পথপশুর সেবায় স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
এক দিকে তিনি প্রতিবাদে মুখর। রবিবার থেকে প্রতি দিন রাতদখলে নামছেন। চষে ফেলছেন টালা থেকে টালিগঞ্জ। সেই স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় একই সঙ্গে মানবিক-ও। মঙ্গলবার ভূপেন্দ্রনাথ বসু অ্যাভিনিউয়ে বামফ্রন্টের ডাকা ধর্নামঞ্চে ছিলেন তিনি। সেখানে স্থানীয় এক পথপশু অসুস্থ হয়ে পড়ায় সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হয়ে ওঠেন। অবস্থানকারীদের নিয়ে নিজেই নেমে পড়েন তদারকিতে। আনন্দবাজার অনলাইনকে এ প্রসঙ্গে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দময়ন্তী সেন জানান, মানবিকতাবিরোধী প্রতিবাদী অবস্থানে কেউ নেই। মানুষের পাশাপাশি পথপশুদের সুরক্ষা, তাদের যত্নের কথাও মাথায় রাখতে হবে। কারণ, তাদের মুখে মানুষের মতো ভাষা নেই। আর স্বস্তিকা পশুপ্রেমী। পথপশুদের জন্যও তাই স্বস্তিকার নিরন্তর সংগ্রাম। এ দিন দময়ন্তী-ই চিকিৎসা করেন পথপশুর।
আরজি কর-কাণ্ড স্বস্তিকার ঘুম ভুলিয়ে দিয়েছে। তিনি রোজ রাতে পথে নামছেন, রাত জাগছেন। মঙ্গলবার শ্যামবাজার সংলগ্ন অঞ্চলে উপস্থিত ছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁর আচমকা চোখ পড়ে অসুস্থ পথকুকুরের দিকে। প্রথমে তিনি তাকে নিজেই জল খাওয়ান। তার পর ডেকে নেন অবস্থানরত বাম দলের যুব সদস্যদের। সকলের চেষ্টায় কিছুক্ষণের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠে কুকুরটি। দময়ন্তী আরও জানিয়েছেন, তিনি গত ৯ বছর ধরে পথপশুদের নিয়ে কাজ করছেন। গত কয়েক বছর ধরে তিনি স্বস্তিকার এই মানবিক রূপটি প্রত্যক্ষ করছেন।স্বস্তি
প্রতিবাদী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
আন্দোলনকে ঘিরে শহর এবং শহরবাসীর মানবিক রূপ গত রবিবার থেকে চোখে পড়ছে অনেকেরই। এই বিষয়টিও কথাপ্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন স্বস্তিকা। তিনি প্রশংসা করেছেন শহর, শহরবাসীদের ভাবনার। অবস্থান মঞ্চে এসে জুনিয়র চিকিৎসকদের খাবার, জল সরবরাহ করছেন সব ধর্মের মানুষ। এই দৃশ্য দেখে তিনি আনন্দে বাকরুদ্ধ। আশেপাশের বাড়ির মহিলারা ভাত, ডাল, বেগুনি রেঁধে খাইয়ে যাচ্ছেন অবস্থানকারীদের। ভোরে প্রশাসনের তরফে চা-বিস্কুট দেওয়া হচ্ছে অবস্থানকারীদের। অভিনেত্রীর মতে, এটাই তাঁর শহর কলকাতা। এই কারণেই কলকাতাবাসী হিসাবে গর্ববোধ করেন তিনি।