থিয়েটার থেকে এসেছিলেন ছবিতে। জীবনে অভিনয়ই ছিল প্রথম প্রেম। জীবনের শেষ শক্তিবিন্দু অবধি অভিনয় করে গিয়েছেন মঞ্চে এবং ক্যামেরার সামনে। দর্শকদের প্রত্যাশা অপূর্ণ রেখেই বিদায় নিয়েছেন অভিনেত্রী রসিকা জোশী। মাত্র ৩৮ বছর বয়সে।
রসিকার জন্ম ১৯৭২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। মরাঠি নাটক ‘আঙ্কল মাঝা জোকা’ দিয়ে রসিকার অভিনেত্রী জীবন শুরু।
ক্রমে মরাঠি থিয়েটার জগতে নিজের মজবুত জায়গা তৈরি করেন রসিকা। সেখান থেকেই অভিনয় টেলিভিশনে।
মরাঠি ধারাবাহিকেও অপরিহার্য অভিনেত্রী হয়ে ওঠেন রসিকা। নায়িকা নয়, তিনি অভিনয় করতেন পার্শ্বচরিত্রে।
মরাঠি বিনোদন জগতে পরিচিতির কয়েক দিনের মধ্যে সুযোগ আসে হিন্দি ধারাবাহিকে কাজ করার।
‘বন্দিনী’ ধারাবাহিকে রসিকার অভিনয় নজর কেড়েছিল দর্শকদের। ২০০৪ সালে বলিউডে অভিনেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশ রসিকার। প্রথম ছবি ছিল ‘বাস্তুশাস্ত্র’।
বলিউডে রসিকা আলোচনায় উঠে আসেন ‘এক হাসিনা থি’ ছবির মাধ্যমে। এই ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয় দর্শক ও সমালোচক, দুই মহলেই।
পরিচালক রামগোপাল বর্মা এবং প্রিয়দর্শনের পছন্দের অভিনেত্রী ছিলেন রসিকা। এই দুই পরিচালক বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছেন রসিকাকে।
সংক্ষিপ্ত কেরিয়ারে রসিকা অভিনয় করেছেন কয়েকটি মাত্র ছবিতে। ‘বিল্লু বারবার’, ‘ঢোল’, ‘ভুলভুলাইয়া’, ‘গায়ব’, ‘এক হাসিনা থি’, ‘বাস্তুশাস্ত্র’, ‘দে তালি’, ‘ডরনা জরুরি হ্যায়’ এবং ‘মালামাল উইকলি’-তে রসিকার উপস্থিতি উজ্জ্বল।
অজান্তেই শরীরে বাসা বেঁধেছিল লিউকেমিয়া। কিন্তু রসিকার অদম্য মনোবলের কাছে হার মেনেছিল অসুস্থতা। দুর্বল শরীরেও চালিয়ে গিয়েছেন অভিনয়।
২০১১-এ শুটিং চলছিল ‘নট এ লভ স্টোরি’-র। ছবির পরিচালক রামগোপাল বর্মা পরে স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন, শুটিং সেটে রক্তবমি করছিলেন অসুস্থ রসিকা। কিন্তু তার পরেও তিনি অভিনয় চালিয়ে গিয়েছেন।
হাজার অনুরোধ সত্ত্বেও কাজ বন্ধ করেননি তিনি। কারণ, তাঁর মনে হয়েছিল, তিনি সেই মুহূর্তে সরে দাঁড়ালে সব শুটিং সূচি এলোমেলো হয়ে যাবে। প্রযোজক-পরিচালকের এই ক্ষতি করতে চাননি কর্তব্যনিষ্ঠ ও দায়বদ্ধ রসিকা।
শেষ ছবির মুক্তি তিনি দেখে যেতে পারেননি। ২০১১-র ৭ জুলাই মুম্বইয়ে এক নার্সিংহোমে প্রয়াত হন রসিকা। তার দেড় মাস পরে ১৯ অগস্ট মুক্তি পেয়েছিল তাঁর শেষ ছবি ‘নট এ লভ স্টোরি’।
অকালপ্রয়াত রসিকা রেখে গিয়েছেন তাঁর স্বামী পরিচালক-অভিনেতা গিরীশ জোশী, পরিবার পরিজন এবং অসংখ্য গুণমুগ্ধকে।