ফের উদযাপনে ঐন্দ্রিলা, আয়োজনে অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা
ঐন্দ্রিলা শর্মার বছর শেষ উদযাপন দিয়েই। শুক্রবার সন্ধেয় ক্যানসারজয়ী অভিনেত্রীকে কেক উপহার পাঠিয়েছেন অঙ্কুশ হাজরা-ঐন্দ্রিলা সেন। চকোলেটে মোড়া কেকের গায়ে সুন্দর শুভেচ্ছাবার্তা। স্বাভাবিক ভাবেই আপ্লুত ‘জিয়ন কাঠি’-র নায়িকা। হাসতে হাসতে জানিয়েছেন, রাজ-শুভশ্রী চক্রবর্তীর পরে এ বার তাঁর পাশে অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা। যুগলে ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছেন পরান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। সেখানে প্রবীণ অভিনেতার গলা জড়িয়ে অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলার মজার আবদার, ‘‘ দেবের সঙ্গে ‘টনিক’ করেছ। আমাদের সঙ্গে ‘জেলুসিল’ আর ‘কাফ সিরাপ’ করতে হবে!’’
জীবনমুখী যোদ্ধার হাতে ফের উঠেছে ছুরি। ফের অনায়াসে বসে গিয়েছে অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলার দেওয়া কেকের বুকে। সাক্ষী তাঁর মা-বাবা। কেমন লাগছে? জানতে আনন্দবাজার যোগাযোগ করেছিল ঐন্দ্রিলার সঙ্গে। উত্তর দিতে গিয়ে উচ্ছ্বাসে ভেসেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘সকলে পাশে ছিলেন। তাই দ্বিতীয় বারেও ক্যানসারকে হারিয়ে বেঁচে ফিরতে পারলাম। খুব ভাল লাগছে। রাজদার পরে অঙ্কুশদার তরফ থেকে এই উপহার। নিজেকে ‘স্পেশ্যাল’ মনে হচ্ছে!’’
বছরের প্রথম দিনে বাড়ির সবাই, সব্যসাচীকে নিয়ে ঐন্দ্রিলা পৌঁছে গিয়েছিলেন কালীঘাট। আজ আর বাড়ি থেকে বেরোবেন না তিনি। বদলে বাড়িতেই আড্ডা, খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন। অভিনেত্রীর দিদি ঐন্দ্রিলার জন্য রান্না করছেন তাঁর পছন্দের ইলিশ মাছ। কবে অভিনয়ে ফিরছেন? অভিনেত্রী জানিয়েছেন, এখনও দুর্বলতা ভাল করে কাটেনি। অল্প নড়াচড়াতেই হাঁফিয়ে যাচ্ছেন। স্বাভাবিক হতে আরও মাস তিনেক লাগবে। আশা, তত দিনে অতিমারির দাপটও কমবে। তিনিও পুরোদমে কাজে ফিরবেন।
সব্যসাচী জানিয়েছেন, দুর্বল লাগায় শুক্রবার সারা সন্ধে ঐন্দ্রিলা শুয়েছিলেন। রাত ঘড়ি বারোটার কাঁটা পেরোতেই বাইরে বাজির শব্দ। তাঁর প্রেমিকা এক লাফে জানলায়! গ্রিলের ফাঁক দিয়ে মুখ বাড়িয়ে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ বলে চিৎকার জুড়েছেন! মিনিট পাঁচেক ধরে চলেছে সেই উদযাপন। পর্দার ‘সাধক বামদেব’-এর দাবি, জীবনে অনেক ইংরেজি নতুন বছরের উদযাপন দেখেছেন। কিন্তু ঐন্দ্রিলার যুদ্ধজয়, তাঁর সেই আনন্দের কাছে সব ফিকে। আগের উদযাপনগুলো যেন শুধুই নতুন বছর আসার আনন্দ ছিল। লড়াকু অভিনেত্রীর এই উচ্ছ্বাস, একটা অভিশপ্ত বছর শেষ করার উল্লাস। চোখের জলে জামা ভিজিয়ে কাউকে নববর্ষ উদযাপন করতে এই প্রথম দেখলেন সব্যসাচী!
ঐন্দ্রিলা এবং পরান বন্দ্যোপাধ্যায়কে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতে পেরে খুশি অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলাও। বলেছেন, ‘‘সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলা দৃষ্টান্ত তৈরি করে দিল। ওঁদের যুদ্ধ, ওঁদের ভালবাসা, ওঁদের ধৈর্য— সব কিছুকে কুর্নিশ।’’ যুগলের দাবি, ঐন্দ্রিলার মতোই প্রবীণ অভিনেতারও যেন নবজন্ম হল। অঙ্কুশের কথায়, ‘‘এই পরানদাকে আবিষ্কার করতে এতগুলো বছর লেগে গেল! তবু সান্ত্বনা, নব রূপে আবিষ্কৃত তো হলেন!’’ তার পরেই স্বমহিমায় নায়ক। রসিকতা করেছেন, ওই জন্যেই তিনি আর ঐন্দ্রিলা পৌঁছে গিয়েছিলেন অভিনেতার বাড়িতে। আদর করবেন বলে! একই সঙ্গে আবদার— ‘টনিক’ হয়ে গিয়েছে। ‘জেলুসিল’ বা ‘কাফ সিরাপ’ তো হয়নি! আগামী দিনে এই দুটো ছবি করতে হবে তাঁদের সঙ্গে। অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা তা হলেই খুশি!