ধারাবাহিকে ‘মেগা’ কনসেপ্ট ফিরছে? গ্রাফিক্স: সনৎ সিংহ।
‘জগদ্ধাত্রী’আর ‘অনুরাগের ছোঁয়া’। ‘মেগা’ ধারাবাহিকের অস্তিত্ব যখন সঙ্কটে, তখন এই দুটো ধারাবাহিকই ছোট পর্দার সফল ‘মেগা’র উদাহরণ হয়ে উঠেছে। প্রথমটি সদ্য ৭৩৪ পর্ব ছুঁয়েছে, দ্বিতীয়টির ৮০০ পর্ব পার। শুটিংয়ের পাশাপাশি দুই ধারাবাহিকের সেটেই স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যাপন। কেক কাটা, ছবি তোলা, খাওয়াদাওয়া ছিলই। আর ছিল আরও অনেক দিন দর্শকমনে থেকে যাওয়ার অঙ্গীকার। যেখানে একের পর এক ধারাবাহিক ১০০ বা ২০০ পর্ব পেরিয়ে, মাস দুয়েকের মাথায় বন্ধ হচ্ছে যাচ্ছে, সেখানে কীসের জোরে টানা দু’বছর ধরে টিকে গিয়েছে স্নেহাশিস চক্রবর্তীর ‘জগদ্ধাত্রী’? এই কৌতূহল নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল প্রযোজক-পরিচালকের সঙ্গে।
তিনি পুরো কৃতিত্ব ধারাবাহিকের বিষয়বস্তু এবং বিষয় ভাবনাকে দিয়েছেন। স্নেহাশিস বলেছেন, “ধারাবাহিকের নায়িকা জগদ্ধাত্রী অনেক আধুনিক। তথাকথিত নায়িকাসুলভ নয়। আইপিএস অফিসার। বাড়িতে শাড়ি পরে। পেশার দুনিয়ায় প্যান্ট-শার্ট। প্রয়োজনে বন্দুক হাতে নেয়। লড়াই করে অপরাধীর সঙ্গে এবং জিতেও যায়। এই বিষয়, এমন জোরালো নায়িকা ছোট পর্দায় এই প্রথম। স্বাভাবিক ভাবেই দর্শক বসে দেখছেন।” একই সঙ্গে এও জানিয়েছেন, তাঁর ধারাবাহিকে ঘটনার ঘনঘটা। তাল মিলিয়ে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, বাস্তবের পুলিশ অফিসার এসিপি লালবাজার অলোক সান্যাল, ইন্দ্রাণী দত্ত-সহ আরও অনেক খ্যাতনামী অভিনয় করেছেন। এঁদের আকর্ষণও দর্শক অগ্রাহ্য করতে পারেননি। পাশাপাশি ধন্যবাদ জানিয়েছেন চ্যালেন কর্তৃপক্ষকেও। প্রযোজক-পরিচালকের মতে, “চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ধৈর্য ধরে ভরসা করতে পারলে সকলেই নিজেকে প্রমাণ করতে পারে।” তাঁর দাবি, কেউ প্রথম থেকেই ‘ফার্স্ট বয়’ হয় না। সেই সুযোগ তিনি পেয়েছেন। তাই নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ ধারাবাহিকের নায়িকা স্বস্তিকা ঘোষের সঙ্গেও। সামনে পুজো। ধারাবাহিকের সেটে বাড়তি পর্বের শুটিংয়ের চাপ। তার ফাঁকেই ফোনে জানালেন, এখন ধারাবাহিকের নায়িকা কোনও অভিনেত্রীর নন, ধারাবাহিকের বিষয়। ঘরোয়া গল্পের জোরেই তাঁদের ধারাবাহিককে প্রথম থেকে ভালবেসেছেন দর্শক। ধারাবাহিকের নায়ক-নায়িকা সূর্য-দীপার ভাল-তে তাঁরা খুশি, মন্দ-তে মনখারাপ করেছেন। এটাই তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার পাথেয়। স্বস্তিকার কথায়, “একই সঙ্গে দীপা মানে আমি যথেষ্ট লড়াকু। কখনও পরিস্থিতির সঙ্গে লড়েছি। কখনও নিজের স্বামীর বিরুদ্ধে। এখন যেমন বন্যার বিরুদ্ধে লড়ছি। বানভাসি মেয়ে রূপাকে আমার থেকে আলাদা করে দিয়েছে।”
এ ভাবেই বাস্তব ঘটনাকে সামনে রেখে এগিয়ে চলেছে ধারাবাহিকের গল্প। স্বস্তিকার যুক্তি, এর জোরেই টিআরপি-তে মাঝেমধ্যে ভাল ফল করতেও না পারলেও দর্শকমনে ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ এখনও জায়গা ধরে রাখতে পেরেছে।