Rajnikanth

Rajnikanth: ৭১-এ থালাইভা: সাদামাঠা চেহারায় ‘সব পেরেছি’-র ম্যাজিক! এমন অসাধ্য সাধন ক’জন পারে?

বছরের পর বছর শুধু বাণিজ্যিক ছবি করেও নিজের অভিনয় দক্ষতা প্রমাণ করা যায়। অনেকেই বলেন, অন্য ধারার ছবি না করলে ‘অভিনেতা’ তকমাটাই নাকি জোটে না!

Advertisement

অঙ্কুশ হাজরা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২১ ১৮:৪৫
Share:

রজনীকান্ত হলেই সব পারা যায়।

অ্যাকশন হিরো। যে একশোটা ভিলেনকে উড়িয়ে দেয় এক তুড়িতে! অবলীলায় দশ তলা থেকে লাফ দিয়ে নামতে পারে মাটিতে। যে খারাপকে শেষ করে। ভালকে জেতায়। আমাদের সব না-পারাগুলোকে ভুলিয়ে দেয় এক নিমেষে। সে-ই আমার হিরো। রজনীকান্ত।
তখন জানতাম না নায়ক হব। ক্যামেরার সামনে মারকাটারি অ্যাকশন করব। বাড়িতে বসে টেলিভিশনের পর্দায় ওই মানুষটাকে দেখতাম। মুগ্ধ হতাম। তার পর সেই মুগ্ধতা নিয়ে বসে থাকতাম চুপ করে।

Advertisement

আচ্ছা সত্যিই কি কেউ এমন পারে? প্রায় পাঁচ দশক ধরে কেউ কি সত্যিই এমন দাপুটে রাজ্যপাট চালাতে পারে?

আসলে রজনীকান্ত হলেই সব পারা যায়। বছরের পর বছর শুধু বাণিজ্যিক ছবি করেও নিজের অভিনয় দক্ষতা প্রমাণ করা যায়। ইদানীং অনেকেই বলেন, অন্য ধারার ছবি না করলে ‘অভিনেতা’ তকমাটাই নাকি জোটে না! কই থালাইভা তো কখনও এত কিছু ভাবেননি। তিনি শুধু বিনোদনের কথা ভেবেছেন। একের পর এক ছবি করে মধ্যবিত্তের ভালবাসা আদায় করেছেন। এখানেই তো তাঁর সার্থকতা।
৬০ পার করেও বক্স অফিসে এখনও ঝড় তুলতে পারেন তিনি। আর কোনও অভিনেতা এই বয়সে এমন পারেন কি না জানা নেই।

Advertisement

টেলিভিশনের পর্দায় ওই মানুষটাকে দেখতাম।

কেউ কি পারেন পর্দার বাইরে আর পাঁচটা মানুষের মতো নিজের সাদামাঠা চেহারা নিয়ে সদর্পে হেঁটেচলে বেড়াতে? রজনীকান্ত পারেন। বলিউড বা টলিউডের অনেক অভিনেতার মাথা থেকে একটি চুল পড়লেও তাঁরা টুপি পরে ঘুরে বেড়ান। চুলের চিকিৎসা চললেও খানিক সঙ্কোচে একটি টুপি সঙ্গে রাখেন। তাতে আমার কোনও আপত্তি নেই যদিও। কিন্তু যে রজনীকান্ত পর্দায় মাথা ভর্তি চুল নিয়ে নাচগান করে মাতিয়ে রাখেন, তিনিই আবার নির্দ্বিধায় চওড়া টাক নিয়েও দিব্যি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যান । মাথায় চুল কম, ত্বকের জেল্লা মলিন। পর্দার চেহারার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়াই দায়। রজনী বুঝিয়ে দেন, পর্দার বাইরে তিনিও বাকিদের মতোই সাধারণ। আর তাতেই অসাধারণ হয়ে ওঠেন লক্ষ লক্ষ অনুরাগীর কাছে।

দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির অ্যাকশন দৃশ্যকে অনেকেই ‘অবাস্তব’ বলে উড়িয়ে দেন। কেউ কেউ সে সব দেখে হেসে গড়াগড়ি যান। বলিউড বা টলিউডের অনেকেই হয়তো এই ধরনের দৃশ্যে অভিনয় করতে রাজি হবেন না। পাছে এ সব দেখে লোক হাসে! কিন্তু থালাইভার অনুরাগীরা হাসেন না। তাঁরা ভালবাসেন। বিশ্বাস রাখেন। রজনীকান্ত যা-ই করেন, তাঁদের কাছে তা-ই সত্যি। রজনীকান্তের প্রতি তাঁর অনুরাগীদের ভালবাসা যে কোনও অভিনেতার কাছেই ঈর্ষার কারণ হয়ে উঠতে পারে।

বহু টেকনিশিয়ান বন্ধুর কাছে শুনেছি তাঁর কথা। যে কোনও ছবির সেটে গিয়েই সকলের সঙ্গে ভীষণ মিশে যান। সবার কথা ভাবেন। ছবি একমাত্র বড়সড় লাভ করলেই নিজের অংশটুকু নেন। টাকা নিয়েও কোনও মাথাব্যথা নেই তাঁর। আচ্ছা, এমন মানুষ কি সত্যিই কোথাও হয়? আমার চোখে রজনীকান্ত নায়কদেরও নায়ক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement