী, সে সমস্তই হাতিয়ার অভিনেতা-রাজনীতিবিদের।
কবিতায় কী বলেছেন তিনি? প্রথম থেকে শাণিত ভাষায় আক্রমণ তাঁর। দাবি, ‘‘খবর দেখো না তুমি সব জেনে যাবে, সিরিয়াল দেখো তুমি শান্তি তো পাবে!’’ রাজ্যের ভাল ভাল খবর দেখালে সরকারি অনুদান, বিজ্ঞাপনও যে মিলবে সে কথাও হাসতে হাসতে বলেছেন অভিনেতা। তার পরেই রুদ্রনীলের কটাক্ষ, ‘‘তিনি মানে সব ঠিক তিনি মানে ভাল, তিনি যদি বলে দেন সাদা হয় কালো!’’ মাসে মাসে ভাতা, প্রশাসনের চোখরাঙানি, বুদ্ধিজীবীদের নীরবতা--- কোনও কিছুকেই ব্যঙ্গবাণে বিঁধতে ছাড়েননি তিনি। দাবি, আনিস খান, বগটুই হয়ে হাঁসখালি--- এ ভাবে একের পর এক ঘটনায় মায়েদের কোল খালি হয়ে যাচ্ছে। তবু হুঁশ নেই ‘তিনি’র! বদলে একটাই অনুযোগ, সিবিআই থেকে অঘটন সবই নাকি বিরোধীদের ষড়যন্ত্র। বাংলায় কোনও নৈরাজ্য নেই। যা হচ্ছে সব কোরিয়ায়।
রুদ্রনীলের ‘অনুমাধব’ কবিতার রেশ এখনও কাটেনি। মঙ্গলবারেই নীল ষষ্ঠীর ব্রতকে সামনে রেখে অভিনেতাকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিধায়ক মদন মিত্র। তাঁর কবিতার নাম ‘নীলমাধবের আর্তনাদ’। রুদ্রনীলকে কি আর এ সবে থামেন? আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেতা-রাজনীতিবিদের বক্তব্য, ‘‘আমার কথা যে শাসকদলকে বিঁধছে এ বিষয়ে দ্বিমত নেই। তাই আমাকে থামাতে বাহিনী নামাতে হয়। নির্বাচনে হাতে মারার পাশাপাশি ১৪ মাস ধরে বেকার রেখে ভাতে মারার পথেও হেঁটেছে রাজ্য সরকার। তবু ভাল আমাকে দেখে এখন কবিতা লিখতে শিখছেন সবাই।’’
রুদ্রনীলের আরও দাবি, তিনি কখনও কারওর নাম নেন না। কোনও মিথ্যে বলেন না। কারওর মুখে কোনও কথাও বসান না। তবু ভয়ের চোটে যাঁদের যা বোঝার, মনে করার, গায়ে মাখার মেখে নেন। তিনি এও জানেন, এত ক্ষণে তাঁকে দাবিয়ে রাখতে হয়তো বৈঠক শুরু হয়ে গিয়েছে শাসকদলের অন্দরমহলে। তার পরেও রুদ্রনীল বিশ্বাস করেন, শুধুই রাজনৈতিক বিরোধীতা থেকে নয়, সাধারণের দুরবস্থা দেখে লেখা তাঁর কবিতাগুলো ছুঁয়ে যাবে সমাজের সব স্তরের মানুষকে। ইতিমধ্যেই সেখান থেকে জন্ম নিতে শুরু করেছে প্রতিবাদের ভাষা।