Ankush Hazra

‘ব্লকবাস্টার’ লেখা সহজ! তবে বাস্তবকে জানা জরুরি, সত্য তুলে ধরলেন প্রযোজক অঙ্কুশ

‘মির্জ়া’ নিয়ে টলিপাড়ায় চর্চা চলছে। নিজের ঢাক না পিটিয়ে বাংলা বাণিজ্যিক ছবির বাস্তব পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলেন অঙ্কুশ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:১৮
Share:

অঙ্কুশ হাজরা। ছবি: সংগৃহীত।

ইদের সপ্তাহে মুক্তি পেয়েছে অঙ্কুশ অভিনীত ছবি ‘মির্জ়া’। ছবিটি তিনি নিজেই প্রযোজনা করেছেন। এই ছবি ঘিরে ভালমন্দ বিভিন্ন মন্তব্য সমাজমাধ্যমে ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু, নিজের ঢাক না পিটিয়ে বাংলা বাণিজ্যিক ছবির বাস্তবকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন অঙ্কুশ।

Advertisement

শুক্রবার সমাজমাধ্যমে একটি দীর্ঘ ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন অঙ্কুশ। সঙ্গে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘‘বাংলা কমার্শিয়াল সিনেমা।’’ অঙ্কুশ জানিয়েছেন, প্রথম দিনেই ‘মির্জ়া’ নিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস তাঁকে আপ্লুত করেছে। কিন্তু একই সঙ্গে অঙ্কুশ জানিয়েছেন যে, অনেক প্রেক্ষাগৃহ রয়েছে, যেখানে মানুষ এখন আর পা রাখেন না। তাঁর কথায়, ‘‘২০১৪-১৫তে সেই সিনেমা হলগুলোয় আমি নিজে যেতাম। হাউসফুল শো। পরিকাঠামো বা অন্য বিভিন্ন কারণে সেখানে এখন আর দর্শক যান না।’’

‘মির্জ়া’ থেকে টাকা ফেরত পাবেন কি না, তা নিয়ে এখনই অঙ্কুশ নিশ্চিত নন। অঙ্কুশের কথায়, ‘‘বাংলা সিনেমা এবং বিশেষ করে বাণিজ্যিক ছবির যা অবস্থা, সেখানে একটা মিরাক্‌ল না হলে হয়তো আমি পুরো টাকা ফেরত পাব না।’’ কিন্তু তার পরেও পিছিয়ে আসতে রাজি নন অঙ্কুশ। তিনি আরও বড় আকারে ‘মির্জ়া ২’ তৈরি করবেন বলেই জানিয়েছেন। নেপথ্যে কাজ করছে দর্শকের ভালবাসা।

Advertisement

অভিনেতা জানিয়েছেন ১০ বছর আগে এই ছবি তৈরি করলে যে পরিমাণ লাভ হত, সেটা আজকের বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে সম্ভব নয়। অঙ্কুশ বলেন, ‘‘বছরের পর বছর ধরে দর্শকের বাণিজ্যিক ছবি দেখার অভ্যাস চলে গিয়েছে। তাই, আজকে ভাল ফল না পেলেও এই ধরনের ছবি তৈরি বন্ধ করা উচিত নয়।’’ আসলে, বাস্তব পরিস্থিতিই তুলে ধরতে চেয়েছেন অঙ্কুশ। তিনি বলেছেন, ‘‘একটা বাংলা ছবি প্রথম দিনে ২০-২২ লক্ষ টাকার ব্যবসা না করলে, তার জন্য বাণিজ্যিক ছবি তৈরি বন্ধ করলে আমরা ‘মাস’-এর থেকে আরও পিছিয়ে যাব।’’

বাণিজ্যিক ছবি যে সব সময় দর্শক তারকার কথা ভেবে দেখেন না, সেখানে ভাল গল্প খোঁজেন, সে কথা মনে করাতে অঙ্কুশ দক্ষিণী ছবি ‘কেজিএফ’-এর কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘তখন তো কেউ যশকে চিনতই না। তা-ও আমরা গিয়ে হল ভরিয়ে ছবিটা দেখেছি।’’ অঙ্কুশের মতে, সিনেমা হলে দর্শক আজকে আগের মতো যেতে পছন্দ করেন না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ৮০০ থেকে বাংলায় সিনেমা হলের সংখ্যা ২০০-র নীচে নেমেছে। নেপথ্যে কারা দায়ী, প্রশ্ন তুলেছেন অঙ্কুশ। তিনি বলেন, ‘‘ছবি মুক্তি পেলে ‘ব্লকবাস্টার’ বা ‘বাম্পার রেসপন্স’ লেখা সোজা। কিন্তু বাস্তবকে জানাটাও খুব জরুরি। নায়ক হলে বলতাম না হয়তো, কিন্তু প্রযোজক হিসেবে এই কথাগুলো বলা উচিত।’’

বাণিজ্যিক ছবি চলছে না বলে দিনের পর দিন কম বাজেটের ছবি করলে আদপে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির পরিধি বাড়বে না বলেই মনে করেন অঙ্কুশ। তাঁর কথায়, ‘‘‘মির্জ়া’য় ৫ টাকা খরচ করে ২ টাকা ফেরত এলে যে সিক্যুয়েল তৈরি করব না, তা নয়।’’ একই সঙ্গে এই ছবি নিয়ে ‘ট্রোলার’-দেরও একহাত নিয়েছেন অভিনেতা। তিনি বলেছেন, ‘‘কোন প্রেক্ষাগৃহে দর্শক নেই, সেটা দেখিয়ে লাইক এবং মজার কমেন্ট পাওয়া যায়। কারণ নেটদুনিয়াটা মানুষকে ছোট করার জায়গা।’’ এ রাজ্যে ১৪০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘মির্জ়া’। কিন্তু কোনও রঙিন বুদবুদের মধ্যে থেকে নিজেকে সান্তনা দিতে চাইছেন না অঙ্কুশ। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে টাকা তুলতে গেলে ২০০টা হাউসফুল পেতে হবে। কিন্তু জানি, সেটা হবে না। কিন্তু ছবি তৈরি বন্ধ না হলে, এক দিন নিশ্চয়ই হবে।’’ ভবিষ্যতে বছরে টলিপাড়ায় ৫টা ছবি তৈরি হলে, তার মধ্যে যেন অন্তত দুটো ছবি বাণিজ্যিক হয়, সেই আশাতেই বুক বেঁধেছেন অঙ্কুশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement