সলমন খান এবং ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন— একদা এই ‘লাভ বার্ডস’-এর ব্রেকআপ পরবর্তী জীবন বড়ই তিক্ত। কথা বলা বন্ধ, বন্ধ মুখ দেখাও। একসঙ্গে ছবিতে অভিনয়! তাও নৈব নৈব চ। কিন্তু সলমনের চেয়েও ইমরান হাশমিকে আরও বেশি ঘৃণা করেন ঐশ্বর্যা। বলি মহলের একাংশ অবশ্য মনে করে, এর কারণ ইমরান নিজেই।
ছয় বছর আগের কথা। রিয়েলিটি শো ‘কফি উইথ কর্ণ’-এ অতিথি হয়ে এসেছিলেন ইমরান হাসমি। সঙ্গে ছিলেন মহেশ ভট্ট।
কর্ণ জোহরের সেই শো-তে কিনা হয়, তা তো সকলেরই জানা। কর্ণও একের পর এক প্রশ্নবানে জর্জরিত করতে থাকলেন ইমরানকে। আর ইমরানও বেশ সাহসের সঙ্গে উত্তর দিয়ে যাচ্ছিলেন একের পর এক।
কর্ণ জিজ্ঞাসা করলেন, রণবীর কপূরের থেকে যে কোনও একটি জিনিস চুরি করতে হলে কী চুরি করবে? ইমরান উত্তর দিলেন, “ওর গার্লফ্রেন্ডদের।” কর্ণের ফের প্রশ্ন শাহরুখের কাছ থেকে? ইমরান খান বললেন, “ওর বাড়ি, মন্নত।”
আচমকাই কর্ণ ইমরানকে জিজ্ঞাসা করে বসেন, অভিষেক বচ্চনের থেকে যদি কোনও একটি জিনিস চুরি করতে হয় কী চুরি করবেন তিনি? ইমরান এক মুহূর্ত চিন্তা না করে বলেন, “ওর স্ত্রী-কে।” অর্থাৎ কি না ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনকে!
ঘটনার আকস্মিকতায় খানিক হকচকিয়ে যান কর্ণ। কিন্তু ইমরান নির্বিকার। তাঁর চোখ যেন তখন শো-র শেষের লোভনীয় গিফট হ্যাম্পারের দিকে। ভাবছেন ইমরানের ওই কথাতেই রুষ্ট হয়েছিলেন ঐশ্বর্যা? না।
এর চেয়েও হাজার গুণ বেশি খারাপ মন্তব্য করেছিলেন ইমরান। গিফট হ্যাম্পারের নেশায় তখন তিনি বুঁদ।
খেলা যখন চরমে আচমকাই কর্ণ ইমরানের দিকে এক একটি করে শব্দ ছুড়ে দিতে থাকেন। নিয়ম এই যে ওই শব্দগুলো শোনামাত্র প্রথম যাঁর নাম মাথায় আসে ইমরানের তা তখনই বলতে হবে। অপেক্ষা করা চলবে না।
সব ভালই চলছিল।এমন সময়েই কর্ণ ইমরানকে বলেন ‘প্লাস্টিক’ কথাটি শোনামাত্র প্রথম কার নাম মাথায় আসে ইমরানের।
এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে ইমরান বলেন, ‘ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন’, কর্ণ হতভম্ব। মহেশের মুখ ভার। মিস ওয়ার্ল্ড, বচ্চন বহুকে কী ভাবে এমন একটা কথা বলতে পারেন ইমরান।
গ্ল্যামার জগতে প্লাস্টিক কথাটির মানে যে ব্যক্তির সৌন্দর্য নিজস্ব নয়। ‘ফেক’ বা বাইরে থেকে আরোপিত। কৃত্তিমতার সাহায্য নিয়ে সে সুন্দর।
ঐশ্বর্যার মতো বিশ্বসুন্দরীর সম্পর্কে এই মন্তব্যে সে সময় তোলপাড় হয়ে ওঠে মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া। অ্যাশ ভক্তরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
পরে অবশ্য ক্ষমা চান ইমরান। তিনি বলেন, ঐশ্বর্যাকে যথেষ্টই সম্মান করেন তিনি। মজার ছলেই এমনটা বলেছিলেন। কিন্তু সেই ক্ষমা যথেষ্ট ছিল না। পরবর্তীকালে এর বদলা নিয়েছিলেন ঐশ্বর্যা।
মিলন লুথারিয়ার ছবি ‘বাদশাহো’তে একসঙ্গে কাজ করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু যে মুহূর্তে ঐশ্বর্যা জানতে পারেন, ইমরানও রয়েছেন সেই ছবিতে, তিনি ফিল্মের প্রস্তাব নাকচ করে দেন।
এখানেই শেষ নয়, শোনা যায়, ভবিষ্যতেও ইমরানের সঙ্গে আর কোনও ছবি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ‘বাদশাহো’ বক্স অফিসে চরম ব্যর্থ হয়। নিন্দুকেরা বলেন, ঐশ্বর্যা থাকলে হয়তো সেই ছবি বক্স অফিসে সাফল্য লাভ করত।
বেশ কয়েক বছর পর এক সাক্ষাৎকারে ঐশ্বর্যাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, সব চেয়ে খারাপ কমেন্ট এ যাবতকাল কী পেয়েছেন তিনি? ঐশ্বর্যা বলেছিলেন, “প্লাস্টিক।” অতএব ভোলেননি তিনি। রাগ পুষে রেখে দিয়েছেন এখনও।