প্রতিবাদী মোক্ষ। ছবি: ফেসবুক।
দক্ষিণ ভারত ছেড়ে ফিরেছিলেন নিজের শহর কলকাতায়, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে। প্রথম হোঁচট খান ১৮ অগস্ট। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয়ে। সেখানেই প্রথমে ক্ষোভে ফেটে পড়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছিলেন দক্ষিণী বিনোদন দুনিয়ার পরিচিত মুখ পৃথা সেনগুপ্ত। যদিও তাঁর শিকড় বাংলায়। নাম বদলে এখন যিনি সুপরিচিত মোক্ষ নামে। তার পর প্রায় প্রত্যেক দিন পথে। কখনও নাচ, কখনও গান, কখনও অভিনয়কে হাতিয়ার করে জ্বালাময়ী প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় হোঁচট এখানেই। এ সব কিছুর মাশুল দিতে হচ্ছে মোক্ষকে! আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, দিন কয়েক ধরে সিবিআই-এর ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ফোন আসছে তাঁর কাছে। তাঁর পরিচিতদের অনুমান, তাঁর ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে!
অভিনেত্রী প্রথম মুখ খুলেছিলেন আনন্দবাজার অনলাইনের কাছেই। সেই সময় জানিয়েছিলেন, নামের প্রভাব বোধ হয় তাঁর জীবনেও পড়েছে। অনেক কিছু দেখার পর ইদানীং তাঁর মনে হচ্ছিল, বাস্তবিক তাঁর মোক্ষলাভ হয়ে গিয়েছে। আরজি কর-কাণ্ড সেই ভাবনা বদলে দিয়েছে। নিজের শহরের ভয়াল রূপ তাঁকে ভয় পাইয়ে দিয়েছে। এ বার কি সত্যি সত্যি ‘মোক্ষলাভ’ হল? গলায় অল্প বিষণ্ণতা আর ভয়ের মিশেল। মোক্ষ বললেন, “প্রতিবাদের ফল এত ভয়াবহ হবে ভাবতে পারিনি। স্বাভাবিক ভাবে ফোনে কথা বলতে পারছি না। সকলের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলছি।” একই সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন সাম্প্রতিক ভয়াবহ অভিজ্ঞতাও। তিনি আর তাঁর ছেলেবেলার বন্ধু তন্ময় প্রতিবাদী মিছিল সংগঠন নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। তখনই আসে সেই ভুয়ো ফোন (অভিনেত্রীর দাবি)। চোস্ত হিন্দিতে তাঁকে ফোনে বলা হয়, দিল্লি থেকে ফোন এসেছে। যিনি ফোন করেছেন তিনি সিবিআই অফিসার।
মোক্ষর দাবি, এর পরেই সেই অপরিচিত ব্যক্তি মোক্ষর ছেলে আছে কি না, তাঁর স্বামী কোথায় চাকরি করেন, তাঁর বিয়ে হয়েছে কি না— ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন করতে থাকেন। বেগতিক বুঝে হাল ধরেন অভিনেত্রীর বন্ধু তন্ময়। তিনি সরাসরি জানতে চান কী কারণে সিবিআই থেকে ফোন করা হচ্ছে অভিনেত্রীকে? কারণ, মোক্ষ বাকিদের মতো প্রতিবাদ জানিয়েছেন মাত্র। তিনি তো কোনও ভাবেই আরজি কর-কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন। তখন সেই ব্যক্তি ফোন রেখে দেন। একই ভাবে এই ফোন পৌঁছে গিয়েছিল অভিনেত্রীর দক্ষিণী প্রযোজকের কাছেও। প্রসঙ্গত, টলিউড তাঁকে কাজ না দেওয়ায় নিজেকে প্রমাণ করতে বাংলা ছেড়ে দক্ষিণী বিনোদন দুনিয়ায় পা রেখেছেন কলকাতার মেয়েটি।
দক্ষিণী প্রযোজকও বুঝতে পারেন, ভুয়ো ফোন থেকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে তাঁর ছবির নায়িকাকে। এর পরেই তিনি মোক্ষকে কাজের দুনিয়ায় ফিরে আসার অনুরোধ জানান। বিমানের টিকিট পাঠিয়ে দেন। মোক্ষর কথায়, “মোক্ষলাভ হল কি না জানি না, তবে নিজের শহরকে নতুন ভাবে চিনলাম। আমি ব্যারাকপুরের মেয়ে। খোদ শাসকদলের এলাকা। মা-বাবাকে রেখে যেতে খুব ভয় করছে। প্রয়োজন বুঝলে ওঁদেরও এর পর নিয়ে যাব আমার সঙ্গে।”