দেবেশ চট্টোপাধ্যায়।
সাল ২০০৩। ‘নীল সীমানা’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেছিলেন দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। পরিচালনায় অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়। প্রযোজনায় ইন্দ্রনীল সেন। অভিনেতার কথায়, ‘‘প্রায় ১৭ বছর আগে বন্ধুকৃত্য করেছিলাম।’’ ২০২০-তে ফের ছোট পর্দায় তিনি। সান বাংলার নতুন ধারাবাহিক ‘হারানো সুর’-এ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী ‘শশাঙ্কশেখর’-এর ভূমিকায়।
কী কারণে ছোট পর্দায় প্রত্যাবর্তন? দেবেশ জানালেন, ‘‘একাধিক কারণে। প্রযোজনা সংস্থা যখন আমায় কাজের অফার দেন, তখন থিয়েটারের কাজ বন্ধ অতিমারির কারণে। চিত্রনাট্যকার অদিতি মজুমদারও বলেছিলেন, আমার চরিত্র একজন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পীর। যা সচরাচর টিভিতে দেখা যায় না। স্ক্রিপ্ট পড়ে দেখলাম, চিরাচরিত বাবা-কাকা-মামার চরিত্র নয়। সব মিলিয়ে রাজি হয়ে গেলাম।’’
ধারাবাহিকের প্রোমো বলছে, শশাঙ্কশেখরের ছেলে জনপ্রিয় গায়ক। কিন্তু বাবার ধ্যান-ধারণা, সাধনা তার চোখে প্রাচীনপন্থী। এমন পরিস্থিতিতে শশাঙ্কশেখরের আলাপ হয় অহনার সঙ্গে। অহনাও খুব ভাল ক্ল্যাসিকাল সিঙ্গার। অহনাকে তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে যখনই ভাবছেন শশাঙ্ক, তখনই ঘটনাচক্রে তার বিয়ে হয় তাঁর ছেলের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: মাদককাণ্ডের জের, 'দ্য কপিল শর্মা শো' থেকে কি বাদ পড়তে চলেছেন ভারতী সিংহ
অহনার গান থাকবে? নাকি স্বামীর চাপে সরে আসতে হবে সুরের জগৎ থেকে?
উত্তর লুকিয়ে ধারাবাহিকে। ৭ ডিসেম্বর থেকে সম্প্রচার শুরু ‘হারানো সুর’-এর। তার আগেই দেবেশ ফাঁস করলেন তাঁর ‘শশাঙ্কশেখর’ হয়ে ওঠার গল্প। ‘‘চরিত্র হয়ে ওঠার জন্য হোমওয়র্ক করতে হয়েছে। শিল্পীরা কী ভাবে তানপুরা ধরেন, পায়ের ফাঁকে কী ভাবে যন্ত্রটিকে রাখেন- কিচ্ছু জানতাম না। জানতে গিয়ে দেখলাম, মান্না দে যে ভাবে তানপুরা রাখতেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী সে ভাবে রাখেন না। আরেক শিল্পী হয়তো আরেক রকম ভাবে তানপুরার গায়ে হাত রাখেন। এ ভাবেই সমস্ত শিল্পীর শারীরিক ভঙ্গিমা, হাতের মুদ্রা নিজের মতো করে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।’’
চরিত্র হয়ে উঠতে আরও একটি জিনিস সাহায্য করেছে দেবেশকে। তাঁর লম্বা চুল, দাড়ি-গোঁফ। হাসতে হাসতে দেবেশ জানিয়েছেন, অতিমারিতে কাটা হচ্ছিল না বলে নিছক শখ করেই রেখেছিলেন। সেগুলো যে এ ভাবে কাজে লেগে যাবে, বুঝতে পারেননি।
অভিনয় কতটা উপভোগ করছেন? দেবেশ অকপট, ‘‘কাজের শুরুতে অনেকেই বলেছিলেন, এখন আর মেগায় আগের মতো অত মনোযোগ দিয়ে কাজ হয় না। শ্যুট করতে গিয়ে দেখলাম, রবি ওঝার শিষ্য পরিচালক গোপাল কিন্তু সহজে ছেড়ে দিচ্ছেন না। মনপসন্দ না হলে টেক নিচ্ছেন। ভাল লাগছে সেটা।’’
আরও পড়ুন: বিমানে আগুন লেগে ৩১ বছরেই মৃত্যু, অমিতাভের এই নামী নায়িকার সম্পত্তি ঘিরে তীব্র হয় আত্মীয়দের দ্বন্দ্ব
প্রসঙ্গত, ‘ফ্যাতাড়ু’ নাটকে কিছু দিন রুদ্রনীল ঘোষের চরিত্রে অভিনয় করতে হয়েছিল দেবেশকে। সেই চরিত্রের মুখে গান ছিল। আবার পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়ের অকালপ্রয়াণের পরে ‘ব্রেন’ নাটকে অভিনেতার চরিত্রে অভিনয়ের সময়েও গাইতে হয়েছে তাঁকে।
নতুন বছরে নতুন কোনও ধারাবাহিকে দেখা যাবে দেবেশকে? ‘‘ছোট পর্দায় এক্ষুণি আর নয়। নতুন বছরে নতুন ছবি বানাব। নামী ঔপন্যাসিকের উপন্যাস নিয়ে। প্রযোজকদের সঙ্গে কথা চলছে। বাংলা, হিন্দি, উর্দু, দক্ষিণী ভাষা সহ বহু ভাষায় সংলাপ থাকবে ছবিতে। মুম্বইয়ের প্রথম সারির অভিনেত্রীকে দেখা যাবে মুখ্য নারী চরিত্রে।’’