অডিশনে প্রায় ৮ হাজার বাচ্চার মধ্যে বেছে নেওয়া হয়েছিল তাকে। তার পর ৭ বছরের সেই খুদেই হল ছোট্ট মুন্নি।
পাকিস্তানে তাকে নিজের পরিবারের কাছে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার গল্প নিয়েই তৈরি হল ‘বজরঙ্গি ভাইজান’।
২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া সলমন খানের সুপারহিট ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ ছিল পরিচালক কবীর খানের প্রথম ছবি। কবীর এবং কাস্টিং ডিরেক্টর মুকেশ ছাবড়া অডিশনে বেছে নিয়েছিলেন হর্ষালি মলহোত্রকে। একরত্তি মুন্নির চরিত্রে।
৮ হাজার বাচ্চা মেয়ের মধ্যে চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছেছিল ৩ জন। তার পর তাদের নিয়ে ১০ দিনের একটা ওয়ার্কশপ হয়েছিল। সেখান থেকেই মুন্নি চরিত্রের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল হর্ষালিকে।
ছবিতে পাকিস্তানের পাহাড়ি গ্রামের ছোট্ট মেয়ে শাহিদা এক দুর্ঘটনার পরে হারিয়ে ফেলেছিল কথা বলার শক্তি। তাকে নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে এক ধর্মস্থানে এসেছিলেন তার মা।
ফেরার পথে রাতের অন্ধকারে থেমে থাকা ট্রেন থেকে নামে শাহিদা। রেললাইনে চলে আসা ভেড়ার ছানাকে সরিয়ে দিতে। সে ফের ওঠার আগেই ট্রেন ছেড়ে দেয়। সম্পূর্ণ অচেনা অজানা দেশে একা হয়ে যায় ছোট্ট মেয়েটি।
ঘটনাচক্রে তার সঙ্গে দেখা হয়ে যায় একনিষ্ঠ হনুমানভক্ত পবনকুমার চতুর্বেদির। তার পর কী করে শাহিদাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেবেন পবন? সেই নিয়েই টানটান চিত্রনাট্যে এগোয় ছবির গল্প।
যে হেতু একরত্তি মেয়েটি কথা বলতে পারত না, তাই তার নামও জানতে পারেনি পবন। তাই তাকে ডাকা হত ‘মুন্নি’ নামে। ক্রমে সেটাই তার পরিচয় হয়ে দাঁড়ায়। আর মুন্নির মনে পবনকুমার হয়ে যান ‘বজরঙ্গি ভাইজান’।
ছবিতে শাহিদা ওরফে মুন্নি কথা বলতে পারত না। কিন্তু পর্দার বাইরে হর্ষালি কথা বলতে খুবই ভালবাসে। ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ তাকে রাতারাতি দেশ জুড়ে তারকা বানিয়ে দেয়।
হর্ষালির জন্ম মুম্বইয়ে, ২০০৮-এর ৩ জুন। বাবা বিপুল মলহোত্র, মা কাজল মলহোত্র এবং দাদা হার্দিক মলহোত্রর সঙ্গে সে থাকে মুম্বইয়েই। তবে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর আগেও সে কাজ করেছে ছোট পর্দায়, ‘কবুল হ্যায়’ এবং ‘লওট আও তৃষা’ ধারাবাহিকে।
‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর পরে ২০১৫ সালে ‘প্রেম রতম ধন পায়ো’ ছবিতেও তার অভিনয় করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সে বাদ পড়ে। তবে সে বছরই সে কাজ করে ‘জোধা আকবর’ ধারাবাহিকে।
তবে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর পরে অন্য কোনও ছবিতে এখনও অভিনয় করেনি হর্ষালি। ২০১৯-এ ‘নাস্তিক’ ছবিতে সে অভিনয় করছিল। কিন্তু অর্জুন রামপাল অভিনীত ছবিটির কাজ মাঝপথে আটকে রয়েছে। এখনও মুক্তি পায়নি।
ইতিমধ্যেই বহু বিজ্ঞাপনের প্রধান মুখ হয়ে উঠেছে হর্ষালি। সে দিনের খুদে মুন্নি আজ ১২ বছরের কিশোরী। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে নিজের বেশ কিছু ছবি দিয়েছে সে।
শেয়ার করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে হর্ষালি মেতে উঠেছে দীপাবলির আনন্দে। এক ঢাল চুল এবং নিষ্পাপ মুখের মধ্যে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে ৫ বছর আগের ছোট্ট মুন্নি।
‘ভাই দুজ’ অনুষ্ঠানের ছবিও শেয়ার করেছে হর্ষালি। বিনোদন দুনিয়ায় কাজ করার পাশাপাশি পড়াশোনাও মন দিয়ে করে সে। তার সাম্প্রতিক ছবি দেখে দর্শকরা ভাবতেই পারছেন না, সে দিনের মুন্নি আজ এত বড় হয়ে গিয়েছে!