ঐন্দ্রিলা স্মরণে লিখলেন অভিনেত্রী জুন মালিয়া। ফাইল চিত্র।
কী বলব? কিছু তো বলার নেই। এত অল্প বয়সে চলে গেল ঐন্দ্রিলা। কিছুতেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। মাত্র ২৪ বছর বয়স। এটা কি কারও চলে যাওয়ার সময় হতে পারে? কিন্তু কী যুদ্ধটাই না করল মেয়েটা। সত্যি কথা বলতে ঐন্দ্রিলা তো চলে গেল! কিন্তু এখন ওঁর মা, বাবা, সব্যসাচীর জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে। ঈশ্বর যেন ওঁদের এই শোক সহ্য করার শক্তি দেন। ঐন্দ্রিলা যেখানেই থাক, যেন ভাল থাকে। এখন আর এই প্রার্থনা করা ছাড়া তো আমাদের আর কোনও উপায় নেই। সেই জগতে যেন আর ওঁকে এ ভাবে লড়াই করতে না হয়, যা ওঁকে এই অল্প দিনের জীবনে করতে হল। ওঁর সঙ্গে কখনও একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়নি আমার। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আয়োজনে টেলি অ্যাওয়ার্ডের অনুষ্ঠানে শেষ বার দেখা হয়েছিল ঐন্দ্রিলার সঙ্গে। সেই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে একটি পুরস্কারও পেয়েছিল ও। সে দিন অনেক কথা হয়েছিল আমাদের। কাজের কথার সঙ্গে ওঁর শারীরিক অবস্থা নিয়েও কথা হয়েছিল। কী প্রাণবন্ত একটা মেয়ে! দেখেছিলাম সে দিন। কিন্তু কী করে যে হারিয়ে গেল? কিছুই বুঝতে পারছি না! যখন থেকে ওঁর শরীর খারাপ হয়েছিল আমরা সবাই ওঁর জন্য প্রার্থনা করেছিলাম। মেয়েটা যাতে ওঁর জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে পারে। কিন্তু সব প্রার্থনা তো আর ঈশ্বর গ্রহণ করেন না। তাই হয়তো এমন পরিণতি দেখতে হল আমাদের। বাচ্চা মেয়েটার চলে যাওয়াটা সত্যি মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। বাস্তব সত্যিই বড় নির্মম হয়, আরও এক বার বুঝতে পারছি।
আমি কেন? ঐন্দ্রিলার লড়াই নিয়ে স্টুডিয়োয় সবাই কথা বলত। সে দিনও কথা হচ্ছিল ওর লড়াই নিয়ে। দু’বার ক্যানসারের মতো মারণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েও, যুদ্ধ করা ছাড়েনি। শুধু যে আমরা শিল্পী বা ওঁর সঙ্গী-সাথীরাই ঐন্দ্রিলার জন্য প্রার্থনা করেছি এমনটা নয়। তাঁদের কথাও বলতে হবে যে সব ডাক্তারবাবু ওঁর জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু নিয়তির সঙ্গে তো আর পেরে ওঠা সম্ভব নয়। তাই নিয়তির কাছেই আমাদের মতোই ঐন্দ্রিলার চিকিৎসকদেরও হেরে যেতে হয়েছে। কথাগুলো বলার সময় বার বার ঐন্দ্রিলার হাসি মুখটা ভেসে উঠছে। ভাবতেই পারছি না, ওই হাসিমুখের বাচ্চা মেয়েটাকে আর দেখতে পাব না। যেখানেই থেকো ভাল থেকো ঐন্দ্রিলা! আমরা সবাই তোমাকে খুব মিস করব। কখনও ভুলব না যন্ত্রণা নিয়ে তোমার এই অসম জীবনযুদ্ধ।