Rahul Arunoday Banerjee

Tollywood: বিজেপি ছেড়ে বামে অনিন্দ্য-রূপা-পার্থসারথি, প্রতিবাদে দল ছাড়লেন রাহুল

‘বিজেমূল’ মুছে এ বার ‘বিজেএম’ হচ্ছে? জবাব মেলেনি শ্রীলেখা মিত্রের থেকে। রাহুলের দাবি, সবটাই ভবিষ্যত বলবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২১ ২৩:০২
Share:

রাহুল, রূপা এবং অনিন্দ্য

টলিউডে ফের রাজনৈতিক পালাবাদল। বিজেপি ছেড়ে বাম দলে যোগ দিলেন অনিন্দ্যপুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, রূপা ভট্টাচার্য। যোগ দিয়েছেন প্রবীণ অভিনেতা পার্থসারথি দেবও। সে খবর প্রকাশ্যে আসতেই নিজের সামাজিক পাতায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন আরেক জনপ্রিয় বাম সমর্থক অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থসারথিকে নিয়ে তাঁর আপত্তি নেই। রাহুলের আপত্তি বিজেপি ফেরত অনিন্দ্যপুলক, রূপাকে নিয়ে। তাঁর দাবি, ‘যদি টিকিট না পেয়ে হতাশ বিজেপি কর্মী বাম মঞ্চে জায়গা পায়, তা হলে আমি আজ এই মুহূর্ত থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করলাম’।

Advertisement

২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি-র ব্যর্থতার পরেই দল ছাড়ার কথা প্রথম ঘোষণা করেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। তার কিছু দিনের মধ্যেই বিজেপি-র বিরুদ্ধে সরব হন অনিন্দ্যপুলক। রাজনীতিবিদদের একটি বড় অংশ তখন ভেবেছিলেন, অনিন্দ্য শাসক দলে যোগ দিতে চলেছেন। সোমবার শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিন পূর্তিতে শতরূপ ঘোষের সঙ্গে তাঁকে এবং বাকিদের দেখে চমকে গিয়েছেন অনেকেই। এর পরেই সামাজিক পাতায় রাহুলের দাবি, ‘আমি কোনও প্রলোভন বা ক্ষমতার লোভে রাজনীতি করি না। আমার রাজনীতি একান্তই আদর্শগত। আমার বামপন্থা সিপিএম-এর মুখাপেক্ষী নয়।’ বিধানসভা নির্বাচনের আগে হাতেগোনা যে ক’জন লাল পতাকা হাতে বাম দলের সমর্থনে পথে নেমেছিলেন, রাহুল তাঁদের মধ্যে অন্যতম। সেই জায়গা থেকেই তাঁর মত, ‘যিনি এক বারের জন্যও সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গে জড়িয়েছেন, বিশেষত তিনি যদি তারকা হন, তাঁর সঙ্গে কোনও দিন এক মঞ্চে আমি থাকব না।সিপিএম ভেবে দেখুক আমাদের প্রয়োজন, না তাঁদের।’

অনিন্দ্য সোমবার রাতে পা রেখেছেন মু্ম্বইয়ে। দলবদল প্রসঙ্গে বিমানবন্দর থেকে আনন্দবাজার অনলাইনকে জনিয়েছেন, ‘‘আমার বাবা বাম সমর্থক। ফলে এই দলটিকে আমি কাছ থেকে চিনি। বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলাম টলিউডে ‘ওরা-আমরা’ বিভেদ মোছার জন্য। আড়াই বছর এই দলে থেকে দেখলাম, বিজেপি সমর্থকদের তথাকথিত কোনও শিক্ষা, সংস্কৃতি নেই। যা বাম দলে আছে। সেই ভুল শুধরে নিতেই আমার দল বদল।’’ এই মুহূর্তে সবাই শাসকদলে নাম লেখাচ্ছেন। অভিনেতা কেন চলতি হাওয়ার বিরোধী? অনিন্দ্যর যুক্তি, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীর জন্য মুক্তহস্তে দান করতে পারছেন সরকারে থাকার জন্য। আর শ্রমজীবী ক্যান্টিন, রেড ভলান্টিয়ার্সের ২৮-৩০ বছরের ছেলেমেয়েরা ৫০০ দিন ধরে সমাজের পাশে রয়েছেন নিজের মেরুদণ্ডের জোরে। সেই আকর্ষণেই আমি বাম দলে।’’ রাহুলের বিরোধিতা নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি। অনিন্দ্যর মতে, রাহুল আবেগে চলছেন। রাজনীতিতে আবেগের কোনও স্থান নেই।

Advertisement

এত দিন বাম দল বিজেপি-র সঙ্গে তৃণমূলের আঁতাত দেখেছে। তার জন্য নতুন নামকরণও করেছে, ‘বিজেমূল’। এ বার হাত মেলাচ্ছে বাম-বিজেপি। তা হলে কি আগামী দিনে বাংলায় ‘বিজেএম’ গোষ্ঠী দেখা দেবে? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল শ্রীলেখা মিত্রের সঙ্গে। তিনি ফোনে সাড়া দেননি। রাহুল অবশ্য এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তাঁর মতে, ‘‘অনিন্দ্য ঠিক বলেছেন। রাজনীতি আর আবেগ আমার কাছে সমার্থক।’’ তার পরেই তাঁর তোপ, ‘‘এক মাস আগে যিনি সিপিএম-কে দু’বেলা গালাগালি দিতেন, যার প্রমাণ কম নেই, আজ তাঁদের মঞ্চে যাচ্ছেন! নৈতিক বোধ এবং শক্ত মেরুদণ্ডের অভাব যাঁদের, তাঁরাই এমন কাজ করতে পারেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিলেন রুদ্রনীল ঘোষের সঙ্গেও। বাবুল সুপ্রিয় থেকে শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, তনুশ্রী চক্রবর্তী, পায়েল সরকার হয়ে অনিন্দ্যপুলক বা রূপার দল ছাড়ার সিদ্ধান্তকে কি চোখে দেখছেন বিজেপি সদস্য? রুদ্রনীলের মতে, ‘‘রাজনীতিতে ধৈর্যের দরকার। যদিও রাজনৈতিক দলবদল বা মত বদলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা সবার আছে। তার পরেও বলব, এঁরা প্রত্যেকেই যদি আরেকটু ধৈর্য ধরতেন তা হলে আখেরে এঁদেরই লাভ হত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement