জয় গোস্বামী অটোগ্রাফ চেয়েছিলেন রূপম ইসলামের থেকে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
সদ্য জন্মদিন পার হল কবি জয় গোস্বামীর। কবির সঙ্গে কাটানো বিশেষ মুহূর্ত, ভাল স্মৃতি ভাগ করে নিয়েছেন খ্যাতনামীরা। ফিরে গিয়েছেন অতীতে। গায়ক রূপম ইসলামও এমন কিছু কথা ভাগ করে নিয়েছেন, যা জানার পরে তাঁর অনুরাগীরা একই সঙ্গে বিস্মিত এবং আপ্লুত।
যেমন, তিনি সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন, এক বার কবি তাঁর থেকে অটোগ্রাফ চেয়েছিলেন। অটোগ্রাফ দিতে গিয়ে সেই প্রথম নিজের নাম ভুলে গিয়েছিলেন রূপম! কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছিল? সবিস্তার জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। গায়কের কথায়, “যে ঘটনার কথা আমার সমাজমাধ্যমে উল্লেখ করেছি, সেটি বেশ মজার। জয় গোস্বামী আমার সাম্প্রতিক বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম সম্পর্কে খবর রাখেন। তিনি যেমন আমার কনসার্টে এসেছেন ঠিক তেমনই আমার বিভিন্ন লেখালিখিও পড়েন। আমার কনসার্ট শুনতে যে দিন এসেছিলেন, হাতে করে আনন্দমেলার দুটো সংখ্যা নিয়ে এসেছিলেন, যেখানে আমার ধারাবাহিক উপন্যাস প্রকাশিত হচ্ছিল। হঠাৎ করে আমাকে অটোগ্রাফ দিতে বলেন। যার ফলে ওই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল আর কী! আমি তো কোনও দিন আশাই করিনি যে, জয় গোস্বামী কোনও দিন বলবেন, ‘আপনি এখানে সই করে দিন।’ উনি আবার ‘তুমি’ বলতে পারেন না। উনি সমানে ‘আপনি’ই বলেন। যত বারই বলি, আপনি আমাকে ‘তুমি’ বলুন, বলবেন না। জীবনে কত যে অটোগ্রাফ দিয়েছি তার ইয়ত্তা নেই। মাত্র একবারই আমি অটোগ্রাফ দিতে গিয়ে নিজের নাম ভুলে গিয়েছিলাম! এটাই হল সেই ঘটনা!”
জয় গোস্বামীর প্রসঙ্গ উঠলেই গায়কের মন এক অদ্ভুত ভাল লাগায় ভরে যায়। কবির সঙ্গে তাই প্রথম সাক্ষাতের কথা আজও ভুলতে পারেননি রূপম। তিনি বলেছেন, “সে বহু যুগ আগের কথা। জয় গোস্বামীর দু’টি প্রবন্ধের বই— ‘হৃদয়ে প্রেমের শীর্ষ’ এবং ‘রৌদ্র ছায়ার সংকলন’ পড়ে আমি খুব মুগ্ধ হয়ে ওঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। দেখা করে তো আমি আর বিশেষ কিছু কথা বলতে পারছি না। চুপ করে বসে আছি, উনিও চুপ করে আমাকে দেখছেন। মনে আছে যে, আমার চোখ ভিজে গিয়েছিল। ওঁর সামনে আমি বসে আছি, এই অনুভূতিতেই চোখ ভিজে গিয়েছিল। মনও দ্রব হয়ে গিয়েছিল। তিনি সেই সময় প্রকাশিত তাঁর একটি বই সে দিন আমাকে উপহার দেন, লিখে দেন— ‘কবি রূপমকে’। এই হচ্ছে জয় গোস্বামীর সঙ্গে আমার প্রথম ব্যক্তিগত সাক্ষাতের স্মৃতি।”
যোগাযোগের সেই শুরু। এর পর আরও দেখা হয়েছে উভয়ের, কথাও হয়েছে। গায়ক জানিয়েছেন, আলাপের পর থেকে কবি তাঁর প্রতি, তাঁর কাজকর্মের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি কী করেন, কী গান, কী লেখেন— সব খুঁটিয়ে দেখতে থাকেন। আলোচনাও করেন সে সব বিষয়ে। গায়কের প্রথম কবিতার বই পড়ে আন্তরিক প্রশংসাও জানিয়েছিলেন। রূপমের কথায়, “আমার লেখা প্রথম কবিতার বই ‘তীরে এসো, সাহসিনী’ পড়ে বলেছিলেন— ‘প্রতি বছর অথবা প্রতি দু’বছরে একটি কবিতার বই আপনি বার করবেন। আমি সে বই পড়ার জন্য বেঁচে থাকব।’ সম্প্রতি প্রকাশিত জন লেনন বিষয়ক আমার একটি প্রবন্ধ ওঁকে পাঠিয়েছিলাম। সেটি পড়ে তিনি বললেন, ‘আপনার নিশ্চয়ই আরও অনেক প্রবন্ধ হয় মনের মধ্যে রয়েছে, নয়তো লেখা রয়েছে। সেগুলোকে একত্রিত করে অবশ্যই আপনার একটি বই করা উচিত।”
গায়ক কবির এই অনুরোধ রেখেছেন। আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, “ওঁর ইচ্ছে অনুযায়ী প্রবন্ধ সংকলনের কাজটি শুরু করেছি এবং আমার নতুন কবিতার বইও প্রকাশিত হতে চলেছে কয়েক দিনের মধ্যেই। প্রকাশিত হলেই সেটি তাঁর হাতে তুলে দিতে চাই আমি।”