সোনিকা
গাড়ি দুর্ঘটনায় মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যুর ঘটনার তিন বছর পরেও শুরু হল না মামলার বিচার পর্ব। ওই মামলার চার্জ গঠনের শুনানি শেষ হলেও লকডাউনের জেরে আলিপুর আদালত বন্ধ থাকায় বৃহস্পতিবার সেই সংক্রান্ত রায় দান সম্ভব হয়নি। ওই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন।
ওই মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী নবকুমার ঘোষ জানান, কোন ধারায় চার্জ গঠন করে বিচার পর্ব শুরু হবে তা নিয়ে আলিপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক পুষ্পল শতপথীর এজলাসে শুনানি শেষ হয়েছিল। এ দিন তাঁর রায় দান করার কথা ছিল। বিক্রমের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা বলেন, ‘‘আদালত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। আদালত বন্ধ থাকায় ওই মামলার রায় না হওয়ায় চার্জ গঠন পিছিয়ে গেল।’’
তিন বছর আগে ২০১৭-র ২৯ এপ্রিল ভোরে গাড়িতে ফিরছিলেন বিক্রম এবং সোনিকা। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন অভিনেতা নিজেই। তাঁর পাশের আসনে ছিলেন বান্ধবী সোনিকা। প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেগে থাকা ওই গাড়িটি লেক মলের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার মাঝের ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। তাতেই মৃত্যু হয় সোনিকার।
আরও পড়ুন: দোনো মিলে ইস তরহা...
পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল বিক্রমের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগে চার্জশিট দাখিল করে আলিপুর আদালতে। চার্জশিটে বেপরোয়া ভাবে ও মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর ধারাও উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এর পরেই তা চ্যালেঞ্জ করে নিম্ন আদালতে যান বিক্রমের আইনজীবীরা। কিন্তু নিম্ন আদালত ওই মামলা থেকে বিক্রমকে মুক্তি না দেওয়ায় হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন অভিনেতার আইনজীবীরা। অভিযোগ, এর ফলে ওই মামলার চার্জ গঠন বিলম্বিত হচ্ছে। একই সঙ্গে মূল মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
সূত্রের খবর, গত বছরের মাঝামাঝি হাইকোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে নিম্ন আদালতকে দ্রুত কোন ধারায় শুনানি হবে তা ঠিক করতে বলে। এর পরেই আলিপুর আদালতে কোন ধারায় চার্জ গঠন হবে তা নিয়ে উভয় পক্ষের সওয়াল জবাব শুরু হয়। বিশেষ সরকারি আইনজীবী জানান, শুনানিতে তিনি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের ধারা (৩০২) বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যুর ঘটনার (৩০৪) ধারা যুক্ত করে চার্জ গঠনের আবেদন করেছেন। অপর দিকে অভিযুক্তের আইনজীবীরা গাফিলতিতে মৃত্যুর ধারার (৩০৪এ) মতো লঘু ধারায় চার্জ গঠনের আবেদন করেন।
সূত্রের খবর, এ দিন সেই মামলার রায় দানের কথা ছিল। আদালত বন্ধ থাকায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য পিছিয়ে গেল। ফলে অনেক মামলার মতোই ওই মামলার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। আদালত খুললে রায় দানের জন্য ফের নতুন দিন ধার্য হবে বলে আইনজীবীদের একাংশ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আমি আর আমার হুইস্কি...