ঐন্দ্রিলার প্রয়াণে রচনার প্রতিক্রিয়া ফাইল-চিত্র।
মাত্র ২৪ বছর বয়সেই স্তব্ধ হয়ে গেল ঐন্দ্রিলার জীবন। কিন্তু ঐন্দ্রিলার জীবন যেন ‘আনন্দ’ ছবির সংলাপের মতো ‘জিন্দেগি লম্বি নহি, বড়ি হোনি চাহিয়ে’। নিজের জীবনের ক্ষেত্রে সে কথা যেন অভিনেত্রী অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। এক বার নয়, দু'বার ক্যানসারকে হারিয়েছেন ঐন্দ্রিলা। মাত্র পনেরো বছর বয়সে অভিনেত্রীর শরীরে বাসা রাঁধে কর্কট রোগ। সেই তখন থেকে শুরু হয়ে চব্বিশে শেষ হল ক্যানসারের বিরুদ্ধে ঐন্দ্রিলার অসম লড়াই। অভিনেত্রীর অকালপ্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলার শিল্পীমহল। দ্বিতীয় বার ক্যানসারকে হারিয়ে প্রথম যে মঞ্চে নিজের লড়াইয়ের কথা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা, সেটি ছিল দিদি নম্বর ওয়ানের মঞ্চ। এ বার অভিনেত্রীর প্রয়াণে ঐন্দ্রিলার স্মৃতিচারণা করলেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘‘কিছুই বলার নেই, ওর আয়ু এতটাই ছিল। সবাই চেষ্টা করেছিল। আমরা সবাই চেষ্টা করেছিলাম, যাতে ও ফিরে আসে। আগের দু'বার ও লড়াইটা জয় করতে পেরেছিল। কিন্তু এই বারটা আর পারল না মেয়েটা। ওর আত্মার শান্তি কামনা করি। যেখানেই থাকুক ভাল থাকুক। ভীষণ প্রাণবন্ত মেয়ে, কখনও এক মুহূর্তের জন্য বোঝার উপায় ছিল না, ওর এত বড় একটা রোগ ছিল। ভীষণ হাসিখুশি মানুষ। একটু সময় ওর সঙ্গে কাটাতে পারলে ভাল হত। আসলে মানুষ যখন থাকে, তখন তার কদর বোঝা যায় না। চলে যাওয়ার পর যত মাতামাতি। সে রকমটা ঐন্দ্রিলার ক্ষেত্রে আমাদের সকলেরই মনে হচ্ছে। আরও কিছুক্ষণ ওর সঙ্গে কাটাতে পারলে...।’’
কুঁদঘাটের আইভরি আবাসনের বাসিন্দা ছিলেন ঐন্দ্রিলা। শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও পুজোয় যোগদানে অনীহা ছিল না তাঁর, অভিনেত্রীর বিদায় বেলায় চোখ মুছতে মুছতে জানালেন আবাসনের বাসিন্দারা। এক জন বললেন, “এই বছরেও অষ্টমীর দিন মেয়েটা উপোস করেছিল।” কেউ আবার চোখের জল মুছে বললেন, “সকলে একসঙ্গে ভোগ খাওয়া থেকে শুরু করে মজা করা, পুজোর জোগাড় করায় ওর জুড়ি মেলা ভার ছিল।" গত ১ নভেম্বর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় ঐন্দ্রিলাকে ভর্তি করানো হয় হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। সকলেরই আশা ছিল, এ বারও ফাইট ব্যাক করবেন ঐন্দ্রিলা। কিন্তু এ বার আর সেই আশাপূরণ হল না তাঁর অনুরাগীদের।