আক্ষরিক অর্থেই তিনি ‘নবাব-পুত্র’। মনসুর আলি খান পটৌডি এবং শর্মিলা ঠাকুরের পুত্র সইফ আলি খান। মাত্র ২৩-এই মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পা রেখেছিলেন বলিউডে। খ্যাতির চাদর গায়ে মুড়ে এর পর পেরিয়েছেন অনেকটা পথ। তার মাঝেই জড়িয়েছেন একাধিক বিতর্কে। ‘ছোটে নবাব’-এর জন্মদিনে ফিরে দেখা যাক তাঁর বর্ণময় জীবন।
সইফের জীবনে বিতর্কের তালিকা নেহাত ছোট নয়। তবে শীর্ষে রাখা যায় ২০১২ সালে তাজ হোটেলে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে। কী হয়েছিল সেখানে?
তাজ হোটেলে খাওয়াদাওয়া করতে গিয়েছিলেন সইফ এবং করিনা। তারকা জুটির সঙ্গেই ছিলেন করিনার দিদি করিশ্মা কপূর, মালাইকা অরোরা এবং অমৃতা অরোরা।
ইকবাল মীর শর্মা নামে এক প্রবাসী ব্যবসায়ী হোটেলে সইফদের প্রচণ্ড হাসাহাসিতে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তাতেই নাকি প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে সইফ তাঁকে ধমকাতে শুরু করেন। এমনকি রাগ সামলাতে না পেরে সেই ব্যবসায়ীর নাকে ঘুসি মেরে দেন ‘ওমকারা’-র ‘ল্যাংড়া ত্যাগি’।
সইফ যদিও সাফাই দিতে গিয়ে অন্য কাহিনি শুনিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী, সেই ব্যবসায়ী অভিনেতার সঙ্গে থাকা মহিলাদের অসম্মান করছিলেন। ইকবাল এত সহজে ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ছিলেন না। সইফকে আদালত পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
এই বিতর্কই জন্ম দেয় নতুন সমস্যার। এসসি আগরওয়াল নামে এক তথ্যের অধিকার আন্দোলনের কর্মী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে সইফের পদ্মশ্রী ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি তোলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তেমন কিছুই ঘটেনি।
তবে একদম শুরুতেই পদ্মশ্রী ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন সইফ। তিনি মনে করেছিলেন, সরকারের কাছ থেকে এত বড় সম্মান পাওয়ার যোগ্যতা তাঁর নেই। বাবা মনসুর আলি খান পটৌডির উপদেশ মেনে পদ্মশ্রী গ্রহণ করেছিলেন সইফ।
১৯৯৮ সালে ‘হম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শ্যুটের সময় কৃষ্ণসার হরিণ শিকার করার অপরাধে গ্রেফতার হয়েছিলেন সলমন খান। পরবর্তী কালে সেই মামলায় নাম জড়ায় তাঁর সহকর্মীদেরও। নিলম, তব্বুদের সঙ্গে সেই তালিকায় ছিলেন সইফ। অভিযোগ, সলমনকে হরিণ শিকার করার জন্য ইন্ধন জুগিয়েছিলেন তিনি।
২০১৯ সালে সেই মামলার শুনানির জন্য যোধপুর আদালতে গিয়ে আবার নতুন বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সইফ। যোধপুর বিমানবন্দর থেকে সইফ নিজের গাড়িতে উঠতেই সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেন। তাঁদের এড়িয়ে যাওয়ার জন্য চালককে গাড়ির জানলার কাচ তুলে দিতে বলেন সইফ। তা না করলে তাঁকে মারার ভয় দেখিয়ে তিনি বলেন, “গাড়ির জানলার কাচ তোল, না হলে এক থাপ্পড় মারব।”
সংবাদমাধ্যমকে এড়াতে গিয়ে উল্টে আরও বেশি করে তাদের নজরে চলে আসেন সইফ। গাড়ির চালকের সঙ্গে এই রূঢ় ব্যবহারের কথা প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র নিন্দার মুখে পড়তে হয় তাঁকে।
এ ছাড়াও ইসলাম ধর্মাবলম্বী হয়ে হিন্দু করিনাকে বিয়ে করা, পুত্রের নাম তৈমুর রাখার জন্যও একাধিক বার সাধারণ মানুষের রোষের মুখে পড়েছেন তিনি।
সম্প্রতি ‘অ্যামাজন প্রাইম’-এর ‘তাণ্ডব’ সিরিজে অভিনয় করে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন তিনি। হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এই সিরিজের বিরুদ্ধে। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। জলঘোলা হয় বিস্তর।