সুইজারল্যান্ডের কনকনে হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় আগুন রঙা খোলামেলা পোশাক পরে নাচছেন কাজল। লিপ মেলাচ্ছেন আশা ভোঁশলের গানে। পাশে শাহুরুখ কিন্তু নিজেকে মুড়ে রেখেছেন লেদার জ্যাকেট-সোয়েটারে। শুধু শাহরুখ-কাজল নয়, বলিউডে এই ছবি দেখা গিয়েছে বহু বার। কেন এই ‘দ্বিচারিতা’? ডিয়ার বলিউড, তোমাদের নায়িকাদের কি ঠান্ডা লাগে না?
নায়ক হলে শরীর ঢেকে রাখা যাবে পুরু পোশাকে। অথচ নায়িকা হলেই করতে হবে অঙ্গ প্রদর্শন? নারী দেহ কি শুধুই পণ্য মাত্র? দেখে নেওয়া যাক এমন কিছু সিনেমার দৃশ্যের ঝলক যেখানে মাইনাস তাপমাত্রাতেও নায়িকাকে পড়তে হয়েছে খোলামেলা পোশাক।
মহব্বতে: বলিউডের পছন্দের শুটিংয়ের জায়গা সুইজারল্যান্ড। শাহরুখ-ঐশ্বর্যের কাল্ট ছবি মহব্বতের শুটিংও হয়েছিল এখানেই। সেই বিখ্যাত গানটি মনে আছে? ‘হামকো হামি সে চুরালো’...
মনে আছে সেই গানের দৃশ্যে শাহরুখ এবং ঐশ্বর্যের পরিহিত পোশাকের কথা? হাইনেক উলিকট গায়ে চাপিয়েছেন বাদশা। আর বিশ্বসুন্দরীর কপালে জুটেছে কালো ট্রান্সপারেন্ট শাড়ি।
দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে: সুইজারল্যান্ডের কথা যখন হচ্ছেই, তখন কিং খানের ব্লকবাস্টার ‘ডিডিএলজে’-ই বা বাদ থাকে কী করে? সেই যে সর্ষে খেতের মধ্যে দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছেন শাহরুখ-কাজল। কুমার শানুর গলায় সেই না পুরনো হওয়া গান- ‘তুঝে দেখা তো ইয়ে জানা সনম’...
গানের শেষ দৃশ্যগুলো একটু মনে করুন, সিফন শাড়ি পরে শাহরুখকে জড়িয়ে রয়েছেন কাজল। রাস্তাঘাট, দূরে পাহাড় ঢেকে রয়েছে সাদা বরফে। কাজলের কি ঠান্ডা লাগে না?
স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার: আলিয়া, বরুণ এবং সিদ্ধার্থের ডেবিউ ছবি। সেই ছবিরই রোম্যান্টিক আইটেম নাম্বার ‘ইশক ওয়ালা লভ’। নীতি মোহনের গলায় সেই গানের মাদকতায় মজে গিয়েছিল জেন ওয়াই। কিন্তু সেখানেও একই দৃশ্য।
বরুণ লাল জ্যাকেটে, সিদ্ধার্থ পরেছেন কমলা জ্যাকেট। আর আলিয়া? ‘লিটল পিঙ্ক ড্রেস’। উন্মুক্ত তাঁর শরীরের একাংশ। বরফ ঢাকা পাহাড়ে হেসে হেসে, কখনও বরুণকে জড়িয়ে শট দিতে হয়েছে তাঁকে। আলিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এই ছবির শুটিংয়ে। হট ওয়াটার ব্যাগ আর কম্বলে জড়িয়ে রেখে কোনওরকমে সুস্থ করা হয়েছিল তাঁকে।
সাহো: গত বছরই মুক্তি পেয়েছে শ্রদ্ধা কপূর এবং প্রভাস অভিনীত ছবি ‘সাহো’। অ্যাকশন ছবি। তাই রোম্যান্টিক নাম্বারে নায়িকাকে খোলামেলা তো দেখাতেই হবে। অগত্যা কনকনে ঠান্ডায় শ্রদ্ধাকে পরতে হল খোলামেলা পোশাক। দিতে হল মানানসই এক্সপ্রেশনও।
তবে প্রভাসকে কিন্তু মোটেও সিক্স প্যাক প্রদর্শন করতে হল না। তাঁর বেলায় ঠিক বরাদ্দ ছিল জ্যাকেট।
আজব প্রেম কি গজব কাহানি: প্রথম বার একসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছিলেন রণবীর-ক্যাটরিনা। আতিফের গলায় ‘তু জানে না’...ইউথ অ্যানথেম হয়ে গিয়েছিল। ছবির শুটিং দৃশ্য মনে করুন একটু। চারিদিকে সারি সারি বরফ। এরই মধ্যে কালো গাউনে ক্যাটরিনা। এখানেও সেই চিরাচরিত অঙ্গ প্রদর্শন। চিত্রটা একই।
একটু পিছনে যাওয়া যাক। ১৯৮৫ সালে মুক্তি প্রাপ্ত ছবি ‘পিঘালতা আসমান’। মুখ্য চরিত্রে শশী কপূর, রাখি গুলজার। কাশ্মীরের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে রোম্যান্সে মত্ত দু’জনে। না, খোলামেলা পোশাকে নেই রাখি। গায়ে জড়িয়েছেন শাল। হাতে পরেছেন গ্লাভস। কাশ্মীরের ঠান্ডায় যা স্বাভাবিক।কনটেন্টের দিক থেকে এগোলেও অকারণে অঙ্গ প্রদর্শন থেকে কি নিযেকে সংযত রাখতে পারছে না বলিউড?