বুধবার রাতে যাদবপুরে সৌরসেনী মৈত্র। — নিজস্ব চিত্র।
বুধবার মধ্যরাতে শহরের রাজপথে তখন অন্য ছবি। মহিলাদের ‘রাত দখল’-এর কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে জমায়েত। সকলের মুখে একটাই স্লোগান, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত ২টো। যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ডের জমায়েত থেকে মিছিলের অভিমুখ যাদবপুর থানার দিকে। উদ্দেশ্য, থানার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন।
সাধারণ প্রতিবাদীদের সঙ্গে রাস্তায় হাঁটছেন টলিপাড়ার একঝাঁক তারকা। সৌরসেনী মৈত্র ক্রোধের বশেই বললেন, ‘‘বুঝতেই পারছি, মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে! তা না হলে আজ এ রকম স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন পাওয়া যেত না। এই লড়াইটা আর শুধু ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটা এখন মানুষের লড়াই হয়ে উঠছে।’’
সৌরসেনীর মতে, সমাজে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলেই সাধারণ মানুষ পথে নেমেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ঘটনা নিয়ে ছবি হয়। সেই ছবি আমরা হলে দেখতে যাই। তার পর ভুলেও যাই! কিন্তু এ বার আর ভুলতে দেওয়া যাবে না।’’ নির্ভয়া কাণ্ড বা ‘হোক কলরব’-এর মতো ঘটনায় মানুষ প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন। অভিনেত্রী জানালেন, এ বার নারী নির্যাতন বন্ধ করতেই হবে।
সৌরসেনীর দাবি, আরজি কর-কাণ্ডে দোষীদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয় এবং তা যেন লোকচক্ষুর সামনে হয়। বললেন, ‘‘নিজের কর্মস্থলে একটি মেয়ে যদি সুরক্ষিত না থাকতে পারে, তা হলে সমাজের মহিলারা কোথায় সুরক্ষিত!’’ সৌরসেনীর মতে, প্রতি দিন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহিলাদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়। তার অনেকটাই প্রকাশ্যে আসে না। বললেন, ‘‘এই মিছিল থেকে ১০ জন মহিলাকে জিজ্ঞেস করলে হয়তো জানা যাবে, তাঁরা জীবনের কোনও না কোনও সময়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন।’’ তাই আরজি কর-কাণ্ডে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রয়োজন আছে বলেই তিনি মনে করেন। তাঁর কথায়, ‘‘আরজি কর হাসপাতালে সংস্কারের কাজের থেকেও এখন এই সমাজের দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন!’’
সৌরসেনীর মতে, ‘রাত দখল’ কর্মসূচি এক দিনের প্রতিবাদ নয়। এটা সিঁড়ির প্রথম ধাপ। তা হলে এর পর কী? সৌরসেনী বললেন, ‘‘আজ গলা তুলেছি, কাল এবং পরশুও গলা তুলে বলব। যত দিন না থামবে, চুপ থাকব না। আর গলায় কাজ না হলে প্রয়োজনে হাতও তুলব!’’