বোন কি দাদার মতোই, মুখোমুখি অমৃতা সিংহ। ছবি: সংগৃহীত।
দাদা অরিজিৎ সিংহ। খ্যাতির চূড়ায় তাঁর বাস। যদিও তিনি আদ্যোপান্ত মাটির মানুষ— বোন অমৃতা সিংহ। তিনিও দাদার মতো গানবাজনার সঙ্গে যুক্ত। বেশ কয়েক বছর মুম্বইতে থাকার পর পাকাপাকি ভাবে কলকাতায় রয়েছেন অমৃতা। অরিজিতের সঙ্গে একাধিক অনুষ্ঠানে গান গেয়েছেন দেশে-বিদেশে। ইতিমধ্যেই ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তের ‘বিসমিল্লাহ’ ছবিতে গেয়েছেন তিনি, এ ছাড়াও ‘ইতি মেমোরিজ়’-সহ বেশ কিছু ওয়েব সিরিজে কণ্ঠ দিয়েছেন অমৃতা। এমন খ্যাতনামী দাদার বোন হওয়ার সুবিধা বেশি না অসুবিধা, আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে ঝাঁপি খুললেন অমৃতা সিংহ।
যাঁর দাদার এমন নামডাক, তাঁর তো ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পাওয়া খুব বেশি অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তিনি যে অরিজিতের বোন, স্বভাবও একেবারেই দাদার মতো। কারও সুপারিশে নয়, যতটা করবেন, নিজের দমেই করবেন। অমৃতার কথায়, ‘‘দাদা বলেই দিয়েছিল, তোমার নিজের পথ চলাটা একান্তই নিজের, কোনও সঙ্গীত পরিচালককে গিয়ে কখনও আমায় নেওয়ার কথা বলেনি। হ্যাঁ, গান নিয়ে কথা হয়, অনেক কিছু শিখি।’’
আর সুবিধা কি আছে কিছু খ্যাতনামী দাদার বোন হওয়ার? বললেন, ‘‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আছে। দাদার জন্যই সুযোগ পেয়েছি কৌশিকী চক্রবর্তীর মতো শিল্পীর বাড়িতে গিয়ে তালিম নেওয়ার। দাদার জন্য গুণী মানুষদের সঙ্গ পেয়েছি। আর বাড়তি সুবিধা বলতে দাদার মতো কষ্ট আমাকে করতে হয়নি, আমার পথ অনেকটা মসৃণ। রিয়্যালিটি শোয়ের পর মুম্বইতে একটা দীর্ঘ সময় সঙ্গীত পরিচালক প্রীতমের সঙ্গে কাজ করেছে। তাই দাদার পরিশ্রমটা দেখেছি। বাড়িতে ফিরে ঘুমোতে আসত শুধু। আমাকে এতটা কষ্ট করতে হয়নি।’’
এমনিতে শান্ত, কিন্তু ক্যামেরা দেখলেই মাঝেমধ্যে মেজাজ হারান অরিজিৎ। বোনের উপর কি কখনও দাদাগিরি করেছেন? অমৃতা বলেন, ‘‘না, আসলে ভিড় পছন্দ করে না, আর কোথাও গেলেই লোকে মোবাইল নিয়ে চলে আসে, সেটা অপছন্দ। তবে দাদাগিরি বলতে তেমন কিছু না। একসঙ্গে বড় হয়েছি তো। তবে গানে যদি উনিশ-বিশ হয়, তা হলে মারও খেয়েছি দাদার কাছে।’’
দাদা অরিজিৎ সিংহের সঙ্গে অমৃতা সিংহ। ছবি:সংগৃহীত।
যে কোনও ভাই-বোনের মধ্যে কোনও এক জন বেশি প্রতিষ্ঠিত হলে তুলনা কি স্বাভাবিক? অমৃতা জানান, তাঁদের মধ্যে তুলনাই প্রশ্নাতীত। শিল্পী বলেন, ‘‘আমরা জানতাম, দাদা এক দিন বিখ্যাত হবে। মা সব সময় বলত ওঁর জগৎজোড়া নাম হবে। তাই আমরা জানতাম এটা হবেই।’’ দুই ভাই-বোনের মিল রয়েছে বিস্তর। দু’জনের শুরুই রিয়্যালিটি শো থেকে। অরিজিতেরটা সকলেরই জানা। কিন্তু অমৃতার? অমৃতাও গিয়েছিলেন ‘ইন্ডিয়ান আইডল’-এ। তবে বিচারকদের সামনে পৌঁছনোর আগেই বাদ পড়েন। অমৃতা বলেন, ‘‘আমার গানের চর্চাটাই অনেক দেরিতে। দাদা তো ছোট থেকে শিখছে। আমার ভাল লাগত নাচ। গান অনেক পরে এসেছে আমার জীবনে। তবে ‘ইন্ডিয়ান আইডল’-এ অংশ নেওয়া পর থেকেই মন দিয়ে তালিম নেওয়া শুরু আমার।’’ মুম্বই ছেড়ে কলকাতায় পাকাপাকি ভাবে থাকছেন বছর দুয়েক হল। ইচ্ছে ভাল ভাল গান দর্শকের উপহার দেওয়ার। দাদার মতো নয়, বরং অমৃতা নিজের মতোই থাকতে চান।