(বাঁ দিক থেকে) তৃণা সাহা, অপরাজিতা আঢ্য, সন্দীপ্তা সেন গ্রাফিক : আনন্দবাজার অনলাইন।
নিমধ্যবিত্তদের নাকি নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে সোনা। তিন দিন বাদেই ধনতেরস এদিকে সোনার দাম বেরেই চলেছে। হলুদ ধাতুর দর মাঝে ৮০ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে সোনার দাম দু’লক্ষ টাকায় পৌঁছবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। যদিও বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর কলকাতার খুচরো বাজারে ১০ গ্রাম সোনার দামে ৬০০ থেকে ৪৫০ টাকা পতন লক্ষ্য করা গিয়েছে। এ দিন কলকাতায় ২৪ ক্যারেট হলুদ ধাতু বিক্রি হচ্ছে ৭৯,৪৭০ টাকা/১০ গ্রাম দরে। আর ৭২ হাজার ৮৫০ টাকায় নেমেছে ২২ ক্যারেটের দাম। শুক্রবার অবশ্য ফের কিছুটা বেড়ে ১০ গ্রাম হলমার্ক সোনার দাম হয়েছে ৭৪ হাজার ৯৫০ টাকা। তাই তারকাদের নাকি নাগালের বাইরেই সোনা। এমনটাই মত অপরাজিতা আঢ্যের।
বাঙালি বিয়ে হোক কিংবা শুভ অনুষ্ঠান, সোনা পরার চল আজও অব্যাহত। এ দিকে ২৯ তারিখে ধনত্রোয়দশী, চলতি ভাষায় যাকে বলে ধনতেরস। দেবী ধনলক্ষ্মীর কৃপালাভের উদ্দেশ্যে পালিত হয় ধনতেরস অথবা ধনত্রয়োদশী। এই দিন সোনা বা রুপো কেনার প্রচলন রয়েছে।গয়না হোক বা মুদ্রা, এই দিনে কিছু না কিছু কেনা চাই-ই চাই। টলিপাড়ার অভিনেত্রীরাও পিছিয়ে নেই এই অনুষ্ঠানে। তাঁরাও কি এই বিশেষ দিনে সোনা দিয়ে সাজাতে চান নিজেদের? এমনিতেই সোনার গয়নায় সাজতে ভালবাসেন অপরাজিতা আঢ্য। বাহারি সব গয়না রয়েছে তাঁর। অভিনেত্রী তৃণা সাহা নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রী, সদ্যবিবাহিত সন্দীপ্তা সেন সোনার গয়নায় সেজেছিলেন নিজের বিয়েতে। ধনতেরসে কী ধরনের সোনার গয়না কিনতে উৎসাহী তাঁরা, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
অপরাজিতার হাতের সোনার ব্রেসলেট প্রায় সকলের চেনা। সব সময় সেটি পরে থাকেন তিনি। এ ছাড়াও যে কোনও উৎসবে পার্বনে সাবেক সাজের সঙ্গে সোনার গয়না পরেই অভিনেত্রীকে দেখতে অভ্যস্ত দর্শক। কিন্তু ধনতেরসে এখন আর সোনা কেনেন না তিনি। একে সোনার দাম যে ভাবে ঊর্ধ্বমুখী তাতে সোনা কেনা অপচয়। বরং সেই টাকা সঞ্চয় করে রাখতেই চান অভিনেত্রী। তবে শুধু দামটাই যে তাঁর সোনার না কেনার অন্যতম কারণ সেটাও নয়। যে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেন সেটাই যেন আরও চিন্তার কারণ এই ধরনের বিলাসিতা থেকে নিজেকে দূরে রাখার। অপরাজিতার কথায়, ‘‘একটা সময় কিনেছি, এখন আর কিনি না। একে তো দাম, দ্বিতীয়, যে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করি একটু একটু করে জাহাজ ডোবার মতো ডুবছে এবং প্রতিবন্ধকতা বাড়ছে। বর্তমানে যা পরিস্থিতি এগুলোকে প্রথা নয় প্রহসন বলে মনে হয়।’’ তবে একটা সময় অবশ্য অনেক গয়নাই গড়িয়েছেন। অভিনেত্রী জানান, তখন হয়তো মানেটা বুঝতেন না। এখন এই ধরনের উৎসবের মানেটা স্পষ্ট তাঁর কাছে। ধনতেরসে যে সোনা কিনতে হবে সেটা আর মানেন না। তবে প্রয়োজন পড়লে পুরনো গয়নার বদলে নতুন গয়না নিয়ে আসেন। অপরাজিতার কথায়, ‘‘আজকাল একটা ছোট গয়না বানাতে গেলেও যে টাকার প্রয়োজন সেখানে দাঁড়িয়ে আমরা তো মধ্যবিত্ত। আমাদের আয় তো তেমন কিছু বাড়েনি। এখন মনে হয় টাকাগুলো ব্যাঙ্কে জমিয়ে রাখি।’’
সোনার প্রতি একই ভাবে তেমন ঝোঁক নেই অভিনেত্রী তৃণা সাহার। শুধু অভিনয় নয়, নিজের ব্যবসাও শুরু করেছেন তিনি। তবে এমন বিশেষ দিন কোনও কিছু কেনাকাটায় বিশ্বাস করেন না অভিনেত্রী। আধুনিকা তিনি। সোনা কিনে খরচ করার বদলে জমি, বাড়িতে সেই টাকা বিনিয়োগ করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তৃণা। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘কোনও দিনই অত সোনা কিনতে ভালবাসতাম না। আমার শাশুড়িমা কেনেন। আমি বরং টাকাটা অন্য কিছুতে বিনিয়োগ করতে ভালবাসি। আর কারও কাছ থেকে কখনও কিছু পাওয়ার আশা করি না। নিজেরটা নিজেই করি।’’
সন্দীপ্তা অবশ্য সোনার বিষয়ে শৌখিন। বিয়ের পর প্রথম কালীপুজো। সন্দীপ্তার এ বছর মুক্তো দিয়ে সোনার হার কেনার ইচ্ছে রয়েছে। তবে স্বামী সৌম্য এখন কলকাতায় নেই। কোনও বিশেষ দিন ধরে উপহার দেওয়া হলেও সন্দীপ্তার কথায়, ‘‘আমরা একে অপরকে উপহার দিতে খুবই ভালবাসি। প্রয়োজন বুঝে কিছু না কিছু দিতেই থাকি। আর গয়নার ক্ষেত্রে বরাবরই হালকা সোনার গয়নাই ভাল লাগে।’’