‘ছপাক’
বলিউড ছক ভাঙছে। নারীকেন্দ্রিক ছবি প্রাধান্য পাচ্ছে। জৌলুস নয়, জোরালো হচ্ছে বিষয়— এই কথাগুলি হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে আকছার শোনা যায়। এই তিনটি উপাদানই ছিল দীপিকা পাড়ুকোনের ‘ছপাক’-এ। কিন্তু তাতে লক্ষ্মীলাভ হল কি?
‘ছপাক’ সমালোচক-দর্শকের প্রশংসা পেয়েছে। কিন্তু তা ছবির ব্যবসায় ছাপ ফেলেনি। ‘ছপাক’-এর সঙ্গে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘তানাজি: দি আনসাং ওয়ারিয়র’ কিন্তু জমিয়ে ব্যবসা করছে। রজনীকান্তের ‘দরবার’ও একই দিনে রিলিজ় করেছে। সেই ছবির কালেকশনও ভাল। গত চার দিনে মেঘনা গুলজ়ারের ‘ছপাক’ মোট ২১ কোটির এবং ওম রাউতের ‘তানাজি’ ৭৫ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। অঙ্ক বলে দিচ্ছে, জনতার রায় কোন দিকে।
কেন ‘ছপাক’ বক্স অফিসে ব্যর্থ, তার পিছনে একাধিক কারণ উঠে আসছে। ‘ছপাক’-এর তুলনায় বেশি সংখ্যক সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে ‘তানাজি’। তার প্রভাব খানিকটা পড়েছে। অনেকের মতে, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদী পড়ুয়াদের পাশে দীপিকার দাঁড়ানো এ ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলেও মনে করা হচ্ছে।
পাশাপাশি আরও একটি কারণ উঠে আসছে। সাধারণ মানুষের কাছে নায়িকা মানেই তিনি সৌন্দর্যের প্রতীক। অ্যাসিড আক্রান্তের চেহারায় দীপিকাকে দেখতে হয়তো আগ্রহী নন অনেকেই। এ দিকে ‘তানাজি’ বীরগাথা। তার উপরে ছবিটির মেকিং, অভিনয় প্রশংসিত হচ্ছে। এ ধরনের ছবি বরাবরই বক্স অফিসে লাভজনক হয়। কেউ কেউ আবার মনে করছেন, ট্রেলার দেখেই দীপিকার ছবির গল্পের আন্দাজ পাওয়া গিয়েছিল। এখন মাস তিনেকের মধ্যেই ছবি টেলিভিশন, নয়তো ওটিটি প্ল্যাটফর্মে চলে আসে। ‘তানাজি’ সিনেম্যাটিক এক্সপিরিয়েন্সের নিরিখেও ‘ছপাক’-এর চেয়ে এগিয়ে।
তবে গোটা দেশের পরিসংখ্যানের চেয়ে বাংলার পরিস্থিতি আলাদা। ‘ছপাক’ এ রাজ্যে ভাল ব্যবসা করেছে। মাল্টিপ্লেক্স, সিঙ্গল স্ক্রিনে হাউসফুল যাচ্ছে ছবিটি। ট্রেড অ্যানালিস্ট পঙ্কজ লাডিয়ার মতে, ‘‘এখানকার দর্শক ইমোশনাল ছবি পছন্দ করে। সব বাধা কাটিয়ে জিতে যাওয়ার কনসেপ্ট দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়। এই ঘটনা আগেও ঘটেছে। ‘তানাজি’ শো বেশি পেলেও অকুপেন্সির নিরিখে ‘ছপাক’ এগিয়ে। আগামী বেশ কয়েকটা সপ্তাহ ছবিটা বাংলায় ভালই ব্যবসা করবে।’’
নায়িকাদের গ্ল্যামার বর্জিত অবতার নিয়ে চর্চা হয়, তা বলে অ্যাসিড আক্রান্ত? বলিউড অনেক মিথই ভাঙছে, কিন্তু পুরোপুরি বদল আসতে হয়তো আরও সময় লাগবে।